বিদ্যুতে স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা, লোডশেডিং নেমেছে শূন্যে

বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার মধ্যে ঈদের বিদ্যুতে সর্বোচ্চ স্বস্তি দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। বিদ্যুৎ বিভাগ এবং বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল থেকে সারা দেশে যা বিদ্যুতের চাহিদা তার পুরোটাই সরবরাহ করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে আজ ঈদের দিন এবং আগামীকালও লোডশেডিংয়ের শঙ্কা নেই। এখন কোনও লোডশেডিং করা হচ্ছে না।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশে (পিজিসিবি) বলছে, ঈদের দিন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ১০ হাজার ৪৯ মেগাওয়াট নির্ধারণ করা হয়েছে। যার পুরোটাই সরবরাহ করা হবে। গত ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ১২ হাজার ৭২৯ মেগাওয়াট। এটাও পুরোটাই সরবরাহ করা হয়েছে।

এরপরও বিক্ষিপ্তভাবে বিদ্যুৎ না থাকার কিছু খবর আসছে। কিন্তু এর পুরোটাই কারিগরি কারণে বলে জানান এক কর্মকর্তা। পিজিসিবির ওই কর্মকর্তা বলেন, বিতরণ কোম্পানিগুলো আমাদের কাছে যে বিদ্যুতের চাহিদা দিয়েছে আমরা তাই উৎপাদন করে সরবরাহ করছি। এরমধ্যে কেউ আমাদের কাছে বেশি বিদ্যুতের চাহিদা দিয়েছে, আর আমরা দিতে পারছি না এমনটি নয়।

কোথাও কোথাও যদি বিদ্যুৎ না থাকে এটি উৎপাদন সংকটের কারণে নয়, বরং ওই এলাকার এটি কারিগরি ত্রুটির কারণে হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

পিজিসিবি বলছে, বুধবার দুপুর ১টায় দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১০ হাজার ৪৪৯ মেগাওয়াট। এর পুরোটাই পিডিবি সরবরহা করেছে। সরবরাহ করা বিদ্যুতের মধ্যে দেশীয় গ্যাস দিয়ে ৫ হাজার ৮৮৮ মেগাওয়াট, তরল জ্বালানি দিয়ে ৪৮৫ মেগাওয়াট, কয়লা দিয়ে ২ হাজার ৬৬০ মেগাওয়াট, জল থেকে ৩০, সৌর থেকে ৪০৫, বায়ু থেকে ১৬ উৎপাদন করা হয়েছে। এর বাইরে ভারত থেকে ভেড়ামারা দিয়ে ৯২৭ এবং ত্রিপুরা থেকে আরও ৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়েছে।

পিজিসিবি বলছে, গত ৯ এপ্রিল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মাত্র ২ ঘণ্টা চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। এর বাইরে কোনও সময়ই চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়নি।

জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন বলেন, ঈদে কোনও গ্রাহক যাতে বিদ্যুৎ নিয়ে কষ্ট না পান সে দিকে আমরা খেয়াল রেখেছি। চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ উৎপাদনের পাশাপাশি কোথাও কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তাও দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সূত্র বলছে, ঈদে বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। অফিস আদালত এবং বিপনীবিতান বন্ধ থাকায় রাজধানীর বিদ্যুৎ চাহিদা এমনিতে কমে যায়। বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে চলে যাওয়ায় গ্রামের চাহিদা বাড়ে। সঙ্গত কারণে শহরের মানুষকে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো তা এখন গ্রামে সরবরাহ করা হচ্ছে। এভাবেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বলছে, আমরা চাইলেই কয়লা এবং তরল জ্বালানিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারি। কয়লা দিয়ে এখন ৫ থেকে সাড়ে ৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু সেখানে কয়লা দিয়ে অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। কোনও কারণে বা গরমের তীব্রতা বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে পারে। তবে এ বিষয়টিকেও কোনও সংকট মনে করা হচ্ছে না।