মার্চের মধ্যে গ্যাস সংকট সমাধানের আশ্বাস বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর

চলমান গ্যাস সংকটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে সমাধানে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এই সময়ের মধ্যে গ্যাসের সংকট সমাধান হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আশার খবর তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিবিয়ানাতে আরও এক দশমিক ৬ টিসিএফ (ট্রিলিয়ন কিউবিক ফিট) গ্যাসের নতুন মজুদ পাওয়া গেছে। সেটি আগামী কিছু দিনের মধ্যে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এই আশার খবর জানান।

চলমান গ্যাস সংকটের কারণ ব্যাখ্যা করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের দুটি এলএনজি টার্মিনালের মধ্যে একটি সংস্কারের জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এ কারণে শীতে চলমান গ্যাস সংকট আরও বেড়েছে। এলএনজি টার্মিনালটি সংস্কার শেষে দেশে না আসা পর্যন্ত গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানো পেট্রোবাংলার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিবছরই শীতে পাইপলাইনে পানি জমার কারণে গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হয়। এছাড়া এই সময়ে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় গ্যাসের চাহিদাও বেড়ে যায়। এবার সেই সংকটের সঙ্গে সরবরাহের অপ্রতুলতা যোগ হওয়ায় গ্যাস সংকট বেড়েছে।’ এই সংকট কাটতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।

শীতের সংকটের কারণে বাসাবাড়িতে চুলা জ্বলতে সমস্যা হচ্ছে, একই সঙ্গে শিল্পেও গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। 

এসময় বিদ্যুতের চাহিদা নিয়েও কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার রমজান এবং গ্রীষ্মকালে আগের চেয়েও বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। এই চাহিদা মোকাবিলায় সরকার এখনই উদ্যোগ নিচ্ছে। ইতোমধ্যে আগামী গ্রীষ্মের চাহিদা সাড়ে ১৭ হাজার মেগাওয়াট নির্ধারণ করা হয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী জানান, জানুয়ারির শেষ দিক থেকে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকে। জুন-জুলাই মাস পর্যন্ত এই চাহিদা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। সংকট সামাল দিতে সরকার আগে-ভাগে এলএনজি টার্মিনাল সংস্কার করতে পাঠিয়েছে।

নসরুল হামিদ তৃতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম সংবাদ সম্মেলন করলেন। নতুন মন্ত্রিসভায় আবারও গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই কর্মকর্তাদের আগামী ১০০ দিনের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন নসরুল হামিদ। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধানে গুরুত্ব দিচ্ছি। আশার খবর হচ্ছে আমরা যে গ্যাসকূপ খনন করেছি, সেগুলোতে সফল হয়েছি।’

‘নিজস্ব গ্যাসের অনুসন্ধান দেশের সবচেয়ে বড় উদ্যোগ হবে’, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৬টি কূপ খনন করা হবে। এরপর আরও ১০০ কূপ খনন করা হবে। আমরা আরও দুটি এলএনজি টার্মিনাল নিয়ে আসছি।’

নসরুল হামিদ বলেন, ‘আগামী ২০২৭ সাল নাগাদ বিদ্যুতের চাহিদা আরও  ৬ হাজার মেগাওয়াট বাড়বে। এই চাহিদা মোকাবিলায় এখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে তেল কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, সে বিষয়েও নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। সেই সঙ্গে জ্বালানি বিষয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান করার উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।