তিন বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ টিআইবির

তিনটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুললো ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তা- কর্মচারীদের একাংশের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী, মধ্যস্বত্ত্বভোগী এমনকি ‘ডরপ’ নামের একটি এনজিওর কর্মীরাও এই টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে বলে অভিযোগ সংস্থাটির।

বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো হচ্ছে, বরিশাল কয়লাভিত্তিক ৩৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাঁশখালী এস এস ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মাতারবাড়ী এলএনজিভিত্তিক ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।

এরমধ্যে বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১৫ কোটি ৫৯ লাখ ৯০ হাজার টাকা, বাঁশখালীতে ২৫৫ কোটি এবং মাতারবাড়ীতে ১১৯ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে জানায় টিআইবি।

বুধবার (১১ মে) ‘বাংলাদেশে কয়লা ও এলএনজি বিদ্যুৎ প্রকল্প: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। 

টিআইবি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে, প্রকল্প বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত দুর্নীতি তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

টিআইবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করায় নির্মাণ ব্যয়ও বেড়েছে। এতে পিডিবিকে অতিরিক্ত দরে বিদ্যুৎ কিনতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বরিশাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ৮১ একর জমি প্রয়োজন হলেও ৩১০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। একইভাবে বাঁশখালীতে ৩০৪ একরের জায়গা ৬৬০ একর এবং মাতারবাড়ীতে ৩৩ একরের জায়গায় ৩৮৮ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৯৪২ একর অতিরিক্ত জমি উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে অভিযোগ টিআইবির।

টিআইবি জানায়, এসব জমিতে কৃষি ও শস্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। যা ওই এলাকার দরিদ্র মানুষের জীবিকায় বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

ইফতেখারুজ্জামন বলেন, দেশের বিদ্যুৎ খাত দেশি ও বিদেশি দাতা ও বিনিয়োগ নির্ভর হয়ে পড়েছে। প্রকল্পগুলোতে তাদের প্রভাব অনেক বেশি। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ঘোষণা আছে, কিন্তু বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেই।

তিনি আরও বলেন, প্রভাবশালী মহলকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ-প্রতিবেশের ওপর প্রভাবকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরিবেশ সুরক্ষার দাবিতে নিয়োজিত অনেকেও বিপদে পড়েছে। যারা দায়ী তারা বহাল তবিয়তে আছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, কয়লা থেকে সরে এসে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যাওয়া উচিত। জীবাশ্ম জ্বালানিতে যা হয়েছে তা আমরা চাই না। এ জ্বালানিতে আমরা এক ধরনের জিম্মি হয়ে গিয়েছি। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে যেতে হবে।