‘মোখা’ মোকাবিলায় বিদ্যুতের প্রস্তুতি কী?

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তরফ থেকে শনিবার এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। ঝড়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে এমন এলাকা চিহ্নিত করে সেসব জায়গায় বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

আরইবির সদস্য (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) দেবাশীষ চক্রবর্ত্তী বলেন, আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। প্রত্যেকটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে (পিবিএস) এ বিশেষ কমিটি করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম আগেই ছিল। সেগুলোতে লোকবল বাড়ানো হয়েছে৷

তিনি বলেন, ঝড়ে তার, ট্রান্সফরমারের ক্ষতি হলে ঝড় থামার পরে সঙ্গে সঙ্গে যাতে মেরামত করা যায় সেজন্য সব ধরনের মেশিনারি একেবারে দুর্গম এলাকায়ও রাখা হয়েছে। লোকবল বাড়াতে নিজেদের লোকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের থাকতে বলা হয়েছে।

আরইবি সূত্র বলছে, তাদের উপকূলের সব পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এজন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএমদের আরইবির প্রধান কার্যালয় থেকে কী কী করতে হবে তা জানানো হয়েছে। এবার ঝড়ের গতিবেগ বেশি হওয়ায় বেশি ক্ষতির শঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে আরইবির চট্টগ্রাম পিবিএস-১ এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার আবু বকর বলেন, আমরা মোট ১০৫টি টিম করেছি। এর মধ্যে কেউ মনিটরিং এর কাজ করবে, কেউ মেরামত, কেউ বা কন্ট্রোল রুম সামলাবে। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে আমাদের কক্সবাজার পিবিএস। আমরা সংশ্লিষ্ট সব পিবিএস এর কর্মকর্তারা শনিবার ভার্চুয়াল মিটিং করে কী কী ধরনের ক্ষতি পারে এবং এসব সামলাতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

চট্টগ্রামের পাশাপাশি খুলনা এবং বরিশাল অঞ্চলও রয়েছে ঝুঁকিতে। পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর এবং মোংলাকে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এজন্য এসব এলাকার বিতরণ কর্মীদের সতর্ক রাখা রয়েছে। 

আরইবির পাশাপাশি বৃহত্তর খুলনা এবং বরিশালে বিদ্যুৎ বিতরণ করে ওজোপাডকো।  সংস্থার চিফ ইঞ্জিনিয়ার আবুল হাসান বলেন, আমরা কণ্ট্রোল রুম থেকে আপাতত মনিটরিংয় জোরদার করেছি। উপকূলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জানানো হয়েছে, মোবাইল চার্জ দিয়ে রাখতে, শুকনা খাবার রাখতে৷

তিনি বলেন, এমনিতেই আমাদের পুরোপুরি ছুটি থাকে না। আমরা বাইরোটেশন কাজ করি। এখন জরুরি অবস্থা কোনও রকম ছুটি রাখা হয়নি। সবাইকে অফিসে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) জানায়, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে রবিবার (১৪ মে) বাংলাদেশের কক্সবাজার ও  অন্যান্য স্থানে আঘাত হানতে পারে। এসময় বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আপনাদের সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটতে পারে। স্পষ্টতই দুর্যোগকালীন বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থা নানাভাবে ব্যাহত হয়।

তারা আরও জানায়, এছাড়া বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণেও প্রায়ই বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে। বৈদ্যুতিক লাইনে ডালপালাসহ গাছ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটে। এতে বৈদ্যুতিক লাইন ও পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটে যান্ত্রিক ত্রুটি। সুতরাং, এরূপ বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে গাছ সড়ানোসহ যান্ত্রিক ক্রটি সারাতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হয়। এমতাবস্থায়ও বৈদ্যুতিক সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সব কারিগরি বিভাগের কর্মীরা সদা তৎপর আছেন।