১৬ টাকা করেই গ্যাসের দাম দিতে হবে সার কারখানাকে

শেষমেশ প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা করেই মেটাতে হচ্ছে সরকারি সার কারখানাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার কারখানাকে ১৬ টাকা করেই দাম পরিশোধের নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

জ্বালানি বিভাগ জানায়, ২০২২ সালে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সার উৎপাদনে গ্যাসের দাম চার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৬ টাকা নির্ধারণ করে। কিন্তু শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে গ্যাসের দাম চার টাকা করেই পরিশোধ করা হচ্ছিল।

গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো সার কারখানার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করে কোনও সমাধান করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি বিভাগ শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে গেলেও তারা বাড়তি দাম দিতে রাজি হয়নি। এরপর জ্বালানি বিভাগ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিষয়টি জানিয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী সার কারখানাকে ১৬ টাকা করেই প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে সরকার-নির্ধারিত প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ১৬ টাকা হারে পরিশোধের জন্য এবং এ খাতে কম অর্থ পরিশোধের কারণে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বকেয়া বাবদ ১ হাজার ২১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা পরিশোধের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী ১৬ টাকা করেই গ্যাসের মূল্য পরিশোধ করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ ক্যামিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের আওতাধীন রয়েছে সরকারি সার কারখানাগুলো। এর মধ্যে সরকারি পাঁচটি সার কারখানা ইউরিয়া উৎপাদনে গ্যাস ব্যবহার করে। যারা প্রত্যেকে ২০২২ সালে ঘোষিত গ্যাসের বিল পরিশোধে বিরত ছিল।

গ্যাসের দাম এক ধাপে চার টাকা থেকে চার গুণ বাড়িয়ে ১৬ টাকা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তখন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, সরকার বাড়তি অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দেবে। সরকার গ্যাসের ভর্তুকি কয়েক জায়গায় দিতে চায় না। এ জন্য কৃষির ওপর চাপ বাড়ার কোনও আশঙ্কা নেই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলাদেশ ক্যমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের বাড়তি বিল দিতে সমস্যা নেই। যদিও সরকার বাড়তি দামের অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিয়ে থাকে। সাধারণত সরকারের পক্ষে অর্থ বিভাগ ভর্তুকির টাকা দিয়ে থাকে। তবে সরাসরি সরকার কৃষককেও ভর্তুকির টাকা দেয়।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এখন আর নিজেদের খনির গ্যাস দিয়ে চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। চাহিদার একটি বড় অংশ আমদানি করতে হয়। এ জন্য নিয়মিত অর্থের জোগান প্রয়োজন। কেউ গ্যাসের বিল বাকি রাখলে বা না দিতে চাইলে আমদানি বন্ধ হয়ে যাবে, যা সবাইকে সংকটের মধ্যে ফেলবে।