পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আগামী সপ্তাহে

অগভীর সমুদ্রে রফতানির সুযোগ রেখে আবারও পিএসসি সংশোধন আসছে

উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) সংশোধনের চিন্তা করছে পেট্রোবাংলা। সাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে এই উদ্যোগ বলে পেট্রোবাংলা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। আগামী সপ্তাহে এই সংশোধনের বিষয়ে পরামর্শক নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছে পেট্রোবাংলা। এর মধ্য দিয়ে পিএসসিতে গভীর ও অগভীর উভয় সমুদ্রেরই গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে। সঙ্গে আরও কিছু বিষয় যুক্ত করে কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার চিন্তা করা হচ্ছে।

এর আগেও ২০১৯ সালে মডেল পিএসসি সংশোধন করে অগভীর সাগরের গ্যাসের দর প্রতি এমএমবিটিইউ ( ব্রিটিশ থামাল ইউনিট) সাড়ে ৫ ডলার করা হয়। যা আগে সাড়ে ৪ ডলার ছিল। একইসঙ্গে গভীর সমুদ্রের গ্যাসের দাম প্রতি এমএমবিটিইও সাড়ে ৬ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ২৫ ডলার করা হয়।

মডেল পিএসসি ২০১৯-এর ওপর ভিত্তি করে পেট্রোবাংলা আইওসিগুলোর (আন্তর্জাতিক কোম্পানি) সঙ্গে সভা করে।  সভায় আইওসিগুলো গভীর সমুদ্রের সঙ্গে অগভীর সমুদ্রের বিভিন্ন সুবিধা ও পার্থক্যের কথা পেট্রোবাংলাকে জানায়। আইওসিগুলো দাবি করে গভীর সমুদ্রে যেমন গ্যাস রফতানির সুবিধা দেওয়া হয়েছে, একইভাবে অগভীর সমুদ্রের ক্ষেত্রেও এই সুবিধা দিতে হবে।

পেট্রোবাংলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, এবারের সংশোধনে পিএসসিতে অগভীর সমুদ্রে গ্যাস রফতানির প্রস্তাব করতে পারে পেট্রোবাংলা। একইসঙ্গে অগভীর সমুদ্রের গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাত থেকে সাড়ে সাত ডলার এবং গভীর সমুদ্রের গ্যাসের দাম সাড়ে ৭ ডলার করার চিন্তা করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, এখন আমরা প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি ৩৩ ডলারে আমদানি করছি, সেই বিবেচনায় সমুদ্রে গ্যাস পেলে পেট্রোবাংলা তার ভাগে যে গ্যাস পাবে, এতে মোট গ্যাসের দাম কোনোক্রমেই আট ডলারের বেশি হবে না। এছাড়া সংশোধিত পিএসসিতে কর অবকাশ এবং গ্যাস পরিবহনের ক্ষেত্রে আইওসিগুলোকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গভীর সমুদ্রে একটি কূপ খনন করতে ৮০ মিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হয়, অগভীর সমুদ্রে খরচের পরিমাণ ৩৫-৪০ মিলিয়ন ডলার৷ করোনার কারণে বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের খরচ কমিয়ে এনেছে।  সেই সঙ্গে তারা বড় বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। সেই কারণে সরকার সুবিধা দিয়ে অগভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, এখন অনেক বহুজাতিক কোম্পানি এলএনজি ব্যবসার দিকে ঝুঁকেছে। সঙ্গত কারণে গ্যাস রফতানির সুযোগ না দিলে তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে না।

পিএসসি অনুযায়ী পেট্রোবাংলা কোনও গ্যাস কিনতে না চাইলে আইওসিগুলো তা রফতানি করতে পারে।  দেশের ভেতরে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে যাওয়া এবং আমাদের স্থলভাগে গ্যাস উৎপাদন কমে যাওয়ায় সাগরে গ্যাস পাওয়া গেলে তার পুরোটাই আমাদেরই কাজে লাগবে।