কুমিল্লায় চালক হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

যাবজ্জীবনকুমিল্লায় মাইক্রোবাস চালক রৌশন আলীকে অপহরণ করে জবাই করে হত্যার দায়ে চার জনকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে এ আদেশ দেন কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক এম আলী আহমেদ।
যাবজ্জীবন কারা দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বড় ভৈষখোলা গ্রামের ওমর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার প্রতাবপুর গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সুমন, আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা গ্রামের মো. বাহার মিয়া খলিফার ছেলে আব্দুল জলিল মিয়া ও চৌদ্দগ্রামের উপজেলার চাঁনশ্রী গ্রামের ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মোশারফ হোসেন।
কুমিল্লা জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য সেবা কেন্দ্র ও মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ১১ অক্টোবর বিকাল ৫টায় নগরীর বিষ্ণুপুরের আবুল কাসেমের ছেলে গাড়িচালক মো. রৌশন আলী ভাড়ায় চালিত একটি মাইক্রোবাসে করে ঢাকার তৎকালীন জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। পরে আসামিরা রৌশন আলীকে অপহরণ করে মাইক্রোবাস নিয়ে যায়।
রৌশন আলী বাড়িতে ফিরে না আসায় গাড়ির মালিক ও পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধান করেন। কিন্তু তাকে খেুঁজে না পাওয়ায় ২৩ অক্টোবর গাড়ির মালিক কোতয়ালি ঝাউতলার মো. আলী আহম্মেদের ছেলে মাহেনুর আহাম্মদী বাদী হয়ে আবদুল জলিলসহ চার জনকে আসামি করে কোতয়ালি মডেল থানায় জিডি করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী মাহবুবুর রহমান আসামি আবদুল জলিল ও সুমনকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এই জিজ্ঞাসাবাদে রৌশন আলী হত্যাকাণ্ডের তথ্য বেরিয়ে আসে। আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুসরণ করে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়ার বাজার ফেয়ারলেম সোয়েটার গার্মেন্টের টয়লেটের ট্যাংকি থেকে চালক রৌশন আলীর গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
২০০০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই কাজী মাহবুবুর রহমান ও এসআই মো. মোশারফ হোসেন। মামলার বিচারিক প্রক্রিয়ায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আট জন আসামির মধ্যে চার জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা করে জারিমানা করেন আদালত।
এছাড়াও, ঢাকার কেরাণীগঞ্জ উপজেলার দোলেশ্বর গ্রামের মো. রুহুল আমিন ওরফে ভুলু মিয়ার ছেলে আসামি কাঞ্চন মিয়া ও একই গ্রামের মো. নাসির মিয়ার ছেলে মো. ছিদ্দিকুর রহমান সাঈদকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অন্য দুই আসামি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম মিয়ারবাজার ফেয়ারলেম সোয়েটার গার্মেন্টের নাইটগার্ড মিজানুর রহমান (মিজান) ও মো. গণি মিয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট মো. নূরুল ইসলাম এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোটেক ফারুক আহম্মদ।

আরও পড়ুন-
মিতু হত্যাকাণ্ড: অস্ত্র মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

গাজীপুরে ভাবিকে হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীর যাবজ্জীবন


/টিআর/