বাংলাদেশ সফররত যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশীয় বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি থমাস ভাজদা, মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইরাল মিলারসহ আট সদস্যের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রতিমন্ত্রী একথা জানান। রবিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুৎ ভবনে এ বৈঠক হয়।
বৈঠক সূত্র জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবির সঙ্গে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এছাড়া দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী একটি কোম্পানি সামিট এর সঙ্গে জিই দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের আরও একটি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এর বাইরে জিই দেশের আরেক প্রতিষ্ঠান ইউনিক গ্রুপের সঙ্গে কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি করেছে। যার মধ্যে মেঘনা ঘাটে সামিট এবং ইউনিকের প্রতিটি ৬০০ মেগাওয়াট করে দুই কেন্দ্রের জন্য শিগগিরই চুক্তি সই হবে। জিই-এর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে ঘোড়াশালের তৃতীয় এবং ৪র্থ ইউনিটের রি-পাওয়ারিং (পুনক্ষমতায়ন)। শাহজিবাজার-১০০, খুলনা-৩৩০ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট এবং ভোলা-২২৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎখাতের বাইরেও জ্বালানি খাতে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি কাজ করছে। দেশের প্রথম ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি নির্মাণ করেছে তারা। তবে মার্কিন কোম্পানি কনাকোফিলিপস সাগরের ব্লক ইজারা নিয়ে অর্ধেক কাজ করে চলে গেছে। কোম্পানিটি তখন সাগরে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিলেও বাংলাদেশ তাতে সায় দেয়নি। এর বাইরে দেশের এককভাবে সব থেকে বেশি গ্যাস উত্তোলন করছে মার্কিন কোম্পানি শেভরন।
বৈঠকে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদশের স্থল এবং জলভাগে একসঙ্গে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান উত্তোলন করতে পারে। গ্যাসের পাশাপাশি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি’র অবকাঠামো নির্মাণ এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে পারে দুই দেশ।
বৈঠক শেষে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ কীভাবে আরও বাড়ানো যায় সে বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। তারা শেখ হাসিনার নেতৃতের প্রতি আস্থাশীল। আগামীতে কীভাবে আরও ঘনিষ্ঠভাবে দু’দেশ কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এসময়ে মিলার বলেন, ‘অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকা জরুরি। বাংলাদেশ শ্রম নিরাপত্তায় উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে। আমরা মনে করছি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আরও বিনিয়োগ করতে পারি।’
থমাস বলেন, ‘বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থানে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সম্ভাব্য দেশ হিসেবে বিবেচনা করছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র নতুন বিনিয়োগ করতে চায়।’