‘নেট মিটারিং-এ বড় সাফল্য আসছে’

দেশে নেট মিটারিংয়ের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বড় সফলতা আসছে। সম্প্রতি কোরিয়ান ইপিজেডে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রুফটপ সোলার প্যানেল হয়েছে। এর দেখাদেখি অন্যরাও আগ্রহী হবেন, এমনটাই আশা করেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা)-এর চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দিন। বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব বলেন তিনি।

বাংলা ট্রিবিউন: শেষ অবধি কত মেগাওয়াট এলো নেট মিটারিং থেকে?

মো. আলাউদ্দিন: সরকারের উদ্যোগটি নিয়ে আমরা অনেক দিন কাজ করছি। বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। সব মিলিয়ে নেট মিটারিং থেকে প্রায় ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে।

বাংলা ট্রিবিউন: কারখানাগুলোর কতটা সাশ্রয় হচ্ছে?

মো. আলাউদ্দিন: আমরা একটি জরিপ করেছি। কোনও লোক যদি নিজের খরচে রুফটপ সোলার করে তাহলে তার প্রতি ইউনিটে বিদ্যুতের খরচ পড়বে তিন টাকা ৩০ পয়সা। এটা বিশ্বের অন্য যেকোনও অঞ্চলের চেয়ে কম। পিডিবির বিদ্যুতের দাম সাড়ে ৬ টাকা থেকে সাড়ে দশ টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক রয়েছে। একেকজনের জন্য বিদ্যুতের দামও আলাদা। কিন্তু যদি কোনও গ্রাহক রুফটপ সোলার করেন তাহলে তার বিদ্যুতের দাম পড়বে ইউনিটপ্রতি তিন টাকা ৬০ পয়সা। সাশ্রয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, এ হিসাবে যে গ্রাহকের বিদ্যুতের দাম এমনিতে বেশি পড়ছে, তিনি রুফটপ সোলার থেকে ততটা সাশ্রয় করতে পারবেন।

বাংলা ট্রিবিউন: বড় রুফটপ সোলারও স্থাপন হচ্ছে বাংলাদেশে। এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতায় দেশের অন্য কারখানাগুলো উদ্যোগী হচ্ছে কি?

মো. আলাউদ্দিন: দেশের কোরিয়ান ইপিজেডে প্রায় ১৬ মেগাওয়াটের একটি রুফটপ সোলার নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চালু হলে এটিই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রুফটপ সোলার। পাশাপাশি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রুফটপ সোলার। এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় রুফটপ সোলার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ওটা থেকে ১৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যায়।

বাংলা ট্রিবিউন: এ ধরনের রুফটপ সোলার দেশের আর কোথায় হতে পারে। সেটি কতখানি সফল হবে বলে মনে করেন?

মো. আলাউদ্দিন: আমরা অনেক ধরনের পরিকল্পনা করেছি। দেশের অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছেন। একটি প্রকল্প সফল হলে আরও অনেকেই আগ্রহী হন। এটাই স্বাভাবিক। আমরাও তাদের সহযোগিতা ও উৎসাহ দিতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: আমাদের দেশের অফগ্রিড অঞ্চলের চরগুলোতে সরকার বিপুল খরচ করে গ্রিড নির্মাণ করছে। এর পরিবর্তে সেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন করলে লাভ হতো কি?

মো. আলাউদ্দিন: এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দেওয়া সম্ভব নয়। অনেক এলাকায় সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে যেমন বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব, তেমনি কোনও কোনও এলাকায় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে খরচের বিষয়টি মাথায় রেখেই পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যেখানে যেটি বাস্তবসম্মত, সেখানে সেই পরিকল্পনাই নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত—নেট মিটারিং সুবিধার আওতায় গ্রাহক বিদ্যুৎ সংযোগের পাশাপাশি নিজস্ব সোলার প্যানেল স্থাপন করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করবেন। উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের পর বাড়তি থাকলে সেটি জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। আবার চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম হলে গ্রিড থেকে নিয়ে তা মেটানো যাবে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক তার উৎপাদিত বিদ্যুৎ গ্রিডে যোগ করলেও ওই পরিমাণ বিদ্যুৎ গ্রিড থেকে তিনি প্রাপ্য হবেন। এ ক্ষেত্রে তার বিদ্যুৎ বিল সমন্বয় করা হবে।