বিদ্যুতের নতুন সংযোগ

ভবনের ছাদ ১০০০ বর্গফুট হলেই ‘নেট মিটারিং’

নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে ভবনের ছাদে এক হাজার বর্গফুট জায়গা থাকলেই গ্রাহককে নেট মিটারিংয়ের আওতায় সৌর প্যানেল স্থাপন করতে হবে। বিদ্যুৎ বিভাগ নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে নতুন এই নির্দেশনা জারি করেছে। এর ফলে আগে বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে যে নীতিমালা ছিল, সেটা বাতিল করা হয়েছে।

২৩ অক্টোবর জারি করা এই নির্দেশনায় সৌর বিদ্যুৎকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, উন্নত বিশ্বে বাসাবাড়ির ওপরে সোলার প্যানেল লাগিয়ে প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের একাংশ সংস্থান করা হয়। আমাদের এখানেও সেটি করা যেতে পারে।

আগের আইনে দুই কিলোওয়াটের চেয়ে বেশি ক্ষমতার বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রে দুইভাগ হারে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছিল। তখন ছাদের ওপরে সৌর প্যানেল স্থাপন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর সেই বিধান তুলে দিয়ে নতুন গাইড লাইন দিলো সরকার। গ্রাহকরা নেট মিটারিংয়ের আওতায় এলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি হিসাব থাকবে বিতরণ কোম্পানির কাছে।

নেট মিটারিং হচ্ছে সেই পদ্ধতি—যে পদ্ধতিতে নিজস্ব ব্যবহারের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। আবার সৌর বিদ্যুৎ না পেলে গ্রাহককে গ্রিড থেকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এতে মাস শেষে গ্রাহকের অন্তত ৪০ ভাগ বিল কম আসতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ভবনের ছাদে কমপক্ষে এক হাজার বর্গফুট জায়গা থাকলে নেট মিটারিং পদ্ধতিতে রুফটপ সোলার প্যানেল স্থাপন করতে হবে।

আবাসিক গ্রাহক

আবাসিক গ্রাহকরা সিঙ্গেল ফেজ সংযোগে আগ্রহী হলে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে পারবে।

থ্রি ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে ১০ কিলোওয়াট বা তদূর্ধ্ব লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত গ্রাহকদের কমপক্ষে এক কিলোওয়াট (এক হাজার ওয়াট) নেট মিটারিং সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।

শিল্প গ্রাহক

নতুন নীতিমালায় শিল্প ও বাণিজ্যিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে—১০ বা তার চেয়ে বেশি কিলোওয়াট লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত বিদ্যুৎ গ্রাহকদের নেট মিটারিং অনুসরণ করে অনুমোদিত লোডের ১০ শতাংশ ক্ষমতার সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। তবে ১০ কিলোওয়াট লোডের বেশি বরাদ্দপ্রাপ্ত  গ্রাহকরা আগ্রহী হলে রুফটপ সোলার সিস্টেম বসাতে পারবেন এবং স্থাপিত সিস্টেমের ক্ষমতা এক কিলোওয়াটের (এক হাজার ওয়াট) বেশি হলে নেট মিটারিং নির্দেশিকা অনুসরণে তা করতে হবে। তবে তাদের জন্য বিষয়টিকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি।

শিক্ষা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে— সিঙ্গেল ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান আগ্রহী হলে সোলার সিস্টেম স্থাপন করতে পারবে। তবে থ্রি ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রে ১০ কিলোওয়াট বা তদূর্ধ্ব লোড বরাদ্দপ্রাপ্ত গ্রাহকদের কমপক্ষে এক কিলোওয়াটের (এক হাজার ওয়াট) নেট মিটারিং সিস্টেম স্থাপন করতে হবে।

ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া গ্রাহকরা বরাদ্দকৃত লোড বাড়াতে চাইলে তাদেরও অতিরিক্ত লোডের জন্য নেট মিটারিংয়ের নতুন এই গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমরা গ্রাহকদের নেট মিটারিংয়ে উৎসাহিত করছি। আমরা চাই নানান সুবিধা নিয়ে তারা নেট মিটারিংয়ের আওতায় আসুক।