বিদ্যুতের বাড়তি দাম না কমালে আইনি ব্যবস্থা নেবে ক্যাব

বিদ্যুতের বাড়তি দাম না কমালে আইনগত ব্যবস্থা নেবে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। তবে সরকারকে এজন্য একটু সময় দিতেও চায় ভোক্তা স্বার্থ রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠনটি। রবিবার (৭ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব নেতারা বলেন, ‘এজন্য ১০ থেকে ১২ দিন সময় দেওয়া হবে। এরপর সরকার দাম না কমালে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ক্যাবের সংবাদ সম্মেলনসংবাদ সম্মেলনে ক্যাব জানায়, চাইলেই বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ এক টাকা ৫৬ পয়সা কমানো সম্ভব। উৎপাদন খরচ কমে গেলে ভোক্তার বিদ্যুতের দামও কমানো যাবে।

এর আগে, গত জানুয়ারিতে দুই ধাপে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এই দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ক্যাব আদালতে যায়। তখন উচ্চ আদালত দ্বিতীয় ধাপে বৃদ্ধি করা আবাসিক গ্রাহকের বাড়তি দরের বিষয়টি রহিত করার সিদ্ধান্ত দেয়। বিইআরসি ক্যাবের পক্ষে যাওয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আর আপিল করেনি।

ক্যাব বলছে, ‘বিদ্যুৎখাতের দুর্নীতি, অনিয়ম এবং ভোক্তা স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্য তদন্ত করতে হবে।’ এজন্য একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনের দাবিও করে সংগঠনটি।

এবার বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের জন্য আয়োজিত গণশুনানিতে দর বৃদ্ধির সঙ্গে দাম কমানোর জন্য ক্যাবের পক্ষ থেকে পৃথক শুনানি করা হয়। ওই শুনানিতে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কমানো সম্ভব বলে ক্যাব দাবি করে। শুনানিতে ক্যাবের অধিকাংশ দাবির সঙ্গেই পিডিবি সহমত পোষণ করে। যদিও দাম বৃদ্ধির ঘোষণার সময় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন ক্যাবের দাবিকে যৌক্তিক নয় বলে আখ্যা দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার অসম ব্যবহারে ৩ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা, জ্বালানির দরপতন সমন্বয়ে ২ হাজার ৬৭২ কোটি টাকা, ভাড়া এবং দ্রুত ভাড়ায়চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ ১ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা, পাইকারি বিদ্যুতের মূল্যহার ঘাটতিতে ৩৩৩ কোটি টাকা, সেচ এবং প্রান্তিক কাঠামোতে বিদ্যুৎ বিক্রির লোকসান ৩ হাজার ৪৬ কোটি টাকা। এছাড়া বিতরণ এবং জনবল কাঠামোতে এক হাজার ৮০৪ কোটি টাকা ব্যয়ের পুরোটাই ভোক্তাদের বহন করতে হয়। ভুল নীতি এবং দুর্নীতির কারণে এসব ব্যয় বাড়ছে বলে দাবি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, ‘বিদ্যুতের ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা না থাকায় বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। যার সবটাই ভোক্তার কাছ থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব ১৫ দফা দাবি তুলে ধরে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিদ্যুৎখাতের বিভিন্ন কোম্পানি থেকে অবমুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি বিভাগের সব কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন। ক্যাব বলছে, ‘যেহেতু মন্ত্রণালয় রেগুলেটরের ভূমিকা পালন করে সঙ্গত কারণে তারা কোম্পানির ব্যবসার সঙ্গে থাকতে পারে না।’

সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানসহ সংগঠনের নেতারা।