‘এলপিজির দাম কার্যকরের বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তি হওয়াই ভালো’

এলপিজির দাম কার্যকরের বিষয়টি আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হলে ভোক্তা ও ব্যবসায়ী দুই পক্ষই উপকৃত হবে বলে মনে করেন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর জ্বালানি উপদেষ্টা এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম। বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন  বাংলা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার সঞ্চিতা সীতু।

 

বাংলা ট্রিবিউন: এলপিজির দাম সমন্বয়ের বিষয়ে আবারও গণশুনানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে?

শামসুল আলম: মানুষ আগেও বিশেষ উপকার পায়নি। এবার শুনানির পরও সাধারণদের কোনও উপকার হবে বলে মনে করি না। এই শুনানি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে। সেখানে সাধারণ মানুষের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করার কথা নয়।

বাংলা ট্রিবিউন: বিইআরসি দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এই মূল্য সমন্বয় করে কী হবে?

শামসুল আলম: ঘোষিত দামে এলপিজি বিক্রিতে কোম্পানিগুলোকে বিইআরসি বাধ্য করতে পারে। সেই আইন আছে। কমিশনের আইন দিয়েই দামের কার্যকারিতা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কিন্তু কমিশন তা করতে পারছে না। ব্যবসায়ীরাও মানছে না। এখন মূল্য সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের দাবি পূরণ ছাড়া কিছুই হবে না। যতদিন না এই দাম বাজারে কার্যকর হবে ততদিন কোনও সুবিধা পাবে না সাধারণ মানুষ।

বাংলা ট্রিবিউন: এলপিজির ব্যবসায়ীরা কেন এই দাম মানতে চান না?

শামসুল আলম: কোম্পানিগুলো চাইবে তাদের ইচ্ছেমতো দামে এলপিজি বিক্রি করতে, ইচ্ছামতো লাভ করতে। কমিশন পারছে না নিয়ন্ত্রণ করতে। তাই দাম কার্যকরের জন্য আমরা হাইকোর্টের নির্দেশনা চেয়েছি। যার মাধ্যমে দামের কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব।

বাংলা ট্রিবিউন: কী পদক্ষেপ নিলে মানুষের উপকার হতে পারে?

শামসুল আলম: বিইআরসি আদেশ দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু বাজারে কার্যকর হচ্ছে না। এখন দামের আদেশ আদালতের মাধ্যমে কার্যকর হওয়া ভালো। বিইআরসি যদি দাম নির্ধারণে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ দেখে সেক্ষেত্রে আদালতের আদেশ অমান্য করা হবে।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নিয়ে গণশুনানি করেছিল কমিশন। সাত মাস পর আবারও শুনানি করতে যাচ্ছে।

গত ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয় বিইআরসি। কিন্তু সেটা কীভাবে কার্যকর হবে বা কে মনিটর করবে সেই বিষয়ে নির্দেশনা ছিল না। বাজারে ওই দাম তাই কার্যকর হয়নি। এরপর প্রতিমাসেই এলপিজির দাম ঘোষণা দিয়ে চলেছে কমিশন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা এর সঙ্গে পরিচালন ব্যয় ও অন্য ব্যয় যুক্ত করে তাদের মতো দাম ঠিক করে। তাদের দাবিতেই ফের নতুন করে শুনানি হতে যাচ্ছে।