দশ বছরেও শেষ হয়নি ১২ মাসের কাজ !

দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর হয় ২০১১ সালের ১২ অক্টোবর। ঢাকার গাবতলীতে ১০৮ মেগাওয়াটের কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি হয় ঢাকা নর্থ ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেডের সাথে। আর বসিলার কেরাণীগঞ্জে একই ক্ষমতার কেন্দ্র নির্মাণে ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেডের সাথে চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ১২ মাসের মধ্যে কেন্দ্রগুলো উৎপাদনে আসার কথা থাকলেও পেরিয়ে গেছে দশ বছর। এখনও কোনও কেন্দ্রের কাজই ৫ ভাগের বেশি শেষ হয়নি। বাস্তবতা হলো - বিদুৎ কেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানি দুটো কোনও কাজই করেনি।

সরকার দাবি করছে,  এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ক্যাপটিভসহ ২৫ হাজার মেগাওয়াট।  কিন্তু চাহিদা ১৪ হাজার মেগাওয়াটের উপরে এ পর্যন্ত উঠেনি। দেশের অধিকাংশ তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বছরের অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে। এরপরও কোনও কাজই হয়নি এমন দুইটি তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ দফায় দফায় বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যুৎ বিভাগ গত সপ্তাহে এক সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে নতুন কাজের সিডিউল তৈরি করে জমা দিতে হবে। প্রশ্ন উঠেছে, ১২ মাসের কাজ যারা দশ বছরেও শেষ করতে পারেনি, তাদেরকে আদর-যত্নে টিকিয়ে রাখতে হবে কেন। 

বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, ঢাকা নর্থ ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেডের টার্মিনেশন নোটিশ (বাতিলের নোটিশ) ইস্যুর জন্য ২০১৯ সালের ৭ মে বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি দিয়েছিল বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)।  সেই সময়ও পেরিয়ে গেছে দুই বছর হলো।

তামাশার এখানেই শেষ নয়, গাবতলীর বিদ্যুৎকেন্দ্রটি  ঢাকার পরিবর্তে বসিলা, ওয়াসপুর অথবা কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তরে কোম্পানির আবেদনের বিষয়ে ২০১৯ সালের ১৯ জুন মতামত পাঠায় পিডিবি। যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র এক মাস আগে বাতিল করার আবেদন করলো পিডিবি, তারাই আবার ওই কেন্দ্রের স্থানান্তরের বিষয়ে মতামত দিলো।

এদিকে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পারফরমেন্স সিকিউরিটি ডিপোজিটের (জামানত) মেয়াদ গত ১৯ জানুয়ারি শেষ হয়ে গেছে। ব্যাংক গ্যারান্টির মেয়াদ বৃদ্ধি অন্যথায় নগদায়নের জন্য  গত ৩ জানুয়ারি এ কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে পিডিবি। 

অন্যদিকে, ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার কোম্পানির কেন্দ্রটি বাতিল করার জন্য একইভাবে ২০১৯ সালের ২৩ মে চিঠি দেয় পিডিবি। কিন্তু এখনও কেন্দ্রটি বাতিল তো হয়ইনি উল্টো রিভাইসড ওয়ার্ক সিডিউল তৈরি করতে বলা হয়েছে। 

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা নর্থ ইউটিলিটি কোম্পানি লিমিটেডের অধীন কেন্দ্রটির প্রকল্প পরিচালক শামারুখ মৌটুসীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। একইভাবে ঢাকা ওয়েস্ট পাওয়ার লিমিটেডের প্রকল্পটির পরিচালক শারমিন সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।