মাঠে সন্তান প্রসব, চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে মামলা

মামলাবগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে তাড়িয়ে দিলে মাঠে সন্তান প্রসবের পর নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গৃহবধূর স্বামী ইলিয়াস উদ্দিন বৃহস্পতিবার রাতে শেরপুর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে দণ্ডবিধির ৩১৫ ও ৩০৪(ক) ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে চিকিৎসক মোস্তফা আলম আল্লামা তালুকদার পিয়াল ও নার্স সুষমা রানীকে। হাইকোর্ট অভিযুক্তদের তলব করেছেন। বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. অর্ধেন্দু দেব ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছেন। ওই কমিটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।
থানায় এজাহার ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, স্ত্রী মাজেদা বেগমের প্রসব ব্যাথা উঠলে শেরপুরের গাড়িদহ ইউনিয়নের স্কুলপাড়া গ্রামের চাতাল শ্রমিক ইলিয়াস উদ্দিন মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে তাকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক পিয়াল তাকে ভর্তি করে নেন। এক ঘণ্টা পর মাজেদাকে প্রসব কক্ষে নেওয়ার কথা থাকলেও নার্স সুষমা তাদের সিজার করার জন্য মডার্ন ক্লিনিকে ডা. রাফসান জাহান রিম্মির কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
মাজেদার বোন স্বপ্না খাতুন সাংবাদিকদের জানান, মাজেদাকে ক্লিনিকে নেওয়ার পথে হাসপাতালের মাঠে একটি গাছের নিচে সন্তান প্রসব করেন মাজেদা। তাদের চিৎকারে চিকিৎসক এলেও ততক্ষণে নবজাতক মারা যায়।
ডা. পিয়াল ও নার্স সুষমা দাবি করেন, তারা মাজেদাকে তাড়িয়ে দেননি। তাদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে বলা হয়েছিল। তারা নিজ থেকেই ক্লিনিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।
বৃহস্পতিবার চিকিৎসক পিয়াল ও নার্স সুষমাকে তলব করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন। এ ছাড়া দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। জেলা প্রশাসককেও ওইদিন তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
বগুড়া সিভিল সার্জন ডা. অর্ধেন্দু দেব বলেন, ‘ঘটনার তদন্তে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. এটিএম নুরুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেবে।’ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. আবদুল ওয়াদুদ ও সারিয়াকান্দির জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি) ডা. হাসিনা আকতার। এ অবস্থায় ডা. পিয়াল ও নার্স সুষমা দায়িত্ব পালন করবেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে সিভিল সার্জন বলেন, এটা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবে।
শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. এরফান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এজাহারে প্রসবে বাধা ও অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, ‘এসআই সামসুজ্জোহা তদন্ত করছেন। তার রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

আরও পড়ুন-

মাঠে কেন সন্তান প্রসব, চিকিৎসক-নার্সকে তলব

 

/টিআর/