মানুষের আস্থা ফেরানোই প্রধান লক্ষ্য: আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান

গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষার মাধ্যমে বিমার প্রতি মানুষের আস্থা ফেরানো বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ- আইডিআরএ’র প্রধান লক্ষ্য হবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) আইডিআরএ কার্যালয়ে ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরাম (আইআরএফ)-এর সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে তিনি এ কথা বলেন।

নানা অনিয়মের অভিযোগ মাথায় নিয়ে আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান পদ থেকে ড. এম মোশাররফ হোসেন পদত্যাগ করলে গত ১৫ জুন বিমা খাতের এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিসেবে পরিকল্পনা কমিশনের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারীকে নিয়োগ দেয় সরকার।

আইডিআরএ’র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার তিনি প্রথমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইডিআরএ’র সদস্য মো. দলিল উদ্দিন, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র এস এম শাকিল আখতার, ইন্সুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সভাপতি গোলাম মওলা ও  ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুদ মিয়া প্রমুখ।  

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, ‘পলিসিহোল্ডারদের (গ্রাহক) স্বার্থ দেখা আমার প্রথম কাজ। এর মাধ্যমে আস্থা ফিরে আসবে। মানুষ যদি বিমা করে তার সুফলটা পায়, তাহলে একজনের দেখাদেখি আরও ১০ জন আসবে। আর একজন যদি প্রতারিত বা বঞ্চিত হয়, তাহলে ওইটা আরও ১০ জনকে নিরুৎসাহিত করবে। সে কারণে তাদের (গ্রাহক) স্বার্থ আমাদের দেখতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে— আমরা তাদের স্বার্থ দেখছি। সে জন্য আমরা দৃশ্যমান কিছু ব্যবস্থা নেবো। এর একটি হবে ডিজিটালাইজেশন।’

তিনি বলেন, ‘ব্যাংকে আপনি আজকে টাকা জমা দিলে, আপনি বুঝেন আপনার টাকা জমা হয়েছে। আপনি এসএমএস পান, ব্যাংক স্টেটমেন্ট নিয়ে দেখতে পারেন। অনলাইনে আপনি দেখতে পারেন আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের কী অবস্থা। এ রকম বিমা খাতেও আমরা ডিজিটালাইজেশন করতে চাই। এ কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। শুরুতে এটা সীমিত আছে। আমরা চাইবো ব্যাংকিং সিস্টেমের মতো একটা অনলাইন সিস্টেমের দিকে যেতে।’

এ সময় বিমা খাতের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা সংকট ও বিশ্বাসের অভাব আছে বলে স্বীকার করে জয়নুল বারী বলেন, ‘এখানে (বিমা খাত) ইমেজ সংকট আছে এবং ট্রাস্টের অভাব আছে। আস্থার অভাব থাকলে মানুষ এই সেক্টরের দিকে আসবে না। সরকার এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য আইডিআরএ করেছে। এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য কী কী করতে হবে, আমাদের বিমা উন্নয়ন পলিসিটা কী— সেগুলো নিয়ে আমরা দেখছি, আমরা কী কী করেছি, আর কী কী করা দরকার।’

তিনি উল্লেখ করেন আমরা প্রত্যাশা করি, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তিন বছর মেয়াদি একটি পরিকল্পনা করবো। এর মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদের কাজ থাকবে। কোনোটা করতে এক মাস, কোনোটা করতে ছয় মাস, আবার কোনোটা করতে এক বছর সময় লাগবে। এ রকম একটা পরিকল্পনা করবো আমরা, এ উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন, ‘কমপ্লায়েন্সের একটা বিষয় আছে। আনেক কিছু আমরা করেছি, কিন্তু কমপ্লায়েন্স নেই। সেগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে  করবো। সেটা করা হবে সবাইকে নিয়ে, যারা আমাদের মেইন স্টেকহোল্ডার আছেন। নিয়ন্ত্রণ মানে এই না যে, আমরা সবকিছু চাপিয়ে দেবো। সবাইকে নিয়ে সবার সমস্যা, সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে আমরা কাজ করবো। তবে আমাদের অগ্রাধিকার থাকবে মানুষের স্বার্থ এবং এই সেক্টরকে উন্নয়ন করতে হবে।’