এলপিজির নতুন দাম ঘোষণায় বিপত্তি

মালিকদের ওপর জোর খাটিয়ে এবার আর এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করতে পারলো না বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। জুলাই মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণের সময়ই মালিকরা এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে এসেছিল। তবে সেবার দাম নির্ধারণে বিইআরসির জোরাজুরি মেনে নিলেও এবার আর মানেনি। এজন্য রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) এলপিজির দাম নির্ধারণের ঘোষণার আগে মালিক ও বিইআরসির বৈঠকটি ভেস্তে যায়।

বিইআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু ফারুক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা মালিকদের সব এলসি সেটেলমেন্টের কাগজপত্র চেয়েছি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব এলসির কাগজ জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে দেশে ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। এখন মালিকরা পরিবহন ব্যয় হিসেবে যে অর্থ ধরা ছিল সে বিষয়ে আপত্তি তুলেছে। আমরা আগামী ৭ তারিখে এ বিষয়ে মালিকদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করবো।

বিইআরসি সূত্র বলছে, এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া দরে এলপিজির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খুলতে পারছে না এলপিজির উদ্যোক্তারা। আবার বিইআরসিরও বাংলাদেশ ব্যাংকের বাইরে গিয়ে ডলারের দাম নির্ধারণ করা কঠিন। ফলে একটি গোল বেঁধেছে। মালিকরা চাইছে তারা যে ডলারের দামে এলসি খুলেছে ওই দামই তাদের দিতে হবে। মালিকরা বলছে এটি না করলে এত বেশি পরিমাণ লোকসান হবে, যা অন্য কোথাও থেকে পোষানো তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না।গ্যাস সিলিন্ডার

বিইআরসির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, আমরা তো এই বিষয়ে নিরুপায়। তিনি বলেন, আমরা চাইলেই একটি আলাদা ডলারের দাম নির্ধারণ করতে পারি না। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। সেখানে ব্যাংকগুলোকে এলসি খোলার বিষয়ে ডলারের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

সূত্র বলছে, মালিকরা দাবি করছে তারা প্রতি ডলার ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরেও এলসি খুলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের ডলারের নির্ধারিত দাম এর চেয়ে কম। ফলে মালিকরা এক ধরনের লোকসানে পড়েছে।

বছরের শুরুর দিক থেকে এলপিজির দাম নির্ধারণ শুরু করে বিইআরসি। প্রতিমাসেই এলপিজির দাম নিয়মিত নির্ধারণ করলেও এবারই প্রথম নির্ধারিত দিনে এটি করতে পারলো না প্রতিষ্ঠানটি। এলপিজির দাম নির্ধারণের আগে প্রতিবারই মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা। মালিকরা দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বৈঠকে সম্মতি দিলেও খুচরা বাজারে কোনও দিনই বিইআরসি নির্ধারিত দরে রান্না আর পরিবহনের পেট্রোলিয়াম গ্যাসভিত্তিক এলপিজি পাওয়া যায় না।