সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি চালু হচ্ছে বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র: বিদ্যুৎ সচিব

বড়পুকুরিয়াসেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ সচিব আহমদ কায়কাউস। তিনি বলেন, ‘কয়লায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেজন্য বাইরে থেকে কিছু কয়লা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের টিম সিঙ্গাপুর ঘুরে এসেছে। এই মাসের পর থেকে উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুতের আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ ভবনে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ ২০১৮’ এর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী, জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, আরইবির চেয়ারম্যান মুঈন উদ্দিনসহ অনেকে।
সচিব বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেভাবে বিপুল বিনিয়োগ হয়, বিতরণ ও সঞ্চালনেও তেমন বিনিয়োগ প্রয়োজন। এজন্য এই বিশাল বিনিয়োগ আনতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।’
বর্তমান সরকারের আমলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সাফল্য তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে জানাতে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহ ২০১৮’। ‘জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, নতুন যৌবনের দূত’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিতব্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সপ্তাহের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে গত জুন মাসের মাঝামাঝিতে ২০১০ নম্বর ফেসে কয়লার মজুদ শেষ হওয়ায় গত ২২ জুলাই থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। টানা ২৯ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২০ আগস্ট দুপুরে চালু করা হয়েছিল বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ইউনিটের উৎপাদন। এক সপ্তাহ পর গত ২৮ আগস্ট এটি ফের বন্ধ হয়ে যায়।
সর্বমোট ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রটির তিনটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন ৫ হাজার ২’শ মেট্রিক টন।
এর আগে, জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ পিডিবিকে জানিয়ে দেয়, খনির কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুদ নেই। গত ২২ জুলাই কয়লার মজুদ শেষ হয়ে গেলে বন্ধ হয়ে যায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন।
এদিকে দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল কয়লা খনি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কয়লা কেলেঙ্কারীর ঘটনায় ইতোমধ্যেই সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে উত্তোলিত কয়লার মধ্যে এক লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা ঘাটতি/চুরি হওয়ায়, খনিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা গত ১৯ জুলাই খনির এমডি প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহম্মেদকে প্রত্যাহার ও কোম্পানি সচিব মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আবুল কাশেম প্রধানীয়াকে অন্যত্র বদলি করে। একইসঙ্গে খনির মহাব্যবস্থাপক মাইনিং এটিএম নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদুর ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এই ঘটনায় দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর গত ২৪ জুলাই খনির ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদক।