এলএনজি টার্মিনাল অচল, গ্যাসের ঘাটতি টের পাওয়া যাবে কিছুদিন পরই

একটি টার্মিনাল অচল হয়ে পড়ায় দেশে এলএনজি থেকে দিনে ১২ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ কমেছে। পেট্রোবাংলা সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। সরকারের তরফ থেকে গ্যাসের এ ঘাটতিকে সাময়িক সমস্যা বলে দুঃখপ্রকাশও করা হয়েছে। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আপাতত ৫২ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সরবরাহ সহসা বাড়ানো কঠিন হবে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র।

পেট্রোবাংলা সূত্র আরও বলছে, সামিটের এলএনজি টার্মিনালের মুরিং ছিঁড়ে যাওয়ার দিন ১৮ নভেম্বর এলএনজি থেকে ৬৪ কোটি ১০ লাখ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। গত ২১ নভেম্বর পর্যন্ত একই সরবরাহ অব্যাহত ছিল। এরপর থেকে তা কমতে শুরু করে। ২৯ নভেম্বর ৫৬ কোটি ৮০ লাখ ঘনফুট ও ৩০ নভেম্বর ৫৯ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করা হয়েছে। এরপর তা নেমে আসে ৫২ কোটি ঘনফুটে।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, মুরিং ছিঁড়ে গেলেও টার্মিনালের ভেতর কিছু এলএনজি ছিল। ওটাই তখন গ্যাসে রূপান্তর করে সরবরাহ করা হচ্ছিল।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এলএনজির জন্য যে টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে তাতে বিদেশ থেকে আসা কার্গোগুলো এলএনজি রেখে যায়। সেখান থেকে রিগ্যাসিফিকেশনের মাধ্যমে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।

২৮ নভেম্বর পর্যন্ত সামিটের ভাসমান টার্মিনাল থেকে মজুত এলএনজি সরবরাহ করেছে। এরপর থেকে সেটি বন্ধ রয়েছে।

মহেশখালীর দুটি ভাসমান টার্মিনাল দিয়ে দিনে একশ’ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব। বছরের কোনও কোনও সময় দিনে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাসও সরবরাহ করা হয়। শীতে পাইপলাইনের ভেতর পানি জমায় গ্যাসের সংকট দেখা দেয়। এ ছাড়া তাপমাত্রা কমে যাওয়াতেও এ সমস্যা দেখা দেয়। এখনও শীত জেঁকে না বসায় ঘাটতিটা চোখে পড়ছে না।

তবে এলএনজি সরবরাহ বাড়ানো না গেলে কয়েক দিনের মধ্যে ঘাটতি টের পাওয়া যাবে। তাই আগেই সরকারের তরফ থেকে দুঃখপ্রকাশ করা হয়েছে।

সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, আগামী ১৫ জানুয়ারির আগে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। মুরিংটি ঠিক করতে এ সময়টুকু লাগবে বলে জানানো হয়েছে। মুরিং বয়া ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদেশ থেকে গ্যাস নিয়ে আসা জাহাজগুলো সামিটের টার্মিনালে নোঙর করতে পারছে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বর থেকে নতুন ধান রোপণ শুরু হয়। এ সময় সেচের জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় বেশি। দেশের বেশিরভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় ডিজেলের ব্যবহার কমতে শুরু করেছে। কিন্তু সেচ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রয়োজনে তরল জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্রতে উৎপাদন বাড়াতে হবে।

এখন দেশে মোট গ্যাসের চাহিদা ৪০০ কোটি ঘনফুট। এরমধ্যে দেশের ক্ষেত্রগুলো থেকে গত ২ নভেম্বর সরবরাহ করা হয়েছে ১৪১ কোটি ঘনফুট। এ ছাড়া এলএনজি থেকে আসছে ৫২ কোটি ঘনফুট। অর্থাৎ এখন চাহিদার অর্ধেক গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে।