যদি বিদেশে কেউ টাকা নিয়ে থাকে, সেগুলো ফেরত আসবে: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, অনেকে বলেন অর্থপাচার হচ্ছে। দেশে অর্থ আসছে না। তবে আমি বলবো, বিভিন্ন সময় নানাভাবে যদি বিদেশে কেউ টাকা নিয়ে থাকে, সেগুলো দেশে ফেরত আসবে। তিনি বলেন, ‘এমন সুবিধা দেবো, যাতে সবাই টাকা নিয়ে ফিরে আসে।’ 

বৃহস্পতিবার (১২ মে) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় দেশে রেমিট্যান্স আনতে কাজ করা প্রবাসী শ্রমিকদের স্বীকৃতি দেওয়ার ইঙ্গিত দেন অর্থমন্ত্রী।

অনুষ্ঠানে বৈধ পথে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) পাঠানোর জন্য ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৬৭ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাঁচ ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। এরমধ্যে রয়েছে—সাধারণ পেশাজীবী, বিশেষজ্ঞ পেশাজীবী, ব্যবসায়ী, রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রবাসীদের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউজ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা, ইউরোপের অনেক দেশে এখন টাকা রাখলে কমিশন দিতে হয়। এখন আর সুদ পায় না। তাই যেকোনও উপায়েই হোক বাংলাদেশে টাকা চলে আসবে। কারণ, বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখলে বেনিফিট পাওয়া যায়।’

অনুষ্ঠানে প্রবাসীরা ওয়েজ আর্নার বন্ডের বিনিয়োগ সীমা বাড়ানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবো। আশা করছি, প্রবাসীদের স্বার্থে ইতিবাচক সাড়া পাবো। আপনারা বেশি করে রেমিট্যান্স পাঠাবেন। আমরা আপনাদের সাপোর্ট দেবো, আপনারা দেশকে সাপোর্ট দেবেন।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বযুদ্ধের পর এখন সবচেয়ে খারাপ সময় যাচ্ছে। করোনায় বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এই করোনা ব্যবস্থাপনায় বিশ্বে পঞ্চম, এশিয়ায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ। আমরা কাজ করি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য।’

প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের রেমিট্যান্স পাঠানোর অনেক সোর্স আছে। কিন্তু সরকারি মাধ্যম ছাড়া অন্য কোনও উপায় গ্রহণযোগ্য নয়। আপনারা রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করবেন। রেমিট্যান্সের ওপরে প্রণোদনা দিয়ে স্বীকৃতি দিয়েছি। রেমিট্যান্স আনতে যারা কাজ করছেন, তাদের স্বীকৃতি দেওয়া যায় কিনা আমরা ভেবে দেখবো।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মোহাম্মদ নাছের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘আরকো পেমেন্ট পরিশোধের পরেও বুধবার (১১ মে) পর্যন্ত ৪২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রিজার্ভ আছে। সরকারের প্রণোদনা দেওয়ার কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে। প্রবাসীরা সরাসরি আসার কারণে করোনাকালে রেমিট্যান্স বেড়েছে, ডিজিটাল হুন্ডির কারণে নয়। রেমিট্যান্স ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি যাবে বলে আশা করছি।’