আমি কেন তালেবানকে সমর্থন করি না?

মো. জাকির হোসেনদীর্ঘ দুই দশক পর তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় পুনরায় ফিরে আসার পর বিশ্বের নানা প্রান্তে তাদের পক্ষে-বিপক্ষে নানা বক্তব্য-বিতর্ক চলছে। ইয়েমেনসহ কিছু দেশে জিহাদিরা তালেবানের বিজয়ে আতশবাজি পুড়িয়েছে, সোমালিয়ায় মিষ্টি বিতরণ করেছে, দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের ইসলামপন্থী সংগঠনগুলো এ ঘটনাকে স্বাগত জানিয়েছে। বাংলাদেশের কিছু মানুষ তালেবানে এতটাই মজেছে যে, পারলে কিছু তালেবান ভাড়া করে এখনই সরকারকে বিদায় করে দেয়। 

আমি তালেবানের সমর্থক নই। আবার তালেবানের বিরুদ্ধে যারা সোচ্চার তাদের পক্ষেও নই। যেসব কারণে আমি তালেবানকে সমর্থন করতে পারছি না, তা হলো – এক. ইসলামি শরিয়া আইন বাস্তবায়নের নামে তালেবান নিজেরাই কোরআন-হাদিসের বিধান লঙ্ঘন করছে। আমি কয়েকটি উদাহরণ উল্লেখ করছি। তালেবানের ভয়ে মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে মরিয়া। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাসুল (সা.) উদ্দেশ করে বলেন, ‘আল্লাহর অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় হয়েছেন। যদি আপনি তাদের প্রতি রূঢ় ও কঠোরচিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার পাশ থেকে সরে যেত।...’ (সুরা আল ইমরান: ১৫৯) 

রূঢ় ও কঠোরচিত্ত তালেবানের নৃশংসতা, নিপীড়ন, নির্যাতনের ভয়ে মানুষ নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে যেতেও কুণ্ঠিত নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কোনও ভাই যেন তরবারি দিয়ে তার ভাইয়ের প্রতি ইঙ্গিত না করে। কেননা, তোমরা জান না, শয়তান তার মধ্যে হাত রেখে টানতে থাকে, তারপর সে জাহান্নামের গর্তে পড়ে যায়। (মুসলিম, ৬৫৬২)। 

পাঞ্জশির তালেবান যোদ্ধাদের দখলে এই খবর শোনার পর কাবুলের তালেবানেরা ফাঁকা গুলিবর্ষণের মাধ্যমে বিজয় উদযাপন করে। এতে অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪১ জন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘…যে ব্যক্তি নরহত্যা অথবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করার দণ্ডদান উদ্দেশ্য ছাড়া কাউকে হত্যা করে, সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করলো। আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করলো ।… (সুরা মায়েদাহ: ৩২)। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে: ‘দুনিয়া ধ্বংস করার চেয়েও আল্লাহর কাছে ঘৃণ্যতর কাজ হলো মানুষ হত্যা করা।’ (তিরমিযি, ১৩৯৫)। অন্য এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যদি আকাশ ও পৃথিবীর সবাই মিলেও কোন মু’মিন হত্যায় অংশগ্রহণ করে তবু আল্লাহ তা’আলা তাদের সবাইকে মুখ উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন।’(তিরমিযি, ১৩৯৮)। 

আল্লাহ বলেন, “প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মের জন্য দায়ী থাকবে। কেউ অন্যের (পাপের) বোঝা বহন করবে না।…।”(সুরা আনআম: ১৬৪)। তালেবানদের প্রতিপক্ষকে সহায়তা করার অপরাধে অভিযুক্ত আফগান নাগরিককে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের হত্যা করেছে তালেবান, যা কোরআনের বিধানের লঙ্ঘন। পাঞ্জশিরে আফগানিস্তানের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহর ভাই রুহুল্লাহ আজিজীকে হত্যার পর পরিবারকে তার দেহ দাফন করতে দেয়নি তালেবান। তারা বলেছে, তার শরীর পচা উচিত। অথচ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের ছয়টি হক আছে।’ এর একটি হলো, ‘মৃত্যুবরণ করলে তার জানাজায় উপস্থিত হওয়া।’ (মুসলিম, ৪০২৩) শান্তি, সম্প্রীতি, ক্ষমা, সহনশীলতা ও ভালোবাসার নাম ইসলাম। উগ্রতা, বিদ্বেষ, প্রতিহিংসা, প্রতিশোধপরায়ণতা, সাম্প্রদায়িকতা ইসলাম নয়। অবিশ্বাসীরা রাসুল (সা.)-কে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে, নামাজরত অবস্থায় তাঁর মাথায় উটের পচা-গলিত নাড়িভুঁড়ি ও আবর্জনা নিক্ষেপ করেছে, তাঁর চলার পথে কাঁটা বিছিয়ে রেখেছে, তাঁকে পাথর দিয়ে আঘাত করেছে। মাতৃভূমি ত্যাগ করতে যারা বাধ্য করেছিল, মুসলমানদের ঘরবাড়ি থেকে যারা বিতাড়ন করেছে, লুটপাট করেছে, মুসলমানদের সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে, রাসুল (সা.)-এর চাচা হামজা (রা.)-এর কলিজা যে চিবিয়েছে, উহুদের যুদ্ধে শহীদ সাহাবাগণের মৃতদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে যারা খণ্ড-বিখণ্ড-বিকৃত করেছে, মক্কা বিজয়ের পর হাতের কাছে পেয়েও তিনি তাদের কোনও প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। বরং সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে সবাইকে উদারতা ও ক্ষমার চাদরে ঢেকে দিয়ে বলেছিলেন, আজ তোমাদের ওপর আমার কোনও অভিযোগ নেই, তোমরা মুক্ত। 

চাচা আবু তালিব ও স্ত্রী খাদিজার (রা.) মৃত্যুর পর কুরাইশরা রাসুলের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতনের মাত্রা আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছিল। মক্কার মাটিতে তিনি আর টিকতেই পারছিলেন না। তিনি তায়েফবাসীর কাছে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ ১০ দিন পর্যন্ত তিনি ঘুরে ঘুরে ইসলামের আহ্বান জানাতে থাকেন। কিন্তু তারা তাঁর কথায় কোনোই কর্ণপাত করলো না; বরং তারা রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করছিল। অবশেষে তারা সন্ত্রাসী দুষ্ট যুবকদের লেলিয়ে দিলো। যুবকরা রাসুল (সা.)-কে পাথরের আঘাতে জর্জরিত করে তুললো। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁর জীবন-আশঙ্কা দেখা দিলো। মহানুভব রাসুল (সা.) তায়েফবাসীদের এহেন আচরণ সত্ত্বেও আল্লাহর কাছে তাদের জন্য ক্ষমা ও করুণা প্রার্থনা করেন। 

অথচ তালেবান কাবুল দখলের পর প্রতিশোধ নিতে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে, সাংবাদিকদের পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে। 

দুই. ইসলামে জিহাদ ইবাদত। ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্ত হলো উপার্জন হারাম হতে পারবে না। একাধিক রিপোর্টে প্রকাশ, তালেবান বেশিরভাগ অর্থ সংগ্রহ করেছে মাদক বিক্রি, চাঁদাবাজি ও অপহরণের পর মুক্তিপণ থেকে। স্পেশাল ইন্সপেক্টর জেনারেল ফর আফগান রিকন্সট্রাকশন (সিগার)-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, মাদক ব্যবসা এবং চোরাচালানের মাধ্যমে বছরে ১০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে তালেবান। রিপোর্ট অনুযায়ী, তালেবানের বার্ষিক রাজস্বের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এ খাত থেকে। ইসলামে এর সবই হারাম। 

তিন. শরিয়া আইনের বিধান রাতারাতি কার্যকর করতে চায় তালেবান। শরীরে জটিল অসুখ হলেও সেরে ওঠতে সময় লাগে। আর অন্তরের অসুখ তো ভয়ংকর, তা দূর করতে সময় দরকার। শত শত বছর ধরে মানুষ ইসলাম থেকে দূরে সরে গেছে। বহু শতাব্দী ধরে ইহুদি, নাসারা, মুশরিক, অবিশ্বাসীদের জীবনযাপন, সভ্যতা-সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে যে অন্তর, তা কী চাবুক মেরে তাৎক্ষণিক পরিবর্তন করা যাবে? কোরআন-হাদিসে নবী-রাসুলদের ঘটনা সাক্ষ্য দেয়, তাঁরা যুগ যুগ ধরে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করেছেন। তা সত্ত্বেও কোনও কোনও নবী-রাসুলের আহ্বানে হাতে গোনা কয়েকজন সাড়া দিয়েছেন। এমনকি কোনও নবীর আহ্বানে একজনও সাড়া দেননি। 

আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত: একদিন রাসুল (সা.) বললেন, ‘আমার কাছে সব উম্মতের লোকদের পেশ করা হলো। আমি দেখলাম, কোনও নবীর সঙ্গে মাত্র সামান্য কয়জন (৩ থেকে ৭ জন অনুসারী) লোক রয়েছে। কোনও নবীর সঙ্গে একজন অথবা দুই জন লোক রয়েছে। কোনও নবীকে দেখলাম তাঁর সঙ্গে কেউই নেই!...।’ (বুখারি, ৫৭০৫; ৩৪১০; তিরমিযি, ২৪৪৬; মুসনাদে আহমাদ, ২৪৪৪)। 
মক্কায় আল্লাহর আইন চালু করতে না পেরে রাসুল (সা.) মদিনায় গিয়ে সফল হন। মদিনার সংহতির চিন্তা করে রাসুল (সা.) সেখানকার অধিবাসীদের নিয়ে তথা পৌত্তলিক, ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং মুসলিমদের মধ্যে এক লিখিত সনদ বা চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এ সনদকেই ‘মদিনা সনদ’ বলা হয়। মদিনা সনদে বলা হয়, স্বাক্ষরকারী ইহুদি, খ্রিষ্টান, পৌত্তলিক ও মুসলিমরা মদিনা রাষ্ট্রে সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবেন এবং একটি জাতি (উম্মাহ) গঠন করবেন। সব শ্রেণির লোক নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবেন। 

চার. তালেবান নারী শিক্ষা নিয়ে গড়িমসি করছে। নারীরা শিক্ষা বঞ্চিত হলে নারীদের জন্য নারী ডাক্তার, নারী শিক্ষক কীভাবে তৈরি হবে? পর্দা বজায় রেখে শিক্ষাগ্রহণ কি ইসলামে নিষিদ্ধ? 

পাঁচ. জোর করে চাপিয়ে দিয়ে, ভয় দেখিয়ে ইসলামি শাসন কায়েম করতে চায় তালেবান। রাসুল (সা.) যখন পৃথিবীতে আসেন তখন জাহেলি তথা অন্ধকারের যুগ ছিল, তাগুতের শাসন ছিল। রাসুল (সা.) কি এই অবস্থা পরিবর্তনের জন্য জোর করে, নেতিবাচক পন্থায়, নৈরাজ্য ও ধ্বংসাত্মক পন্থা অবলম্বন করেছিলেন, না সুন্দর ব্যবহার, উত্তম চরিত্র, আল্লাহর পথে আহ্বান, আত্মগঠন ও সমাজ-সংস্কারের মাধ্যমে পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন? তালেবান তাহলে কার অনুসরণ করছে? আল্লাহর আইন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কাজ করতে হলে তা শুধু আল্লাহর কোরআন ও রাসুল (সা.)-এর দেখানো পথেই করতে হবে। ইসলামের নামে কোনও শায়খের খামখেয়ালিপনা কিংবা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শবিরোধী পন্থায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। পিটিয়ে, আঘাত করে, ভয় দেখিয়ে, নিষ্ঠুরতা বা নৃশংসতার মাধ্যমে নয়, বরং দাওয়াতের ভিত্তিতে মদিনার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ ইসলামি জীবন ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিলেন, এবং রাসুল (সা.)-কে তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। 

আল্লাহ তা’আলা রাসুল (সা.)-কে বলেন: “আপনি মানুষকে দাওয়াত দিন আপনার রবের পথে হিকমত ও উত্তম কথার মাধ্যমে এবং তাদের সঙ্গে তর্ক করুন উত্তম পদ্ধতিতে।…” (সুরা নাহল: আয়াত ১২৫)। উত্তম তর্ক হচ্ছে- কোমলতা ও দয়ার মাধ্যমে, ইসলামের বুনিয়াদি দিকগুলো তুলে ধরা। অবশ্যই নম্রতার সঙ্গে মানুষকে আল্লাহর পথে দাওয়াত দিতে হবে। এমনকি মহান রব মুসা (আ.) ও তাঁর ভ্রাতা হারুন (আ.)-কে পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম অত্যাচারী শাসক নিজেকে আল্লাহ বলে দাবিকারী ফিরাউনকে পর্যন্ত নম্রতার সঙ্গে দাওয়াত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “তোমরা উভয়ে ফিরাউনের নিকট যাও, সে তো সীমা লঙ্ঘন করেছে। তোমরা তার সঙ্গে নম্র ভাষায় কথা বলবে, হয়তো সে উপদেশ গ্রহণ করবে অথবা ভয় করবে।” (সুরা ত্বহা: আয়াত ৪৩-৪৪)। 

বাস্তব জীবনে কোনও কিছুর ভিত তৈরি হয়ে পূর্ণতা পেতে যেমন সময়, পরিশ্রম ও ধৈর্যের প্রয়োজন তেমনি মানুষের অন্তরগুলো গড়ে তুলতে এবং সেগুলোকে সত্যের পথে নিয়ে আসতে সময়, ধৈর্য ও ত্যাগের প্রয়োজন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘…যাকে মানুষ তাদের জান ও মালের জন্য নিরাপদ মনে করে সে-ই প্রকৃত মুমিন।’ (তিরমিযি,২৫৫১; নাসাঈ, ৪৯০৯)। অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘কেবল হতভাগ্য ব্যক্তির হৃদয় থেকেই দয়া তুলে নেওয়া হয়।’ (তিরমিযি, ১৯২৩)। 

ছয়. চীন সরকার উইঘুর মুসলিমদের নামাজ-রোজা পালনে বাধা দিচ্ছে, হারাম খাদ্যগ্রহণে বাধ্য করাসহ নিষ্ঠুর নির্যাতন করছে। অথচ তালেবান তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলছে। ইসলামে সব অমুসলিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিষিদ্ধ নয়। এমন অমুসলিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব বা মেলামেশা করা যাবে, যে ইসলামকে কটাক্ষ করে না, উপহাস করে না, কটূক্তি করে না, মুসলিমকে দ্বীন থেকে দূরে সরিয়ে নিতে চায় না। কিন্তু তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবে না যে ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলে, কাজ করে। মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন, “…আল্লাহ কেবল তাদের সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করেন, যারা ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে, তোমাদের দেশ থেকে বহিষ্কৃত করেছে এবং বহিষ্কারকার্যে সহায়তা করেছে। যারা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করে তারাই জালেম।” (সুরা মুমতাহিনা: ৮-৯)।

তালেবান শরিয়া আইন চালুর কথা বলছে। মুসলমান হিসেবে আমার অবশ্যই এর বিরোধিতা করা উচিত নয়। পবিত্র কোরআনের সুরা মায়েদার ৪৪নং আয়াতে বলা হয়েছে, “আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই কাফির।” পরবর্তী ৪৫নং আয়াতে বলা হয়েছে, “আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই জালিম।” এর পরবর্তী ৪৭নং আয়াতে বলা হয়েছে, “আর আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী যারা বিধান দেয় না, তারাই ফাসিক (পাপাচারী)।” ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, ‘যে কেউ আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তা অস্বীকার করবে সে অবশ্যই কাফের হয়ে যাবে। আর যে কেউ তা স্বীকার করবে, কিন্তু বাস্তবায়ন করে তদানুসারে বিধান দিবে না সে জালেম ও ফাসেক হবে’ (তাবারি)। 

তালেবান মুখে শরিয়া আইনের কথা বললেও তাদের অনেক কর্মকাণ্ড কেবল ইসলামের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণই নয়, কিছু ক্ষেত্রে তা কোরআন-হাদিসের বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। শরিয়ার বিধান চালুর নামে কোনও শায়খের খামখেয়ালিপনা কিংবা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শবিরোধী পন্থা সমর্থনযোগ্য নয়।

লেখক: অধ্যাপক, আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

ই-মেইল: zhossain1965@gmail.com