পাট ও প্লাস্টিকের সমন্বয়ে পণ্য উৎপাদনের আহ্বান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর

আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে পাট এবং প্লাস্টিকের সমন্বয়ে পণ্য উৎপাদনের জন্য প্লাস্টিক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হস্তশিল্পকে ২০২৪ বর্ষপণ্য ঘোষণা করায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি গ্রাম, একটি পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করেছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক কনভেশন সিটি বসুন্ধরায় বাংলাদেশ প্লাস্টি গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত ‘১৬তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক প্যাকেজিং অ্যান্ড প্রিন্টিং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফেয়ার-২০২৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশেই পাট ও প্লাস্টিক কম্বাইন্ড করে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদন করছে। আমাদের দেশেও  প্রযুক্তির ব্যবহার করে এ ধরনের পণ্য উৎপাদনে উদ্যোগ নিতে হবে। এটি করতে পারলে এই শিল্প সামনে আরও অনেক এগিয়ে যাবে। বিশেষ করে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং ভবিষ্যতে বড় একটি খাতে পরিণত হবে।’ এ ধরনের প্রযুক্তি নিয়ে নতুন নতুন উদ্যোক্তা এগিয়ে আসবে এবং নতুন পণ্য এবং বাজার নিয়ে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আহসানুল ইসলাম টিটু জানান, প্লাস্টিক শিল্পকে আরও ইনোভেটিভ হতে হবে। কারণ প্লাস্টিক পণ্যের বড় চ্যালেঞ্জ হলো এটি পরিবেশবান্ধব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভর না থেকে পণ্য বহুমুখীকরণ করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। এক্ষেত্রে প্লাস্টিক, প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং পণ্য বহুমুখীকরণে নতুন একটি সেক্টর হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে মন্তব্য করেন।

প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে রফিতানিতে একটি ভূমিকা রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই খাতকে আরও এগিয়ে নিতে নতুন নতুন বাজার অনুসন্ধান করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো বিশেষ করে ভারত ও এর সেভেন সিস্টার্সের বাজার ধরতে হবে।’

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একটি গ্রাম, একটি পণ্য নির্ধারণ করে উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় এবং সর্বশেষ ঢাকায় মেলা করা হবে। এই পণ্যকে এসএমই এবং ব্যাসিকের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে। এরফলে এসব পণ্য একদিকে যেমন রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হবে, অপরদিকে স্থানীয় বাজারে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণিজ্য মেলা উদ্বোধনকালে হস্তশিল্পকে ২০২৪ সালের বর্ষপণ্য ঘোষণা করেছেন। আমরা সারা বছর এই পণ্য নিয়ে কাজ করবো। আমরা জানি, দেশের কুঠির শিল্পের সঙ্গে নারীরা বেশি সম্পৃক্ত। নারীর ক্ষমতায়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে হস্তশিল্প ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আহসানুল ইসলাম বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ ব্যবসায়ীদের নীতিগত সহায়তা প্রদান করা, যা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের বর্তমান যে কাঠামো আছে, তা দিয়ে একশ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় করা সম্ভব। গার্মেন্টস শিল্পের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে পাট ও পাটজাত এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিকসহ অন্যান্য পণ্যে নজর দিতে হবে।’ পণ্য বহুমুখীকরণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

পরে তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বক্তব্য রাখেন।