এলএনজি আমদানিতে মাত্র ২৫ শতাংশ ভর্তুকি পেয়েছে পেট্রোবাংলা

ভর্তুকির চারভাগের এক ভাগ বরাদ্দ পাওয়াতে এলএনজি মূল্য পরিশোধ নিয়ে শঙ্কায় পেট্রোবাংলা। এলএনজি ভর্তুকি মেটাতে ৩ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা ভর্তুকি চেয়েছিল পেট্রোবাংলা। কিন্তু অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা দাবিকৃত ভর্তুকির চার ভাগের এক ভাগ বা ২৫ শতাংশ মাত্র।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, পেট্রোবাংলা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয় প্রতিবছর নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে নিজেদের প্রকল্প ব্যয় মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ওপর আবার এলএনজির ভর্তুকির সংস্থান তাদের জন্য একটি বড় চাপ।

সম্প্রতি একনেক সভায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, পেট্রোবাংলা থেকে টাকা নিয়ে যাওয়া হলেও এলএনজির ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে পেট্রোবাংলা অচিরেই দেউলিয়া হবার উপক্রম হবে।

সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত এক সভায়,  সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক দেনা-পাওনা পরিশোধের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, সঠিক সময়ে আন্তঃপ্রতিষ্ঠানগুলোর দেনা পরিশোধ হলে কিছু টাকা পাওয়া যাবে। তা দিয়ে এলএনজির ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে বলে তিমি মনে করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এলএনজি খাতে ভর্তুকির বিষয়ে চলতি মাসেই আবারও অর্থ বিভাগের কাছে টাকা চেয়ে চিঠি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জ্বালানি সচিব। 

দেশীয় গ্যাসের উৎপাদন কমায় সরকারকে এলএনজি আমদানি বাড়াতে হচ্ছে। এখন প্রতিদিন ৯০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আমদানি হচ্ছে। গতবছর যা ছিল গড়ে ৬০ কোটি ঘনফুট।

দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে ১৫৯ কোটি ৩০ লাখ ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রায় ৩৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও এলএনজি ও প্রাকৃতিক গ্যাস মিলিয়ে গড়ে ২৭০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। ঘাটতি রয়ে যাচ্ছে প্রায় ৮০ কোটি ঘনফুট।

কাতার ও ওমান থেকে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি সিঙ্গাপুরের স্পট মার্কেট থেকেও সরকার এলএনজি কিনছে।

দেশের অভ্যন্তরে গত কয়েক বছরে বড় কোনও গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়নি। কিন্তু বিদ্যুৎ, উৎপাদন,  শিল্প ও বাণিজ্যে ক্রমান্বয়ে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে চলেছে। বাড়তি এই চাহিদা পুরোটাই আমদানি করে মেটানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এতে করে এলএনজি আমদানি আরও বাড়াতে হবে।