মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ: কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ  সীমাবদ্ধতা

পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে সংগঠিত এবং প্রতিষ্ঠিত আমলাতন্ত্র রয়েছে। পদ্ধতিগত ভিন্নতা থাকলেও সাধারণত আমলাতন্ত্রের মাধ্যমেই সরকারে মন্ত্রণালয় পরিচালিত হয়। প্রায় সকল দেশেই মন্ত্রণালয়গুলোতে দুই ধরনের নেতৃত্ব বিদ্যমান – রাজনৈতিক নেতৃত্ব: মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী; প্রশাসনিক নেতৃত্ব: সচিব/ স্থায়ী সচিব। সরকারি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ স্তর হিসেবে সচিব বা স্থায়ী সচিবের পদটি একটি দেশের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। সচিবদের মূল দায়িত্ব হলো সরকারের নীতি নির্ধারণী প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব প্রদান, কার্যক্রমের সমন্বয় এবং প্রশাসনিক কাঠামোর দক্ষতা নিশ্চিত করা। বিশ্বের প্রায় সকল দেশে সরকারের মন্ত্রণালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বহুমাত্রিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মকর্তাদের (Generalist Officials) সচিব বা স্থায়ী সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করার রেওয়াজ রয়েছে। বাংলাদেশও  এ  ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। 

অপর দিকে বিশেষজ্ঞদের কাজ হচ্ছে বিশেষায়িত পরামর্শ প্রদান করা। তারা সাধারণত বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে কাজ করে থাকেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের আওতায় অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ দপ্তর  রয়েছে যেখানে সাধারণত  টেকনিক্যাল ক্যাডারে যোগ দেওয়া বিশেষজ্ঞগণ কাজ করেন এবং প্রয়োজনে মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ প্রদান করেন।  প্রতিটি  অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/ দপ্তরের আলাদা কর্ম পরিধি রয়েছে এবং তারা শুধু তাদের অধিক্ষেত্রের বিষয়েই অবগত থাকেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষজ্ঞদের (specialist) মধ্য হতে সচিব নিয়োগ দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

তবে বৈশ্বিক তথ্য উপাত্ত মতে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক নেত্রীত্বে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এ লেখায় আমরা কেবল গুরুত্বপূর্ণ কিছু সীমাবদ্ধতার বিষয়ে আলোকপাত করবো।

সীমাবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি নীতিনির্ধারণের সমন্বয়হীনতা  

বিশেষজ্ঞরা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন, যা তাদের সেই নির্দিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেয়। তবে, বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিভঙ্গি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন চিকিৎসককে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তবে তিনি স্বাস্থ্যবিধি এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ দক্ষ হতে পারেন, কিন্তু মন্ত্রণালয়ের জননীতি প্রণয়ন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা, রাজস্ব সংগ্রহ, অথবা প্রশাসনিক কাঠামোর মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা কম থাকতে পারে। এর ফলে নীতিনির্ধারণে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধনে অসুবিধা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে, মন্ত্রণালয়ের  সচিবদের/ স্থায়ী সচিবদের দায়িত্ব শুধুমাত্র একটি বিশেষ ক্ষেত্র বা বিভাগের পরিচালনা নয়; বরং, তাদের লক্ষ্য থাকে সামগ্রিক নীতিনির্ধারণ ও বাস্তবায়নে সমন্বয় সাধন।

সাধারণজ্ঞরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কাজ করার মাধ্যমে বহুমুখী অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ফলে তারা সরকারি নীতিগুলোকে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হন। 

প্রশাসনিক দক্ষতার সীমাবদ্ধতা

প্রশাসনিক কাজকর্মে একটি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে শুধুমাত্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনা করলেই হয় না, বরং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন, বিভিন্ন প্রশাসনিক দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা এবং নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে কাজ করতে হয়। সাধারণজ্ঞরা তাদের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করার অভিজ্ঞতার ফলে এই ধরনের সমন্বয়কাজে দক্ষ হয়ে ওঠেন। তারা মন্ত্রণালয়ের প্রতিদিনের কাজের গতিবিধি বুঝতে সক্ষম এবং সংকট মোকাবিলায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। তবে, একজন বিশেষজ্ঞ সাধারণত তাদের বিশেষায়িত ক্ষেত্রের বাইরে পরিচালনায় অজ্ঞ হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রকৌশলী, যিনি শুধু অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষজ্ঞ, তিনি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা নীতি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নেতৃত্বের অভাব অনুভব করতে পারেন।

রাজনৈতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটের অসামঞ্জস্যতা

বিশেষজ্ঞরা সাধারণত গবেষণা বা একাডেমিক পরিবেশ থেকে আসেন এবং রাজনৈতিক কৌশল বা সামাজিক বাস্তবতার ক্ষেত্রে দুর্বল হতে পারেন। তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র বিশেষজ্ঞ দৃষ্টিকোণ প্রাধান্য পেতে পারে, যা বাস্তবিক প্রয়োজনীয়তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। বাস্তবে, মন্ত্রণালয়ের সচিবদের প্রায়শই রাজনৈতিক পরিবেশের সাথে মানিয়ে কাজ করতে হয়। তারা কেবল প্রশাসনের কাজ পরিচালনা করেন না, বরং সরকারের রাজনৈতিক লক্ষ্য বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।  সাধারণজ্ঞরা দীর্ঘমেয়াদী প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং সামাজিক চাহিদা বোঝেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন। তাদের কাছে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক স্তরে সমন্বয় সাধনের দক্ষতা থাকে।

বহুমুখী সমস্যার প্রতি নমনীয়তা সংকট ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা

মন্ত্রণালয়ের সচিবদের কাজ শুধু দৈনন্দিন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন নয়, বরং তারা বিভিন্ন রকম সংকটও মোকাবিলা করেন, যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আর্থিক সংকট বা জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়। এ ধরনের সময়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং সমস্যার বিভিন্ন দিককে মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। 

সাধারণজ্ঞরা বিভিন্ন সমস্যার মধ্য দিয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে সংকট মোকাবিলায় অধিকতর নমনীয়তা দেখাতে সক্ষম হন। তারা দ্রুত পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে পারেন এবং বিভিন্ন স্তরের প্রশাসনিক সহায়তা নিতে সক্ষম হন। অন্যদিকে, বিশেষজ্ঞদের ক্ষেত্রে সমস্যা একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হতে পারে, যা সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির অভাব

মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গঠনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী কৌশল ও পরিকল্পনা প্রয়োজন। সাধারণজ্ঞরা দীর্ঘ সময় ধরে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে এই ধরনের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করেন। তারা প্রশাসনের সামগ্রিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে সক্ষম।  বিশেষজ্ঞরা তাদের নিজস্ব ক্ষেত্রে গভীর জ্ঞান রাখেন, তবে এই জ্ঞান সাধারণত নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে তারা দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা অনুভব করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন কৃষি বিশেষজ্ঞ কৃষি নীতি ও গবেষণায় প্রগাঢ় জ্ঞান রাখলেও কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনা বা পরিবেশগত প্রভাবের মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এটি মন্ত্রণালয়ের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা

এখন দেখা যাক উন্নত বিশ্বে কি ধরনের ব্যবস্থা কার্যকর আছে। বিশ্বব্যাপীই মন্ত্রণালয়ের সচিব বা স্থায়ী সচিব হিসেবে সাধারণজ্ঞ (generalist) কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। যেমন যুক্তরাজ্যে স্থায়ী সচিব নিয়োগ প্রক্রিয়া মেধার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, যেখানে সিভিল সার্ভিস কমিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রার্থীকে বিভিন্ন ধাপের পরীক্ষা এবং সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। কানাডায়ও মেধা ও পেশাগত দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়, যেখানে প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী সচিব নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জনসেবা কমিশন একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে, এবং প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। মালয়েশিয়ায় এই প্রক্রিয়া কিছুটা কেন্দ্রীভূত, যেখানে প্রধানমন্ত্রী প্রধান ভূমিকা পালন করেন এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেকাংশে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।

ভারতের ক্ষেত্রে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সচিবালয় স্থায়ী সচিবদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মূল ভূমিকা পালন করে, যেখানে মেধা, অভিজ্ঞতা ও প্রশাসনিক দক্ষতা বিবেচনা করা হয়। তবে, রাজনৈতিক প্রভাবও এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সুতরাং এ সকল দেশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি রাজনৈতিক প্রভাবের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়।

এখন যুক্তরাজ্য এবং সিংগাপুর এর স্থায়ী সচিব (বাংলাদেশে মন্ত্রণালয়/বিভাগ এর সচিব সমতুল্য)  গণের মধ্য থেকে কয়েকজনের তথ্য বিশ্লেষণ করা যাক। মিস লাই ওয়ে লিন সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য  মন্ত্রণালয়ে স্থায়ী সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তিনি দ্বিতীয় স্থায়ী সচিব (শিক্ষা) হিসেবে কাজ করেছেন, এবং একইসঙ্গে ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী সচিব (আইন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালে, তিনি স্থায়ী সচিব (পরিবহন উন্নয়ন) এবং দ্বিতীয় স্থায়ী সচিব (অর্থ) হিসেবে দ্বৈত ভূমিকা পালন করেছেন।  

বার্নাডেট কেলি ১৮ এপ্রিল ২০১৭ থেকে যুক্তরাজ্যের পরিবহন মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। এর আগে, তিনি এপ্রিল ২০১০ থেকে ব্যবসা, উদ্ভাবন এবং দক্ষতা মন্ত্রণালয়ে (বিআইএস) মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।  তার কর্মজীবন বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে বিস্তৃত,যার মধ্যে রয়েছে কমিউনিটিস অ্যান্ড লোকাল গভর্নমেন্ট মন্ত্রণালয়, এইচএম ট্রেজারি, কেবিনেট অফিস এবং প্রধানমন্ত্রীর নীতি ইউনিট। এছাড়া, টামারা ফিঙ্কেলস্টেইন ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের পরিবেশ, খাদ্য এবং গ্রামীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের (ডিইএফআরএ) স্থায়ী সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে, তিনি  ঋণ ব্যবস্থাপনা অফিস এবং ইউকে বর্ডার এজেন্সিতে দায়িত্ব পালন করেছেন।  এবং তিনি লর্ড হাটনের স্বাধীন পাবলিক সার্ভিস পেনশন কমিশনের সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। এর পাশাপাশি ভারত, পাকিস্থান এবং শ্রীংকাতে ও  মন্ত্রণালয়ের সচিব সাধারণত  প্রশাসনিক সার্ভিস (IAS/PAS/SLAS) থেকে নিয়োগ প্রদান করা হয় যাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে।

উল্লেখিত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায় যেসকল দেশের সিভিল সার্ভিসর সুনাম রয়েছে সেখানে মন্ত্রণালয়ের নেত্রীত্বের দায়িত্বে তারা ই রয়েছেন যাদের পূর্বে  বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সুতরাং, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং বিদ্যমান বাস্তবতা বিবেচনায় এটি প্রতীয়মান হয় যে, মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে বিশেষজ্ঞদের নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

সাধারণজ্ঞদের বহুমুখী দক্ষতা, সংকট ব্যবস্থাপনা, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কৌশল প্রয়োগের ক্ষমতা, এবং দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি একটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অধিক কার্যকর। 

বিশেষজ্ঞদের নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান থাকলেও, তাদের সীমাবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার অভাব, এবং নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে বহুমুখী চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যের অভাব মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।  নীতি নির্ধারণের জন্য বিশেষজ্ঞ  মতামতের জন্য বিশেষ ক্ষেত্রে অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের পাশাপাশি অন্যান্য পরামর্শকের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। এভাবে বিশেষজ্ঞ এবং সাধারণজ্ঞ (generalist) কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো গঠন করা সম্ভব, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

লেখক: লোকপ্রশাসন এবং জননীতি গবেষক।