একটা গল্প দিয়ে আজকের লেখাটা শুরু করি। গল্পটা ঠিক গল্প নয়, মানে এটা গল্প হলেও সত্য। উনিশ শতকের শেষে পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপকভাবে সিগারেটের উৎপাদন শুরু হয়। তামাক সেবন এবং তখনকার সমাজে প্রচলিত ধূমপান পদ্ধতির তুলনায়, সিগারেট ছিল পরিষ্কার, ব্যবহারে সহজ, আধুনিক এবং বেশ সস্তা।
যাহোক, যদিও ওই শতাব্দীর শুরুতে পুরুষদের মধ্যে সিগারেট জনপ্রিয় হতে শুরু করে, একই সময়ে সিগারেটের যথেষ্ট বিরোধিতাও ছিল। তখনও নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই ধূমপানকে একটি বাজে অভ্যাস হিসেবে দেখা হতো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তামাকবিরোধী আন্দোলনে নারী গ্রুপগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তামাক বা টোব্যাকো কোম্পানিগুলো তাদের উৎপাদিত সিগারেটের বিক্রি বাড়াতে এবং তাদের নিজস্ব বার্তা ছড়িয়ে দিতে এ সময় কৌশলী মার্কেটিং পলিসি ব্যবহার করা শুরু করে। প্রায়ই টোব্যাকো কোম্পানিগুলোর বিজ্ঞাপন, পোস্টার এবং কার্ডের ওপর সুন্দরী তরুণীদের ছবি প্রচার করা হতো, তবে এই প্রচারণার ভূমিকা ছিল মহিলা গ্রাহকদের পরিবর্তে পুরুষদের সিগারেট কিনতে প্রলুব্ধ করা।
কৌশলী মার্কেটিং পলিসি আমেরিকার পুরুষদের মধ্যে সিগারেটের বিক্রি বাড়াতে পারলেও টোব্যাকো কোম্পানিগুলো একসময় লক্ষ করে যে পাবলিক প্লেসে নারীরা তখনও সিগারেট সেবন করে না। ব্যবসায়িক দিক থেকে যার মানে হলো, মূল জনসংখ্যার প্রায় ৫০ ভাগ তখনও তাদের কনজিউমার বা ভোক্তা নয়। তাই, টোব্যাকো কোম্পানিগুলো আবারও নতুন কৌশলী মার্কেটিং পলিসির আশ্রয় নেয়। তাদের মার্কেটিং পলিসির মূল ফোকাস পয়েন্ট ছিল নারীদের মধ্যে সিগারেট সেবনকে কেবল স্টাইলিশ এবং সম্মানজনক নয়, বরং তার সঙ্গে সিগারেটকে কেন্দ্র করে নতুন একটা সামাজিক ইমেজ তৈরি করা।
প্রথম ক্যাম্পেইনটি ছিল লাকি স্ট্রাইক নামক সিগারেটের, যেখানে আমেরিকান নারীদের ওয়েইস্ট লাইন বা কোমরের মাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সিগারেটের প্যাকেটের ওপর প্রচার করা হয়- “Reach for Lucky instead of a sweet".
মেয়েদের ওজন নিয়ন্ত্রণকে নাকের ডগায় মুলোর মতো ঝুলিয়ে দিয়ে নারীদের মধ্যে সিগারেটকে জনপ্রিয় করা এই ক্যাম্পেইনটি অত্যন্ত কার্যকর ছিল এবং লাকি স্ট্রাইক সিগারেটের মার্কেট শেয়ার ২০০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছিল রাতারাতি।
সিগারেট কোম্পানিগুলোর পরের ক্যাম্পেইনটি তাই আরও ইন্টারেস্টিং ছিল। গ্রেট আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি তাদের মার্কেটিংয়ের অংশ হিসাবে কিছু নারীকে ১৯২৯ সালের নিউ ইয়র্কের রাস্তায় ইস্টার সানডের প্যারেডে সিগারেট হাতে অংশগ্রহণ করার জন্য ভাড়া করে। এই ক্যাম্পেইনটির তারা নাম দেয়- “torches of freedom” বা স্বাধীনতার মশাল। নিউ ইয়র্কের জনাকীর্ণ রাস্তায় সবার সামনে ধূমপান করা নারীদের হাতের সিগারেটকে তারা আখ্যা দেয় ‘নারী স্বাধীনতার মশাল’ নামে।
যদিও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন নারীরা যখন যুদ্ধে যাওয়া পুরুষদের চাকরি, ব্যবসা মানে বাড়ির বাইরের কাজগুলোর ভার তুলে নেয়, এই সময়টা নারীমুক্তি এবং নারীদের মধ্যে ধূমপানের বিস্তার উভয় ক্ষেত্রেই টার্নিং পয়েন্ট ছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু এ প্রশ্ন থেকেই যায়, কখনও নারীর শারীরিক সৌন্দর্য, আবার কখনও নারী স্বাধীনতাকে জিম্মি করে আমেরিকার টোব্যাকো কোম্পানিগুলোর এ ধরনের কৌশলী বিজ্ঞাপনগুলো ছাড়া নারীদের মধ্যে সিগারেট সেবন এতটা ছড়িয়ে পড়তো কিনা।
চটকদার বিজ্ঞাপন কিংবা কৌশলী মার্কেটিং পলিসি সমাজে নতুন কোনও মেসেজ ছড়িয়ে দিতে বা পণ্য বিক্রিতে বরাবরই শতভাগ সফল। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে বড় বড় কোম্পানি বা করপোরেট হাউজগুলোর Corporate social responsibility বা সামাজিক দায়বদ্ধতার নামে প্রচার করা বিজ্ঞাপনের আড়ালে নিজেদের প্রচার এবং প্রসার ঘটানো আর পণ্য বা সেবা বিক্রি আসলে মূল কথা। চটকদার বিজ্ঞাপনী ট্যাগ-লাইন আর ক্যাপশনগুলোর পেছনে সমসাময়িক সমাজের মনোভাবটা ধরতে পারা খুবই জরুরি পণ্য বিক্রির জন্য।
এরকমই একটা বিজ্ঞাপন নিয়ে বাংলাদেশে অনলাইন আর অফলাইনে কলরব উঠেছে সম্প্রতি। গত কয়েক দিনে গ্রামীণফোন আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে উদ্দেশ করে একজন নারী উদ্যোক্তার নাম এবং ছবিসহ একটি বিজ্ঞাপন প্রচার করছে, যার ট্যাগ লাইন হলো- ঘর সামলাই, ব্যবসাও সামলাই।
আপাত দৃষ্টিতে সাধারণের কাছে মনে হতে পারে, এই ট্যাগ লাইন নারীর ক্ষমতায়নকে ত্বরান্বিত করবে। মনে হতে পারে এটা আজকের দিনের সমাজের ছবি, যেখানে কেবল ঘর-সংসার সামলানো না, বরং নারী আজ চাকরি করছে, ব্যবসা করছে এমনকি উদ্যোক্তাও হচ্ছে গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনে অংশ নেওয়া এই নারীর মতো। তাহলে কলরব কেন? এ ধরনের বিজ্ঞাপনের সমস্যা কোথায়?
এই ধরনের বিজ্ঞাপনে একটা সমস্যা আছে, যা উপেক্ষা করার বা আর অন্য কোনোভাবেই ব্যাখ্যা করার সুযোগ নেই। আর সেই সমস্যাটা হলো যখন বিজ্ঞাপনের আদর্শ নারী ঘর, সংসার, বাচ্চা, চাকরি, ব্যবসা- সব সামলাচ্ছে। কিন্তু আদর্শ পুরুষকে কখনও সব সামলাতে হয় না। সাকিব আল হাসানকে কখনও পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিতে দেখিনি যে তাকে সংসার সামলে বা বাচ্চাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে তারপর খেলার মাঠে নেমে চার-ছক্কা পিটাতে হয়। কিন্তু ওদিকে ক্রিকেটার জাহানারার এশিয়া কাপ জেতার পর পত্রিকার সাক্ষাৎকার হয়, জাহানারা ভালো বিরিয়ানিও রান্না করতে পারেন।
সব সামলানো “অলরাউন্ডার নারী” আসলে একটা মিথ। এই মিথকে জোর করে নারীর ওপর অবশ্য কর্তব্য হিসাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এরকম বিজ্ঞাপনী প্রচারণায়। আমি নারী, সব পারি- ট্যাগ লাইনের নারী আসলে সব না পারা বা সবকিছু করতে না চাওয়া অন্য নারীদের পথকে সমস্যাসংকুল করে তোলে। যেমনটা মাতৃত্বকে দেখা হয় নারীর সবচেয়ে গ্লোরিফাইড ফর্ম হিসাবে; তখন যে নারী সন্তান জন্ম দিতে অপারগ কিংবা অনিচ্ছুক, তাকে হেয় করা সমাজের জন্য সহজ হয়। যখন মেয়েরা মায়ের জাত, তাই তাদের সম্মান দেখানোর কথা বলা হয়, তখন আদতে যে নারীরা মা নয় তাদের সম্মান দেখানোর প্রয়োজনীয়তাকে অস্বীকার করা হয়।
আরেকবার ফিরে যাই নারী দিবসকে কেন্দ্র করে গ্রামীণফোনের বিজ্ঞাপনের আদর্শ নারী বিষয়ে। গ্রামীণফোনের চোখে ঘর সামলাই, ব্যবসাও সামলাই এই আদর্শ নারী কিন্তু সমাজের বলবৎ পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকে তোয়াজ করে সঙ্গে একটুখানি নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কথা বলে। কঠোর সামাজিক আর ধার্মিক অনুশাসনের এই দেশে এখনও নারীর প্রাথমিক স্থান ঘর। শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, উঁচু তলার এলিট, মধ্যবিত্ত চাকুরে কিংবা সমাজের নিম্নবিত্ত দিনমজুর আর কাজের বুয়া- সব নারীকেই ঘর সামলানো পরীক্ষায় পাস করতেই হয়। সমাজের প্রিভিলেজড বা সুবিধাপ্রাপ্ত নারীকে প্রথমে ঘর, সংসার, রান্না, বাচ্চা সামলে তবেই তার বাইরের জগতে কিছুটা পদার্পণকে সামাজিকভাবে মেনে নেওয়া হয়। গ্রামীণফোন সমাজের এই নার্ভকে যে ধরতে পেরেছে তার প্রমাণ নারী দিবসে তাদের ঘর সামলানো-ব্যবসা সামলানো আদর্শ নারীর কৌশলী বিজ্ঞাপন।
লেখার শুরুতে উল্লেখ করা আমেরিকার টোব্যাকো কোম্পানিগুলোর মার্কেটিং পলিসির মতোই গ্রামীণফোন নারী দিবসকে নারী-পুরুষ সবার মাঝেই গ্রহণযোগ্য করতে চাইছে তাদের পুঁজিবাদী ব্যবসায়িক প্রসারের জন্যই। কেবল গ্রামীণফোন কেন, বাংলাদেশে গত বিশ বছরে ৮ মার্চের নারী দিবসের মূল প্রচারণা করপোরেট জায়ান্ট আর কিছু এনজিওর।
ভ্যালেন্টাইনস ডেসহ অন্য সব দিবসের মতো নারী দিবসও এখন সব স্পেশাল অফারে ভরপুর একটি দিন। অত্যন্ত দুঃখজনক যে শোক দিবস বা শহীদ দিবসকেও আমরা উদযাপন করি বিভিন্ন স্পেশাল অফার দিয়ে। কিন্তু অন্য সব দিবসের ভোক্তা বা ক্রেতা যেহেতু নারী-পুরুষ উভয়ই, তাই করপোরেট হাউজের ব্যবসা সফল সেখানে। নারী দিবস হয়তো এখন ততটা ব্যবসা-সফল দিন নয়। কারণ, এদিনের মূল ভোক্তা কেবল নারী। আর যেহেতু কঠোর পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আমাদের বসবাস, তাই জন্মসূত্রে সুবিধাপ্রাপ্ত পুরুষ কেবল নারীর সমঅধিকার আর ক্ষমতায়নের দাবিতে করা একটি দিন উদযাপনে ততটা আগ্রহী নয়, যতটা তারা ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে সঙ্গীকে আর মাদার্স ডে-তে মাকে উপহার দিতে ইচ্ছুক। মা, স্ত্রী বা প্রেমিকা এমনকি দেবীরূপে নারী পুরুষের কাছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে গ্রহণযোগ্য এবং পূজনীয়। বিভিন্ন রূপে পুরুষের জন্য করা নারীর স্যাক্রিফাইস বেশিরভাগ পুরুষ এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজের চোখে বরাবরই প্রশংসনীয়। নারীর জন্য সমাজের নির্ধারণ করে দেওয়া ঘর সামলানো- নারী পুরুষের জন্য বাইরের জগতে সমস্যা সৃষ্টি করে না। তাই যেন গ্রামীণফোনের ঘর সামলাই, ব্যবসাও সামলাই বিজ্ঞাপন হলো পুরুষতন্ত্রের পারমিশন নিয়ে প্রথমে ঘর সামলে তারপর বাইরের জগতে নারীর পদার্পণের কথা বলে। এই ঘর-বাইর উভয় সামলানো নারী তখন কেবল একজন স্বতন্ত্র নারী নন যে কেবল তার জীবনের গল্প বলছেন, বরং বহুল প্রচারিত বিজ্ঞাপনের এই নারী তখন সব নারীর জন্য আইডল হয়ে ওঠে। অথচ কখনও কোনও পুরুষকে বিজ্ঞাপনে আসতে হয় না তার সাফল্যের কথা বলার শুরুতে ঘর সামলাই বলে সমাজের মন-রক্ষা করতে।
আমরা সবাই জানি কোনও মেয়ে ঘর সামলায় আর সঙ্গে ব্যবসাও সামলায়- এই কথার পেছনের কনোটেশনটা কী। আমার ভীষণ রকম চোখে লেগেছে বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইনের প্রথম অংশ ঘর সামলানো আর পরের অংশ ব্যবসাও সামলাই- এই ও-তে। মানে দাঁড়ালো, আদর্শ নারীর প্রাথমিক দায়িত্ব সংসার, আর বাকি সব আসে তারপর। কোনও মেয়ে সামনের দিনে ঘর সামলাতে না চাইলে বা কেবল ব্যবসা, চাকরি, ক্যারিয়ারের কথা বললে তাকে বিজ্ঞাপনের এই উদ্যোক্তা মেয়েটির উদাহরণ দেওয়া হবে- সে ঘর সামলে তারপর ব্যবসাও সামলাতে পারলে তুমি কেন পারো না?
এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো - Embrace Equity. আমরা লক্ষ করি এখানে সমতার কথা বলা হয়নি বরং সাম্য এবং ন্যায়ের কথা বলা হয়েছে। কোনও সুপারম্যান বা সুপার ওম্যান নারী ও পুরুষ আমাদের আশপাশে থাকতেই পারে, যে বা যারা ঘর ও বাইর দুটোই সামলায়। কিন্তু তারা উদাহরণ নন; বরং তারা এক্সেপশন। তাদের মতো নারী বা পুরুষকে বিজ্ঞাপনের মডেল করলে তা বরং অন্য সবার জন্য চাপ সৃষ্টি করাই হয়। আর সমাজ যে নারীর ওপর চাপ সৃষ্টিতে বরাবরই পটু তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
সংসার সামলানো, রান্না করা, সন্তান পালনের মতো ঘরের কাজে নারী-পুরুষের অংশগ্রহণের স্ট্যাটিসটিকসটা বাংলাদেশে দেখতে পাওয়া যায় না। কারণ, এখনও প্রায় সব পরিবারেই সংসার সামলানো কেবল নারীর কাজ। তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্যাটিসটিকসটা জানাই সবাইকে। ২০২২ সালে করা পরিসংখ্যান বলে, শতকরা ৬৫ ভাগ ঘরের কাজ যুক্তরাজ্যের নারীদেরই করতে হয়। যদিও সেখানে প্রায় সব পুরুষ-নারী চাকরি বা ব্যবসা মানে অর্থ উপার্জনকারী বাইরের কাজ করে, তবু চাকরি থেকে বাড়ি ফিরে ঘর সামলানোর মূল দায়িত্ব ৯৩ শতাংশ ব্রিটিশ পরিবারে এখনও নারীর। পরিসংখ্যান বলছে, ব্রিটিশ সমাজে বিগত দিনের চেয়ে সংসারের কাজে পুরুষের অংশগ্রহণ বেড়েছে অনেকটাই, তবে তা এখনও কেবল সাহায্যকারী হিসাবে।
বাইরের কাজ থেকে বাড়িতে ফিরে নারীর ঘরের কাজ সামলানোকে ব্রিটিশরা নামকরণ করছে সেকেন্ড শিফট হিসাবে। মানে পুরুষ যখন কাজ থেকে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে বিশ্রাম করে, তখন নারীকে ঘর সামলানোর নামে দ্বিতীয় শিফটের কাজ শুরু করতে হয়। এই যদি হয় পশ্চিমের অবস্থা, তাহলে আমাদের মতো সমাজের চিত্রায়ণ করতে বেগ পেতে হয় না মোটেই।
দেশে-বিদেশের নারীর এই চিত্রপটের পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব কিংবা আদৌ সম্ভব কিনা? এর উত্তরে কিছুটা হতাশ গলায় বলবো, বহু দূর যেতে হবে, এখনও পথের অনেক রয়েছে বাকি। হয়তো সমতায়ন, সমঅধিকারের দাবিতে আরও অনেকটা বছর আমাদের কাজ করে যেতে হবে। পরিবারে কন্যাশিশুর শিক্ষার ওপর জোর দেওয়ার পাশাপাশি ছেলে সন্তানকেও কেবল পুরুষ নয়, বরং মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিতে হবে। সম্পত্তিতে ছেলে এবং মেয়ের সমান অংশ বুঝিয়ে দিতে হবে। সমতা আর সাম্য প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব কেবল রাষ্ট্র আর সরকারের ওপর চাপিয়ে দিয়ে বসে থাকলে চলবে না। আর করপোরেট জায়ান্টদের সেই দায়িত্ব দিলে দিন শেষে কেবল হা-হুতাশ করতে হবে- বুলবুলিতে ধান খেয়েছে, খাজনা দেবো কীসে?
লেখক: আইনজীবী এবং হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্ট
e-mail: Farzana.shumona@yahoo.co.uk