ব্রিটেনে রাষ্ট্রীয় খরচে করোনার ‘আর্লি সেকেন্ড ওয়েভ’

মুনজের আহমদ চৌধুরীকরোনায় ৪১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর মিছিলের চাইতেও ব্রিটেনের মতো উন্নত রাষ্ট্রের কাছে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি ফেরানো অনেক জরুরি বিষয়। দেশে দেশে অর্থনীতির গ্রাফের, পুঁজিবাজারের কিছু সূচকের পেছনে ছু্টছে বেশিরভাগ দেশের সরকার।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও তার সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে, সাধারণ জনগণের জীবন ও স্বার্থরক্ষার চেয়ে ব্রিটেনের ধনিক ব্যবসায়ী শ্রেণি ও ব্যবসা রক্ষায় সরকারের আগ্রহ ও প্রচেষ্টা সবচেয়ে বেশি।
ডানপন্থী কনজারভেটিভ সরকার দেশটির ব্যবসায়ী শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা করবে, এটাই স্বাভাবিক। করোনাকালীন সময়ে ব্রিটিশ সরকার যত ধরনের গ্রান্ট, লোন সহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা দিয়েছে, তার প্রায় ৯০ শতাংশই পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। কর্মজীবী বিশেষ করে নিম্ন আয়ের চাকরিজীবী মানুষ দেশটিতে করোনায় তুমুল ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও তুলনামূলকভাবে তারা সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। সরকার মানুষের জীবনের চেয়ে অর্থনীতির সূচক রক্ষায় ছিল মনোযোগী।

করোনায় ব্রিটেনে মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত মারা গেছেন ৪১ হাজার ৬৩৭ জন মানুষ। এরপরও সরকার গত আগস্টে ব্রিটেনের রেস্টুরেন্টগুলোর ব্যবসা রক্ষার জন্য ‘Eat Out to Help Out’ নামে একটি স্কিম চালু করে। লকডাউনের মধ্যেই ভোক্তারা রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুযোগ চালু করে। আর ছাড়ের এ  অর্থ মাস শেষে রেস্টুরেন্ট মালিকদের ভর্তুকি দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। এ স্কিমটি চালুর আগ পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির ভয়ে মানুষজন তেমন একটা রেস্টুরেন্টমুখী হতেন না করোনার ভয়ে। কিন্তু, স্কিমটি চালুর পর ব্রিটেনে ঘটে অভূতপূর্ব ঘটনা। ৫০ শতাংশ ছাড়ের সুবিধা নিতে প্রতিদিন শত শত মানুষকে সামাজিক দূরত্ব ভেঙে রেস্টুরেন্টগুলোর সামনে লাইন দিয়ে ঢুকতে দেখা যায়। সরকার একই সঙ্গে দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব মানার আহ্বান জানায়। আবার রেস্টুরেন্টে মানুষকে খেতে গেলে অর্ধেক দামের সরকারি ভর্তুকির ঘোষণা দেয়। সরকার বিয়েতে অনধিক ৩০ জনের বেশি সমাগমের নির্দেশনা দিলেও রেস্টুরেন্টগুলোতে জড়ো হন সারাদিনে হাজার হাজার মানুষ। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছাড়ের সুযোগে জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী এমনকি ছোট পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠানও হচ্ছে। পুরো আগস্ট মাস জুড়ে এমন 'করোনা উৎসবে'র পর সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ব্রিটেনজুড়ে আবারও একযোগে বাড়তে থাকে করোনার সংক্রমণ। সেপ্টেম্বরে প্রথম দু'সপ্তাহে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবারের টাইমস, মেট্রো, ডেইলি টেলিগ্রাফসহ সব দৈনিকের মূল খবরে উঠে এসেছে, করোনায় প্রয়োজনীয় টেস্ট করতে ব্যর্থ ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগ। ব্রিটেনের হাসপাতালগুলো ডাক্তার ও নার্সদের করোনা টেস্ট করে কুলিয়ে উঠতে না পারায় রোগীদের পূর্ব নির্ধারিত অপারেশনগুলো বাতিল করছে।

দেশের অর্থনীতির করোনার কারণে মন্দা ও পড়তির সূচক ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও তার সরকার করোনার শুরু থেকেই ছিলেন সর্বোচ্চ সক্রিয়। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারকে ততটা সক্রিয় তো দেখা যায়নি, উল্টো পুরো প্রক্রিয়াতেই ছিল সমন্বয়হীনতা। কর্তৃপক্ষের দফায় দফায় আবেদনের পরও বিমানবন্দরগুলোতে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়নি। বিদেশ ফেরত মানুষজন হোম কোয়ারেন্টিন মেনেছেন কিনা তার কার্যকর তদারকি দৃশ্যমান ছিল না। এরপর মৃত্যুর মিছিল কিছুটা হ্রাস পেতেই সরকার দ্রুত পরিস্থিতি জোর করে স্বাভাবিক করার নীতি নেয়। পরিস্থিতি 'স্বাভাবিক' হওয়ার আগেই অনেকটা জোর করে স্বাভাবিকত্ব ফিরিয়ে আনার প্রবণতা ছিল শুরু থেকে সরকারের কর্মকাণ্ডে। সরকারি বেসরকারি কর্মজীবীদের কাজে ফিরতে বাধ্য  করার সমালোচনা নানা কারণেই অমূলক। কিন্তু, গত ৪ জুলাই থেকে সিনেমা হল, জিমনেশিয়ামসহ প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়া হয় ব্রিটেনজুড়ে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পর সংক্রমণ দ্রুত এক লাফে কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।  আমার নিজের শিশুপুত্রই জীবনের প্রথম দুদিন স্কুল করার পর জ্বর নিয়ে বাড়ি ফিরে বিছানায় কাতরাচ্ছে।

বিবিসিসহ গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, এখন করোনার টেস্ট করাতেই ব্রিটেনে মানুষজনকে ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী ল্যাবগুলো টেস্ট করতে পারছে না।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী যদিও দাবি করেছেন, করোনার টেস্ট করাতে কাউকেই ৭৫ মাইলের বেশি ভ্রমণ করতে হচ্ছে না। তবে বিবিসির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, করোনার টেস্ট করাতে বহু মানুষকে একশ মাইল দূরেও যেতে হচ্ছে। অথচ দুদিন আগেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বাগাড়ম্বরে ঘোষণা দিয়েছিলেন, প্রতিদিন এক মিনিটের মধ্যে রিপোর্টসহ এক মিলিয়ন টেস্টের। যদিও পরদিন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ও স্বাস্থ্য খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিদিন এক মিলিয়ন টেস্ট ও এক মিনিটে রিপোর্ট দেওয়ার সক্ষমতা ব্রিটেনের স্বাস্থ্য বিভাগের এই মুহূর্তে নেই।

সরকার, বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, আসছে শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ ব্রিটেনে আঘাত হানতে পারে। কিন্তু সামার শেষ না হতেই সংক্রমণ হঠাৎ কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়া ব্রিটেনে জনমনে নতুন করে তীব্র উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যাওয়ায় গত সোমবার থেকে ব্রিটেনে শিশুসহ ৬ জনের বেশি একত্রিত হওয়া নিষিদ্ধ করেছে সরকার। বাঙালি অধ্যুষিত দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম অঞ্চল বার্মিংহামে নতুন করে দেওয়া হয়েছে লকডাউন। ব্রিটেনজুড়ে দ্বিতীয় লকডাউন না দিয়ে এলাকাভিত্তিক লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অর্থনীতি সচল রাখার চেষ্টা করছে সরকার।

দুই. 

ব্রেক্সিট কার্যকর হওয়া নিয়ে ব্রিটেনের রাজনীতি, অর্থনীতিতে যে শঙ্কা ও সংশয়ের দোলাচল ছিল বছরের শুরুতে, মধ্য সেপ্টেম্বরে এসে সে সংশয় রীতিমতো সাংঘর্ষিক একটি পরিস্থিতিতে রূপ নিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির হঠাৎ গুরুতর অবনতির খবর পাশ কাটিয়ে দেশের মূল ইস্যু হিসেবে ফের উঠে এসেছে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুক্তি ও আলোচনার সিদ্ধান্ত ও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে ব্রিটেন বিষয়টিকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে অভিহিত করে উত্তর আয়ারল্যান্ড সংক্রান্ত আইন প্রণয়নে নিজেদের মতো কাজ করছে। বিশ্বজুড়ে জেগে ওঠা উগ্র রাষ্ট্রীয় জাতীয়তাবাদ দেশে দেশে নতুন বিভাজন ছড়াচ্ছে। গ্রেট ব্রিটেন ইউরোপ ছেড়ে বেরিয়েছে ঠিকই। স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড এখন ব্রিটেন ছেড়ে আলাদা দেশ চায়। তাই কতদিন গ্রেট ব্রিটেন গ্রেট থাকবে তা অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সময়ের ব্যাপার মাত্র।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কোনও চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট হলে সেক্ষেত্রে জাপান, ভারতসহ ইউরোপের বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে চায় ব্রিটেন। এক্ষেত্রে কূটনৈতিক পর্যায়ে চেষ্টা করলে বড় সুযোগ নিতে পারে বাংলাদেশও। এরই মধ্যে বেক্সিট পরবর্তী ব্রিটেনের সঙ্গে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি করতে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে জাপান। এই চুক্তির চূড়ান্ত বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ১৫.২ বিলিয়ন পাউন্ড বাড়বে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।

ইইউ ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে, নো ডিল ব্রেক্সিট ইউরোপের চেয়ে ব্রিটেনকেই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে তার দল ও এমপিদের কাছে  সহযোগিতা চেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে গতকাল তিনি সাফল্যও পেয়েছেন। সোমবার বরিস জনসনের সরকারকে ইইউর সঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তির কিছু অংশকে ওভাররাইট করার ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাবিত একটি আইন কমন্সে প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়াটি নিয়ে ব্রিটেনের অভ্যন্তরে দল মত নির্বিশেষে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বরিসের নিজ দলের  দুই পূর্বসুরি সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ডেভিড ক্যামেরন এ ইস্যুতে বরিসের বিরোধিতায় মুখর হয়েছেন। বিরোধিতা করছে লেবার পার্টিও। ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বরিসের কার্যপ্রণালি নিয়ে তার দলের মধ্যেই নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। স্লোগানমুখী, জাতীয়তাবাদের ফ্লেবার মাখানো  চটুল কথাবার্তায় বিভিন্ন বৈতরণী পার হওয়া বরিস জনসন ব্রেক্সিট ও করোনায় জটিলতর হওয়া এ পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করেন, সেটাই এখন দেখবার বিষয়।

তিন.

ব্রিটেন ও বাংলাদেশে তথা বিশ্বজুড়ে  করোনার সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতির পুরো সময়টা আমার ব্রিটেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরব তিন দেশ থেকেই দেখার সুযোগ হয়েছে। নিজের চোখে না দেখলে বিভ্রান্ত হওয়ার সুযোগ থাকতো। অবশ্য চোখে দেখা ঘটনাও সে সবসময় নির্মোহ সত্যের স্বাক্ষর দেয়, তাও নয় কিন্তু।

ব্রিটেনের বাস্তবতা আর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় বিশাল ফারাক রয়েছে। ব্রিটেন বিশ্বের মধ্যে এখনও একটি মডেল কল্যাণ রাষ্ট্র। সেই কল্যাণ রাষ্ট্রে দেশটির বিরোধী দল লেবার পার্টি, ব্রেক্সিটের গণভোট, সাধারণ নির্বাচনে জনগণের মনোভাব বুঝতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তেমনি করোনায় বরিসের কনজারভেটিভ সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় ৪১ হাজারের বেশি নাগরিকের মৃত্যুর কারণ জনিত সরকারি ব্যর্থতার প্রকৃত চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরতে বিরোধী দল ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশের আসল বিরোধী দলের সঙ্গে ব্রিটেনের বিরোধী দলের মিলের জায়গা এটুকুই।

ব্রিটেনে করোনাকালীন সময়ে অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি বিভাগের স্টাফদের ওপর যৌন ও শারীরিক হামলা, অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর নিপীড়ন ও নিগ্রহের মতো ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। করোনাকালে শপিং মলে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। দেশটিতে এ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে এবার এমনই তুঘলকি কাণ্ড ঘটেছে, শিক্ষার্থীরা করোনার মধ্যেই রাজপথে নেমেছে।

মঙ্গলবার সকালবেলা যখন এ লেখাটি লিখছি তখন ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী গণমাধ্যমের  কাছে স্বীকার করেছেন, কেয়ার হোমগুলোতে (বয়স্ক নাগরিক আলয়) ভাইরাস আবারও ছড়িয়ে পড়েছে। বাসিন্দারা ঝুঁকিতে আছেন।  ব্রিটেনে সন্তান জন্মদানের সময় বাবারা চাইলে উপস্থিত থাকতে পারেন। আমার সন্তানের জন্মের সময়ও আমি ছিলাম। মেইল অন সানডের  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার কারণে এখন আর কোনও বাবা সন্তানের জন্মের সময় মায়ের পাশে থাকতে পারছেন না। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ ৬০ জনের বেশি ব্রিটিশ এমপি এ নীতি পুনর্বিবেচনার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।

গত রবিবার সানডে টেলিগ্রাফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বরিস হিউম্যান রাইটস অ্যাক্ট সহ ইউরোপিয়ান মানবাধিকার আইনের বড় অংশই বাদ দিতে চান। এর মানে দাঁড়াবে ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনে মানুষের অধিকার বৃহত্তর পরিসরে কেড়ে নেওয়ার আয়োজন করছে রাষ্ট্র। 

গুরুতর অসুস্থতা ছাড়া ব্রিটেনে স্কুল কামাই রীতিমতো অপরাধ। আমার চার বছরের শিশুপুত্র তিনদিন স্কুলে গিয়েই জ্বর নিয়ে বিছানায় কাতরাচ্ছে।  করোনা পরিস্থিতিকে রাতারাতি জোর করে স্বাভাবিক করার যে রাষ্ট্রের চাপিয়ে দেওয়া নীতি, তার যতখানি ব্যবসায়িক, তার চেয়ে অনেক বেশি অমানবিক।

ব্রিটেনে করোনায় দুইশ জনের বেশি ব্রিটিশ বাংলাদেশি মারা গেছেন। প্রতিদিন মৃত্যুর খবর কমিউনিটিতে। কাকে বলবো এই মৃত্যু থামাও, নাগরিকদের মৃত্যুর মিছিল চারিদিকে, তবু কল্যাণ রাষ্ট্রেরও কর্ণপাত নেই।

লেখক: লন্ডনে কর্মরত সাংবাদিক ও লেখক।