সম্প্রতি আমরা একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও যুগোপযোগী এনডিসি জমা দিয়েছি। বাংলাদেশে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বিস্তৃত সৌরশক্তি কার্যক্রম। আমরা আশা করি, ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে আমাদের ৪০ শতাংশ জ্বালানি থাকবে। ইতোমধ্যে আমরা বৈদেশিক বিনিয়োগের ১২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করেছি। আমরা ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। জলবায়ুর প্রভাব সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। কারণ, এরইমধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা তথা মিয়ানমারের বাসিন্দাকে তাদের দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে।
ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম (সিভিএফ) ও ভি২০-এর চেয়ার হিসেবে, আমরা জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ ৪৮টি দেশের স্বার্থ প্রচার করছি। গ্লোবাল সেন্টার অব অ্যাডাপটেশনের ঢাকার দক্ষিণ এশিয়া অফিসের মাধ্যমে আমরা আঞ্চলিকভাবে সর্বোত্তম অনুশীলন এবং অভিযোজন অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে চলেছি। সিভিএফের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ একটি জরুরি জলবায়ু চুক্তির চেষ্টাও করছে।
নিচের চারটি বিষয় তুলে ধরার মাধ্যমে আমি আমার বক্তব্য শেষ করছি—
প্রথমত, প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলোকে এনডিসি নিয়ে উচ্চকাঙ্ক্ষী হতে হবে এবং সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, উন্নত দেশগুলোর উচিত অভিযোজন এবং প্রশমনের মধ্যে ৫০:৫০ ভারসাম্য রেখে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করা।
তৃতীয়ত, উন্নত দেশগুলোর উচিত সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি বিতরণ করা। সিভিএফ দেশগুলোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তাও বিবেচনা করা উচিত।
চতুর্থত, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, বন্যা ও খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা ভাগ করে নেওয়াসহ লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টিও আলোচনায় আনতে হবে।
লেখক: প্রধানমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ।
(স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে কপ২৬ অনুষ্ঠানে ১ নভেম্বর ‘অ্যাকশন অ্যান্ড সলিডারিটি-ক্রিটিক্যাল ডিকেড’ শীর্ষক সভায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ)