আন্তসংস্থার দেনা ৩০ হাজার কোটি টাকা

ছয় বিতরণ কোম্পানির কাছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া জমেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এবং পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি)। বছরের পর বছর বকেয়া জমাতে জমাতে এই অবস্থা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সম্প্রতি এই বকেয়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত তা কতটা আদায় হবে সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে। বলা হচ্ছে, এক ডেসার (বর্তমান ডেসকো) কাছেই ২০ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা অনাদায়ী রয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই টাকা সমন্বয় করা কঠিন হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ করতো ডেসা কিন্তু পরে নতুন কোম্পানি ডিপিডিসি গঠন করার পর তাদের সকল লোকসান দেনা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ডেসার সারচার্জসহ বকেয়ার পরিমাণ ২০ হাজার ৬৯২ টাকা। পাওয়ার ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিজিসিবির কাছেও ডেসার বকেয়া রয়েছে ১৪ কোটি টাকা।

বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ডেসার পাওনা টাকা ফেরত পাওয়া কঠিন। কারণ এই টাকা ফেরত দিতে হলে সরকারকেই দিতে হবে। কিন্তু সেটি আলাদা করে এখন আর পাওয়া সম্ভব না। এই টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে কেউ আর আলোচনাও করে না খুব একটা। তবে সম্প্রতি আবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এই টাকা কীভাবে সমন্বয় করা যায় তা নিয়ে কথা হচ্ছে।

এছাড়া ডিপিডিসির কাছে ২ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা, ডেসকোর কাছে ৩৬৭ কোটি টাকা, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ৩ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা, ওজোপাডিকোর কাছে ২৯১ কোটি টাকা, নেসকোর কাছে ৯৩৫ কোটি টাকা পাবে পিডিবি।

একইভাবে পিডিবির কাছে পিজিসিবি পাবে ৪২৬ কোটি টাকা, ডেসার কাছে ১৪ কোটি, ডিপিডিসি এর কাছে ১২৯ কোটি টাকা, ডেসকোর কাছে ৩২ কোটি, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে ২২৭ কোটি টাকা, ওজোপাডিকোর কাছে ১৯ কোটি টাকা, নেসকোর কাছে ৪৫ কোটি টাকা পাবে পিজিসিবি।

বিধান অনুযায়ী পিডিবি পাইকারিতে বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে। এজন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে নিয়মিত বকেয়া পড়ে। তবে কোনও কোনও কোম্পানির দেনার পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে। তবে এই দেনার ওপর প্রতিমাসেই সুদ দিতে হয়। অনেক সময় বিতরণ কোম্পানিগুলো যে পরিমাণ বিদ্যুৎ কেনে ঠিক সম পরিমাণ বিল আদায় করতে পারে না। গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকাতে বিতরণ কোম্পানিগুলো পিডিবির অর্থ পরিশোধ করতে পারে না।

অন্যদিকে পিজিসিবি বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে। পিজিসিবি বিদ্যুৎ সঞ্চালন করে পিডিবি থেকে বিতরণ কোম্পানির সাব-স্টেশনে পৌঁছে দেয়। সঙ্গত কারণে সঞ্চালনের জন্য পৃথক চার্জ দিতে হয় পিজিসিবিকে।

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা এই বকেয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছি। প্রতি মাসের সমন্বয় সভায় এই হিসাব চাওয়া হয়। এই আন্তসংস্থার বকেয়া টাকা দ্রুত এবং নিয়মিত পরিশোধ করার তাগিদ দিয়েছি আমরা।