চাহিদা অনুযায়ী ইএফডি মেশিন পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেছেন, যে পরিমাণ ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন আমাদের প্রয়োজন, এনবিআর তা দিতে পারছে না। মিনিমাম পাঁচ লাখ মেশিন প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন‌ এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কাছে বিনামূল্যে ইএফডি মেশিন পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিল এনবিআর। পরে তা হয়নি। এনবিআরের অনুরোধে পরে  সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরাই মেশিনটা কিনে নেবো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, যে পরিমাণ মেশিন আমাদের প্রয়োজন, এনবিআর তা দিতে পারছে না। মিনিমাম পাঁচ লাখ মেশিন  প্রয়োজন। প্রয়োজনী মেশিন দেওয়া হলে খুচরা পর্যায়ে আমরা ভ্যাট আদায় শুরু করতে পারবে।’

১০-১২ হাজার মেশিনে প্রয়োজন মিটছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে এক ধরনের বৈপরীত্য সৃষ্টি হচ্ছে। যার দোকানে মেশিন আছে, সেখানে ভ্যাট নেওয়া হলেও  সেই দোকানে কাস্টমার যাচ্ছে না। আমরা খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।’

জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, তারা  ইএফডি মেশিন কিনতে চান, দেওয়া হচ্ছে না— এমন অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। আপনারা তালিকা পাঠিয়ে দিন। আমি মেশিন পাঠিয়ে দেবো। আমি ইএফডি নিয়ে বসে আছি, ব্যবসায়ীরা নিতে চাচ্ছেন না। আপনি তালিকা দিন। আমি দোকানে দোকানে মেশিন পৌঁছে দেবো। এ পর্যন্ত ৫০০টি মেশিন বিক্রি করছি। মাত্র ৩০-৪০টি মেশিনের ডাকা পাওয়া গেছে। এক লাখ মেশিনের অর্ডার আছে। এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ হাজার ইএফডি মেশিন বসানো হয়েছে। মেশিন আমরা দিচ্ছি না— এসব না বলে তালিকা পাঠিয়ে দিন।’

প্রসঙ্গত, ভ্যাট আদায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ইএফডির উদ্বোধন করে রাজস্ব বোর্ড। তিন হাজার ৩৯৩টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ইএফডি বসিয়েছে এনবিআর। ঢাকা ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের প্রথমে বিনামূল্যে যন্ত্রটি দেওয়া হলেও গত বছরের অক্টোবর থেকে তা কিনতে হচ্ছে। আর ক্রেতার জন্য প্রতি মাসেই ইএফডি চালানের ওপর লটারির ব্যবস্থা করছে এনবিআর।

কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি হাফিজুর রহমান পুলক এ খাতে মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশের পরিবর্তে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি মেটাল ডিটেক্টর আমদানিতে কর কমানোর প্রস্তাব দেন।

ট্যুরিজম ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও ট্যুরিজম রিসোর্ট ইন্ডাস্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি মদের ওপর শুল্ক কমানো, ট্যুরিস্ট বাসের ওপর ডিউটি কমানোর সুপারিশ করে।

ড্রেস মেকার্স অ্যাসোসিয়েশন, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি, বাংলাদেশ সিকিউরিটি সার্ভিসেস কোম্পানিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন আলোচনায় আয়কর রিটার্ন সহজ করা, বিভিন্ন খাতে ট্যাক্স ও ভ্যাট কমানোর প্রস্তাব দেয়।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন— এনবিআরের কাস্টমস সদস্য (শুল্ক নীতি) মাসুদ সাদিক, সদস্য (ভ্যাট নীতি) জাকিয়া সুলতানা ও সদস্য (আয়কর নীতি) সামস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।