দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল ফেসবুক কিন্তু রাজনীতিবিদদের মতো অতটা নির্বিকার নয়। তারা সব ইস্যুতেই সোচ্চার। ফেসবুকের তীব্র প্রতিবাদের মুখে বাংলাদেশে অনেক দাবি আদায় করা গেছে। তবে এবার বাজেট নিয়ে ফেসবুক অতটা সোচ্চার নয়। তা থেকে একটা প্রাথমিক ধারণা করা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট অত খারাপ হয়নি। তবে ফেসবুকের একটি কথা দিয়েই লেখাটি শুরু করছি। একজন লিখেছেন—‘টেলিফোনে কথা বলার খরচ বেড়ে যাওয়ায় এক তরুণের প্রেম ভেঙে গেলো। ব্রেকআপের দুঃখে সে সিগারেট খেতে গেলো। গিয়ে দেখলো, সিগারেটের দামও দ্বিগুণ হয়ে গেছে।’
এমন ছোটখাটো ফান ছাড়া এবারের বাজেটে তেমন বড় কোনও বদল নেই। নতুন অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনায় কোনও নতুনত্ব নেই। সরকারের আগের ১০ বছরের ধারাবাহিকতাই বজায় রেখেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতবার যা যা প্রশংসা করেছিলেন, বসিয়ে দিন; গতবার যা যা সমালোচনা করেছিলেন, বসিয়ে দিন; কোনও ভুল হবে না।
আগের বাজেটে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত দুটি রেকর্ড করেছিলেন। টানা ১০ বারসহ মোট ১২ বার বাজেট পেশের রেকর্ডটি ডন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড়ের মতো অলঙ্ঘনীয়ই থেকে যাবে। তবে আরেকটি রেকর্ড প্রতিবছরই ভাঙে। গত বছর মুহিত দিয়েছিলেন সবচেয়ে বড় বাজেট, এবার কামাল দিলেন সবচেয়ে বড় বাজেট। আগামী বছর যিনি বাজেট পেশ করবেন, এই রেকর্ডটি তার হবে।
স্বাধীনতার পর মোট ৪৮টি বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। করেছেন মোট ১২ জন ব্যক্তি। বাজেট উপস্থাপন তাই যেকোনও রাজনীতিবিদের জন্যই স্বপ্ন। আ হ ম মুস্তফা কামালেরও স্বপ্ন ছিল তিনি অর্থমন্ত্রী হবেন, বাজেট পেশ করবেন। সেই স্বপ্ন যে এভাবে দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে, কে জানতো। বাজেট পেশের নির্ধারিত দিনের দু’দিন আগে অর্থমন্ত্রী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাজেট উপস্থাপনের প্রথম সুযোগটি অর্থমন্ত্রী কাজে লাগাতে পারবেন কিনা, তা নিয়েই শঙ্কা ছিল। শঙ্কার সব মেঘ উড়িয়ে দিয়ে নির্ধারিত সময়েই সংসদে এলেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিল ডেঙ্গু তাকে বেশ কাবু করে ফেলেছে। তারপরও তিনি শুরুটা করেছিলেন।
ঘণ্টা আধেক পর আর পারলেন না। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই উপস্থাপন করলেন বাজেট। বাজেট পেশের পরদিন সংবাদ সম্মেলনেও অর্থমন্ত্রীর বদলে প্রধানমন্ত্রীই এলেন। স্বীকার করছি, বাজেট ব্যাপারটা আমি খুঁটিনাটি বুঝি না। অন্য সবার মতো কোন জিনিসের দাম বাড়লো আর কোনটার কমলো; এটা মনোযোগ দিয়ে দেখি। তবে অনেক বছর হলো, আগের মতো বাজেট ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বাজারে আগুন লেগে যাওয়ার সেই প্রবণতা আর নেই। বিস্তারিত না বুঝলেও এটুকু বুঝি, একটা সংসারের যেমন সারা বছরের একটা পরিকল্পনা থাকে, আয়-ব্যয়ের একটা হিসাব থাকে, অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষা থাকে, বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকে, চিকিৎসার জন্য খরচ বরাদ্দ থাকে। দেশেরও তেমনি। বাজেট মানে দেশের সারাবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব। এখানে সরকারের প্রায়োরিটি ঠিক করা থাকে। পরিবারের আয়- ব্যয়ের হিসাব করার সময়ও আমরা প্রায়োরিটি ঠিক করি। পারিবারিক হিসাবের সময় আমরা অনেক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করি, যেমন বেড়ানোর পরিকল্পনা থাকে হয়তো বালি, শেষ পর্যন্ত যাওয়া হয় কক্সবাজার। তেমনি দেশের বাজেটেও অনেক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা থাকে, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয় না। বাজেট প্রস্তাবনার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের অনেক ব্যবধান থাকে। সরকার যত দক্ষ, ব্যবধান তত কম। এখানেই মুন্সিয়ানা। কিন্তু সমস্যা হলো, এই মুন্সিয়ারায় ঘাটতি রয়েছে। গত ১০ বছর ধরেই বাজেট বাস্তবায়নের হার ক্রমশ কমছে। এটা রীতিমতো উদ্বেগজনক। লম্বা লম্বা কথা বললাম, স্বপ্ন দেখালাম; কিন্তু কাজের বেলায় লবডঙ্কা। এটা কোনও কাজের কথা নয়। নতুন অর্থমন্ত্রী বাজেট ঘোষণায় কোনও চমক দেখাতে না পারলেও আশা করি, বাস্তবায়নের চমক দেখাবেন, রেকর্ড গড়বেন। এখন আমাদের আয় বেড়েছে, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের সক্ষমতা বেড়েছে।
আরও অনেক মেগা প্রকল্পও আমাদের সামর্থ্যের উদাহরণ হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আয় বাড়ালেই হবে না। ঠিকমতো ব্যয় করতে পারাটাও একটা দক্ষতা। এ ব্যাপারে আমাদের দক্ষতায় এখনও অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। শেষ মুহূর্তে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের তাড়াহুড়ো দেখেই বোঝা যায়, ব্যয় করাটা আমরা এখনও ভালো করে শিখে উঠতে পারিনি। অন্য সববারের মতো এবারও আয়-ব্যয়ে বিশাল ঘাটতিসহ বাজেট দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রীর ব্যয়ের পরিকল্পনা ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। আর আয়ের আকাঙ্ক্ষা ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকা। ফলে ঘাটতি থাকছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। এই ঘাটতি মেটাতেই হাত পাততে হয় বিদেশের কাছে। অর্থমন্ত্রীর ইচ্ছা টাকা নেবেন ব্যাংক থেকেও। কিন্তু ব্যাংকের যে তারল্য সঙ্কট, তাতে সরকারকে টাকা দিতে হলে বঞ্চিত হবে বেসরকারি খাত। তবে আয়ের যে উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করছেন অর্থমন্ত্রী, সেটা বাস্তবায়ন করা সত্যি কঠিন। তাতে ঘাটতি আরও বাড়বে। আয়ের লক্ষ্য অর্জন কঠিন, তবে অসম্ভব নয়। অসম্ভব সেই স্বপ্নটিই দেখিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু আমি আপনাদের বলে রাখছি, কঠিন কাজটি কঠিনই থেকে যাবে, সম্ভব হবে না। করহার না বাড়িয়েও করজাল বিস্তৃত করা গেলে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব। রাজস্ব বোর্ড বিভিন্ন চাকরিজীবী বা প্রাতিষ্ঠানিক আয়করদাতা, যারা করজালে আটকা পড়েছেন, তাদের কাছ থেকেই নানা কায়দায় কর আদায় করে। তাদের নানাভাবে হয়রানি করে। কিন্তু এই জালের বাইরেও ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনেক রাঘব বোয়াল। তাদের ধরার চেষ্টাও নেই, ইচ্ছাও দেখা যায়নি এতদিন। বছরে আড়াই লাখ টাকা আয় করেন, এমন লোকের সংখ্যা এখন বাংলাদেশে চার কোটি ছাড়িয়ে গেছে। অথচ নিম্ন-মধ্যম আয়ের উন্নয়নশীল দেশের পথে যাত্রা শুরু করা বাংলাদেশে টিআইএন আছে মাত্র ৩৩ লাখ মানুষের। তাও এই সবাই কর দেওয়ার মতো নন। জালে আটকা পড়েছেন বলেই বাধ্য হয়ে টিআইএন করতে হয়েছে। কর দেন মাত্র ২১-২২ লাখ মানুষ। এটা হতাশাজনক। আয়কর দেওয়া ভোগান্তির নয়, কর দেওয়া দেশপ্রেমের অংশ; এই প্রচারণা সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে পারলে আরও অনেক বড় বাজেট দেওয়া সম্ভব। সম্ভব আরও অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নেরও। কিন্তু অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হয়রানির ভয়ে করজালে বাঁধা পড়তে চান না। আমার এক সহকর্মীর কথা জানি, এনবিআরের মামলার জেরে ঋণ করে তাকে তাদের দাবি মেটাতে হয়েছে। কেউ ঋণ করে কর দেবে, আর কোটি কোটি মানুষ ঘুরে বেড়াবে, এটা হলে কখনোই আপনি আয়ের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট প্রস্তাবনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে আয়করদাতার সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত করার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর করদাতার সংখ্যা ২১-২২ লাখ। সেখানে ‘দ্রুততম’ সময়ে সেটা কোটিতে উন্নীত করার আকাশ-কুসুম কল্পনা। দ্রুততম সময় মানে কতদিন অর্থমন্ত্রী সেটা বলেননি। তবুও আমি তাকে পাঁচ বছর সময় দিচ্ছি। পাকিস্তান আমলে এফসিএ পরীক্ষায় সারা পাকিস্তানে প্রথম হয়ে ‘লোটাস’ উপাধি পেয়েছিলেন আমাদের অর্থমন্ত্রী। নিশ্চয়ই তিনি হিসাবে দক্ষ। আগামী পাঁচ বছরে যদি তিনি করদাতার সংখ্যা কোটি নয়, ৫০ লাখে উন্নীত করতে পারেন, তাহলে আমি তাকে আরও একটি ‘লোটাস’ উপাধি দেওয়ার প্রস্তাব করবো। আপাতত করদাতার সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করতে পারলেই টানাটানির সংসারে সচ্ছলতা আসবে। কোটির ঘরে গেলে তো বড় লোক হয়ে যাবে।
অনেকে বলতে পারেন, এখনই তো আমরা সচ্ছল, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু বানিয়ে ফেলছি, সরকারি কর্মচারীদের বেতন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, গরিবের জন্য সামাজিক সুরক্ষার আওতা বাড়ছে, এমপিওভুক্তি চালু হচ্ছে, রেমিট্যান্সে প্রণোদনা দিচ্ছি, সবার জন্য পেনশনের ভাবনা হচ্ছে। এই চকচকে সচ্ছলতা দেখে যারা মুগ্ধ, তাদের বলছি, ঘাটতির দিকে একটু নজর দিন। কর আদায়ের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা না ধরলে এই ঘাটতি আরও বড় হতো। এই ঘাটতি কীভাবে মেটানো হয়? ঋণ করে। সোজা বাংলায় আমরা ঋণ করে ঘি খাচ্ছি। আমাদের ব্যয়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত হলো ঋণের সুদ পরিশোধ। এই হার প্রতিবছরই বাড়ছে। কারণ প্রতিবছর ঘাটতি থেকেই যায়। আর ঋণ বাড়ে, বাড়ে সুদ। বাজেট অত উচ্চাকাঙ্ক্ষী না বানিয়ে আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য রেখে বাস্তবভিত্তিক বাজেট দিলে ঋণ কমবে, সুদও কমবে। নইলে আস্তে আস্তে ঋণের সুদ আমাদের গিলে খাবে, ব্যয়ের খাতের শীর্ষে উঠে যাবে। তখন সমস্যা আরও জটিল হয়ে যাবে।
তবে সব সমস্যার সমাধান কর আদায়ের দক্ষতায়। এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন। তার আদায়ের মূলনীতি হবে, রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে, তবে সেটা করের হার বাড়িয়ে নয়, আওতা বাড়িয়ে। তার এই মূলনীতি বোঝাতে তিনি উদ্ধৃত করেছেন, ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুইয়ের অর্থমন্ত্রী জ্যা ব্যাপ্টিস্ট কোলবার্টকে, ‘রাজহাঁস থেকে পালক ওঠাও যতটা সম্ভব ততটা, তবে সাবধান রাজহাঁসটি যেন কোনোভাবেই ব্যথা না পায়।’ তিনি কথা দিয়েছেন, কোনোভাবেই করদাতার ওপর বোঝা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হবে না। ভালো ভালো কথাগুলো যেন শুধু বাজেট বক্তৃতায় লেখা না থাকে, রাজস্ব কর্মকর্তারা যেন কাউকে হয়রানি না করেন, আমার সেই সহকর্মীর মতো কাউকে যেন ঋণ করে কর দিতে না হয়। দেশপ্রেম মানে শুধু ক্রিকেটের জন্য গলা ফাটানো নয়, কর দেওয়াও দেশপ্রেমের অংশ—তেমন অবস্থা সৃষ্টি করতে পারলে এক কোটি কেন, চার কোটি মানুষই কর দিতে পারে।
চমক না থাকলেও এই বাজেটে কিছু চটক আছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে, থাকছে শেয়ারবাজারে বিশেষ প্রণোদনা। ৯ বছর পর শুরু হচ্ছে এমপিওভুক্তি, থাকছে বিশেষ বরাদ্দ, আছে সবার পেনশনের ব্যবস্থা করার আকাঙ্ক্ষা। কতটুকু কাজে আসবে জানি না, তবে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে থাকছে ২ ভাগ প্রণোদনা। এর জন্য আছে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকার বরাদ্দ। সঙ্কটে থাকা ব্যাংক খাতে নানা সংস্কারের ঘোষণা আছে প্রস্তাবিত বাজেটে, আছে ব্যাংক কমিশন প্রতিষ্ঠার ইচ্ছার কথা। এসব কথার গরু কতটা কাগজে থাকবে, কতটা গোয়ালে ঢুকবে, সেটাই দেখার বিষয়। অর্থমন্ত্রী চাইলে চটকগুলোকে চমকে বদলে নিতে পারেন।
সমাজে সবসময় বিপাকে থাকেন মধ্যবিত্তরা। উচ্চবিত্তদের পয়সার অভাব নেই, নিম্নবিত্তের পয়সার চিন্তা নেই। যত জ্বালা মধ্যবিত্তের। তারা হাত পাততে পারে না। পেটে জ্বালা নিয়ে হাসিমুখে থাকতে হয়। একজন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের আয় হয়তো রিকশাচালকের চেয়ে কম। কিন্তু তাকে সামাজিক মর্যাদা বহাল রেখে চলতে হয়। বাজেটের যত খড়্গ মধ্যবিত্তের ওপর। নিম্নবিত্তের মানুষদের বাঁচাতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় এবং ভাতার হার বাড়ানো হয়েছে। উচ্চবিত্তের জন্য সম্পদের সারচার্জে ছাড় দেওয়া হয়েছে, থাকছে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ। কিন্তু বাড়ানো হয়নি করমুক্ত আয়ের সীমা। ছোট ছোট হলেও চাপটা মধ্যবিত্তের ওপরই। হোটেলে খাওয়ার খরচ বাড়বে, বেড়াতে গিয়ে হোটেলে থাকার খরচ বাড়বে, টেলিফোনে কথা বলার খরচ বাড়বে, বাড়বে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যয়, বিদেশি ফোন সেট কেনার খরচ বাড়বে, কেনাকাটায় খরচ বাড়বে, ভ্যাটের চাপ পুরোটাই মধ্যবিত্তের ওপর। মধ্যবিত্তের অবলম্বন সঞ্চয়পত্রের লাভে ভাগ বসাচ্ছে সরকার। বাড়বে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের ব্যয়।
বাজেট হলো সরকারের আয়-ব্যয়ের হিসাব। হিসাবে দক্ষ অর্থমন্ত্রী নিশ্চয়ই দক্ষতার সঙ্গেই আমাদের জীবনের হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে দেবেন। তবুও বাজেট কিন্তু নিছক কাগুজে হিসাব-নিকাশ নয়, গাদা গাদা বইয়ের বান্ডিল নয়। বাজেট হলো সরকারের নীতির প্রতিফলন। সরকার সাধারণ মানুষের পাশে থাকুক, তাদের কল্যাণের কথা ভাবুক। মানুষকে স্বস্তি দিক। যেন সেই রিকশাচালকের মতো কেউ, যিনি মনে করেন বাজেট দিলেই জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, সাংবাদিকতার শিক্ষক সাখাওয়াত আলী খানকে বলতে না পারেন—যেই জিনিস দিলে জিনিসপত্রের দাম বাড়ে, সেই জিনিস না দিলে কী হয়?
লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ