গ্যাসের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে পুরো খরচ ভোক্তার ওপর চাপানো যাবে না

নির্ভরযোগ্য সরবরাহ ও সহনীয় দাম নিশ্চিত করার জন্য জ্বালানির বুদ্ধিদীপ্ত মিশ্রণের জন্য নিজস্ব সম্পদ অনুসন্ধান ও আহরণের বিকল্প নেই। কিন্তু তারপরও গ্যাসের মতো প্রাথমিক জ্বালানির দাম বাড়াতে হবে। তবে গ্যাসের উৎপাদন ও আমদানি খরচের পুরোটা ভোক্তার ওপর চাপানো সঠিক হবে না।

শনিবার (২২ জানুয়ারি ‘গ্যাস সংকটকালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির উদ্যোগ ও শিল্প খাতে এর চ্যালেঞ্জ’ শিরোনামে এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ম্যাগাজিন আয়োজিত ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায়  ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন,  জ্বালানি বিশেষজ্ঞ খন্দকার আবদুস সালেক সূফি, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য মিজানুর রহমানসহ আরও অনেকে।  

ইজাজ হোসেন বলেন,  এখন গ্যাস খুবই মূল্যবান। এলএনজি আমদানি করবো, দাম যাই হোক না কেন বিক্রি করবো—এই মনোভাব ভুল চিন্তা। সেক্ষেত্রে নিজেদের গ্যাস অনুসন্ধান না করে আমদানিতে যাওয়া বড় ভুল হয়েছে। নিজেদের কয়লা না তোলা আরেকটি ভুল সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, শিল্প, গৃহস্থালি, সার না বিদ্যুৎ কোন খাতে গ্যাস ব্যবহার হবে তা ঠিক করতে হবে। যেখানে সর্বজনীন সুবিধা হয় সেখানেই এই গ্যাস ব্যবহার করতে হবে।

ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, গ্যাসের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে পারিনি। যদিও গ্যাস এখন আর অফুরন্ত নয়। বর্তমানে আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে দীর্ঘমেয়াদী চিন্তায় আমরা বিনিয়োগ করতে পারিনি। শুধু গ্যাসের উপর নির্ভরতার মূল্য এখন দিতে হচ্ছে। বর্তমানে সাবসিডির পরিমাণ ৩ গুণ বেড়ে গেছে। এটা যুক্তিসঙ্গতভাবে দেখতে হবে। এখানে ব্যালেন্স করা জরুরি হয়ে পড়েছে। গ্যাসের ওপর চাপ কমাতে কয়লাকে বিবেচনায় নিতে হবে।

মিজানুর রহমান বলেন, নিজস্ব সম্পদের স্বল্পতার কারণে জ্বালানি আমদানি করতে হচ্ছে। এখন গ্যাসের দাম যে ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই দাম সমন্বয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ৩ বছর পর। আমি মনে করি প্রতি বছর জ্বালানির দাম সমন্বয় করা উচিত। আর গ্যাসের যে উৎপাদন ও আমদানি মিলিয়ে খরচ তার পুরোটা ভোক্তার ওপর চাপানো সঠিক হবে না। আগেও তা করা হয়নি। এবারও বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হবে। 

খন্দকার আবদুস সালেক বলেন, বর্তমানে গ্যাস মিশ্রণে ৭৮ শতাংশ নিজস্ব গ্যাস ২২ শতাংশ আরএলএনজি। তার মাত্র ৫ শতাংশ স্পট বাজার থেকে আমদানি করা। ফলে বিপুল পরিমাণ দাম বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানো যেতে পারে।