পিএসসি অনুমোদন, সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পথ খুললো

উৎপাদন বণ্টন চুক্তি (পিএসসি) অনুমোদন করেছে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বুধবার (২৬ জুলাই) এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ পেট্রোবাংলা সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যে পরিকল্পনা করেছিল তার পথ খুললো।

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার সম্প্রতি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ আমরা সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র আহ্বান করতে যাচ্ছি। এখন পিএসসি সংশোধন করে সরকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

গত কয়েকমাস পেট্রোবাংলা, জ্বালানি বিভাগ এবং সরকারের উচ্চ পর্যায়ে নানামুখী পর্যালোচনায় পিএসসি চূড়ান্ত হলো।

সূত্র বলছে, ২০২০ সাল থেকে সরকার তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে পিএসসি চূড়ান্ত করতে পেট্রোবাংলাকে চাপ দিচ্ছিল। একই বছর বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি (আইওসি) বৈঠকে বসে পেট্রোবাংলার সঙ্গে৷ ওই বৈঠকে পিএসসি সংশোধনের সুপারিশ জানায় আইওসিগুলো৷ পরে পেট্রোবাংলা উড অ্যান্ড ম্যাকেঞ্জিকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

প্রডাকশন শেয়ারিং কন্ট্রাক্ট (পিএসসি)

পেট্রোবাংলা বলছে, বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানির (আইওসি) জন্য গ্যাসের সমান হিস্যা রাখা হচ্ছে। 

এর আগের পিএসসি অনুযায়ী, ৭৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করলে পেট্রোবাংলা পেতো ৫৫ ভাগ, আইওসি পেতো ৪৫ ভাগ। এভাবে ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনে পেট্রোবাংলা ৬০ ভাগ, আইওসি ৪০ ভাগ এবং ২৫০ মিলিয়নের ক্ষেত্রে পেট্রোবাংলা ৬৫ ভাগ, আইওসি ৩৫ ভাগ পেতো। এভাবে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদন হলে পেট্রোবাংলা ৮০ ভাগ এবং আইওসি ২০ ভাগ গ্যাস পেতো।

এবার নতুন পিএসসিতে সেটি অর্ধেক অর্ধেক হয়েছে অর্থাৎ আইওসি যাই উত্তোলন করুক না কেন তারা অর্ধেক গ্যাস পাবে।

নতুন পিএসসিতে গ্যাসের দামও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এখনকার পিএসসিতে গভীর সমুদ্রে প্রতি ইউনিট সোয়া সাত ডলার ও অগভীর সমুদ্রে গ্যাসের দাম ধরা হয়েছে সাড়ে পাঁচ ডলার। এখন পিএসসিতে গভীর সমুদ্রে সোয়া সাত ডলারের সঙ্গে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে তার কর দিয়ে দেওয়া এবং প্রতিবছর দেড় ভাগ হারে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। তবে অগভীর সমুদ্রে এই দুই সুযোগের কোনটি নেই। তবে উড অ্যান্ড ম্যাকেঞ্জির প্রতিবেদনে—দাম বাড়িয়ে ৮, ৯ বা ১০ ডলার হলে কী পরিস্থিতি হতে পারে তাও বলা ছিল।

বর্তমানে গভীর ও অগভীর সাগরের মোট ২৬টি ব্লকের মধ্যে ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে কাজ করছে ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি।

আন্তর্জাতিক আদালতে ২০১২ সালে মিয়ানমার ও ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্র সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সর্বমোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি সমুদ্র অঞ্চলের ওপর মালিকানা নিরঙ্কুশ হয়। কিন্তু এখনও সেই অর্থে সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু হয়নি।