বিতরণ কোম্পানিগুলোর জরিপ

বিদ্যুতের সেবায় খুশি গ্রাহক

সে অনেক দিন আগের কথা যখন গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ যেতো না। কিন্তু এবার গ্রীষ্মে বিদ্যুতের যে অবস্থা ছিল তা বহুদিন মানুষের মনে থাকবে। সরকার বলছে— ইউক্রেন সংকটে বিশ্ব-জ্বালানি পরিস্থিতি টালমাটাল, তাই বিদ্যুতের এই আসা-যাওয়ার খেলা মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। এখন এমন হয়েছে যে, কোনও একদিন বিদ্যুৎ না গেলে অবাক হয়ে বলতে হচ্ছে—এই যা, আজ না একবারও বিদ্যুৎ যায়নি। বিদ্যুৎ যেন দু-একবার না গেলেই নয়।

সেই বিদ্যুতের সেবা নিয়ে আবার জরিপ করেছে দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো—যাতে সবাই বিদ্যুতের এই সেবায় হাসি আর খুশিতে রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। এই জরিপের সব তথ্য তুলে ধরে জানুয়ারি মাসে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে কোম্পানিগুলোকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।

এর আগেও সুবিধাজনক সময়ে বিদ্যুৎ সেবার হিসাব প্রকাশ করতে দেখা গেছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। সেবাতে সাধারণ মানুষ খুশি—এমন কথা বিদ্যুৎ বিভাগ সাধারণত শীতকালেই প্রকাশ করে। কারণ শীতের এই সময়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং না হওয়াতে—এ বিষয়ে কারও তেমন মাথাব্যথা থাকে না। ফলে বিদ্যুতের অবস্থা খুব ভালো—এটি বললেও কেউ কিছু মনে করে না।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছে তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৮৭৬ জন। গ্রাহকদের মধ্যে সেবা অসাধারণ বলে জানিয়েছেন ২ হাজার ৩১৭ জন, অতিউত্তম বলেছেন ৩ হাজার ৮১৩ জন, উত্তম বলেছেন ৩ হাজার ৭২২ জন আর ১ হাজার ১২৪ জন জানিয়েছেন মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম ছিল। এছাড়া কেউ বলেনি চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল।

একইভাবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছে তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৮৭০ জন। গ্রাহকদের মধ্যে সেবা অসাধারণ বলে জানিয়েছেন ২৪৪ জন, অতিউত্তম বলেছেন ৩৫৫ জন, উত্তম বলেছেন ২১৬ জন আর ৩৪ জন জানিয়েছেন তাদের সেবার মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম ছিল। ২১ জন বলেছে চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছে তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৯২৪ জন। এসব গ্রাহকের মধ্যে সেবা অসাধারণ বলে জানিয়েছেন ৪ হাজার ৭০ জন, অতিউত্তম বলেছেন ৭৫০ জন, উত্তম বলেছেন ৯৮ জন আর মাত্র ২ জন জানিয়েছেন তাদের সেবার মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম ছিল। ৪ জন বলেছেন চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল।

ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটড (ডেসকো) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছে তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৪৪৫ জন। এসব গ্রাহকের মধ্যে সেবা অসাধারণ বলে জানিয়েছেন ২৬২ জন, অতিউত্তম বলেছেন ৮৮ জন, উত্তম বলেছেন ৭৩ জন আর মাত্র ২০ জন জানিয়েছেন তাদের সেবার মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম। মাত্র ২ জন বলেছেন চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল।

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছে তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬৪ জন। এসব গ্রাহকের মধ্যে সেবা অসাধারণ কেউ বলেইনি। অতিউত্তম বলেছেন ১৮ জন, উত্তম বলেছেন ৩৮ জন আর মাত্র ৪ জন জানিয়েছেন তাদের সেবার মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম ছিল। মাত্র ৪ জন বলেছেন চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল।

নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) তাদের সেবার মান যাচাইয়ে যে জরিপ করেছেন তাতে গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৬৭০ জন। এসব গ্রাহকের মধ্যে ৬৫০ জনই জানিয়েছেন তাদের সেবা অসাধারণ। এছাড়া অতিউত্তম সেবা বলেছেন ৯ জন, উত্তম বলেছেন ৬ জন আর মাত্র ৫ জন জানিয়েছেন তাদের সেবার মান চলতি মানের মতোই অর্থাৎ কোনোরকম ছিল। এদিকে কেউই চলতি মানের নিচে তাদের সেবার মান ছিল বলেনি।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, আমরা সাধারণ মানুষের মতামতকে গুরুত্ব দেই। এই কারণে মাঝে মাঝে জরিপ করি। এতে গ্রাহকের সন্তুষ্টি বোঝা যায়।