এবার এলএনজি করে ভোলার গ্যাস আনার প্রস্তাব

সিএনজির পর এবার এলএনজি করে ভোলার গ্যাস আনার প্রস্তাব দিয়েছে মেঘনা শিপস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের দেশীয় একটি কোম্পানি। কোম্পানিটি বলছে, ছোট আকারের বা স্মল স্কেলে এলএনজি পরিবহনের অভিজ্ঞতা রয়েছে—যুক্তরাষ্ট্রের এমন একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তারা এই প্রস্তাবটি জমা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি নিকিসো কসমোডিয়ামের পক্ষে দেওয়া প্রস্তাবটি ইতোমধ্যে যাচাই-বাছাই শুরু করেছে পেট্রোবাংলা। অন্যদিকে কোম্পানির এক প্রতিনিধি বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, প্রস্তাবটি আকর্ষণীয় বিধায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

তবে এলএনজি করে আনার জন্য যে পরিমাণ গ্যাসের সংস্থান থাকার কথা তা আপাতত ভোলায় নেই। একইসঙ্গে স্মল স্কেলের এলএনজি পরিবহনের জন্য নদীতে যে পরিমাণ নাব্য থাকার কথা সে বিষয়ে কোনও সমীক্ষাও হয়নি। উপরন্তু স্মল স্কেলের এলএনজি প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিবহনের জন্য যে অবকাঠামো প্রয়োজন তা নির্মাণ করা সময়সাপেক্ষ বিষয়। ফলে ভোলা থেকে গ্যাস এনে সরকার তাৎক্ষণিক সমাধানের যে চেষ্টা করতে চায়, তা এলএনজি দিয়ে সম্ভব নয়।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান বলেন, ভোলা থেকে এলএনজি করে গ্যাস আনার যে প্রস্তাব আমরা পেয়েছি তাতে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির আনার খরচ ধরা হয়েছে ৬ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যা ৬০০ টাকারও বেশি। এত ব্যয়ে ভোলা থেকে এলএনজি আনা সম্ভব কিনা সেটি আমরা যাচাই করে দেখছি।

দেশে দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। মহেশখালীতে ভাসমান টার্মিনাল দুটির প্রতিদিনের সরবরাহ ক্ষমতা ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।  এখানে প্রতি এমএমবিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) রি-গ্যাসিফিকেশনের খরচ ৫০ সেন্টের নিচে। কিন্তু এখানে পেট্রোবাংলা গ্যাস কিনে পরিবহন করে টার্মিনাল পর্যন্ত নিয়ে আসে। ভোলা থেকে যে এলএনজি আনা হবে তার পুরো দায়িত্ব চায় প্রস্তাব দেওয়া কোম্পানিটি৷ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে (পিপিপি) বিল্ট, অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওটি) পদ্ধতিতে ভোলা থেকে গ্যাস এনে দিতে চায় আমেরিকান এই কোম্পানিটি। প্রকল্পের অধীনে ভোলা থেকে ছোট আকারের জাহাজে করে মাইনাস ১৬২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় গ্যাসকে তরল করে সুবিধাজনক কোনও জায়গায় নিয়ে আসা হবে, যেখানে সরাসরি নৌপথের যোগাযোগ রয়েছে।

সেখানে স্থলভাগে রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট স্থাপন করে এলএনজিকে পুনরায় গ্যাসে রূপান্তর করে গ্রিডে দেওয়া হবে। টার্মিনাল এবং রি-গ্যাসিফিকেশন, স্টোরেজের কাজগুলো করা হবে একটি কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে। এতে অর্থায়ন করবে চীনা কোম্পানি এনকিউএফসিএল এবং স্টোরেজের কাজ করবে কেমসিম্যাক।

এদিকে ভোলা থেকে সিএনজি বানিয়ে গ্যাস আনতে তিন দেশীয় কোম্পানি প্রস্তাব দিয়েছে আগেই। পেট্রোবাংলাকে দেওয়া প্রস্তাবে কোম্পানিগুলো বলছে, তারা ভোলা থেকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করে গ্যাস এনে দিতে পারবে দেশের অন্যান্য জায়গায়। তবে পেট্রোবাংলা বলছে, এই বিষয়টিও তারা পর্যালোচনা করে দেখছে।

ভোলা থেকে গ্যাস এনে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া কোম্পানি তিনটি হচ্ছে– ইন্ট্রাকো সিএনজি, সুপার গ্যাস ও অফসিডিয়ার সিএনজি। এই কোম্পানি তিনটিরই দেশে সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশন রয়েছে।