শ্রম ইস্যুতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাস। ওই চিঠি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিটি পেয়েছি। তবে এটি কোনও সতর্কবার্তা নয়— এটি স্বাভাবিক যোগাযোগ মাত্র।’
জানা গেছে, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, শ্রম ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য জরিমানা ও ভিসা বিধিনিষেধের মুখে পড়তে পারে বাংলাদেশ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ নভেম্বর চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের চিঠিতে বিভিন্ন দেশের শ্রম অধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের গত ১৬ নভেম্বরের মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হয়।
জানা গেছে, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাস ঢাকায় সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক করে বলেছে, বিশ্বব্যাপী শ্রম অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি যে স্মারকটি ঘোষণা করেছেন, বাংলাদেশ তার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। শ্রম অধিকার লঙ্ঘিত হলে এই নীতি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা রাষ্ট্রের ওপর আরোপের সুযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (বাণিজ্য) মো. সেলিম রেজার লেখা চিঠিটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে ২০ নভেম্বর। ওই চিঠির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার ও উচ্চ শ্রমমান’ এগিয়ে নিতে স্মারক-সংক্রান্ত একটি সংকলিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘স্মারকলিপি’র রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উদ্বিগ্ন হওয়ার অনেক কারণ আছে। স্মারকলিপিতে শ্রম অধিকার নিয়ে যা বলা হয়েছে, তার পেছনে রাজনীতি আছে এবং যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহারের চেষ্টা করতে পারে। সুতরাং, এই ‘স্মারকলিপি’ বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রম ইস্যুর অজুহাতে স্মারকলিপিতে বর্ণিত যেকোনও ব্যবস্থা নিতে পারে। এই স্মারকলিপি বাংলাদেশের পোশাক খাতেও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অগ্রাধিকার দিয়ে এটি বিবেচনায় নেওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, চিঠি হাতে পেয়েছি। কোনোভাবেই এটি সতর্কবার্তা নয়। ‘সতর্কবার্তা’ শব্দটি অনেক বড় কিছু। এটা এমন কিছু নয়। এটি নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যম মাত্র। আমরা বাংলাদেশের শ্রম অধিকার বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছি।