এসপি বাবুলের বিরুদ্ধে এসআই আকরাম হত্যার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করছেন এসআই আকরামের বোন রিনি, পাশে বসা আকরামের অন্য বোনেরাসাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিশেষ শাখার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকরাম হত্যার অভিযোগ এনে ঝিনাইদহে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এসআই আকরামের স্বজনেরা। শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন এসআই আকরামের বোন জান্নাত আরা পারভীন রিনি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে রিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘খুলনায় বাবুল আক্তারের বাবা পুলিশ ও বন্নীর বাবা বিআরডিবিতে চাকরি করতেন। থাকতেন পাশাপাশি বাসায়। সেই সুবাদে বাবুল ও বন্নীর মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু ২০০৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরামের সঙ্গে বিয়ে হয় বন্নীর। অন্যদিকে পারিবারিকভাবে মিতুকে বিয়ে করেন বাবুল। কিন্তু বিয়ের পরও বাবুল ও বন্নীর মধ্যে যোগাযোগ ছিল।’
রিনি বলেন, ‘আকরাম-বন্নী দম্পতির সন্তান জন্মের সময় বন্নী হাসপাতালে থাকাকালীন বাবুল প্রতিদিনেই সেখানে যেতেন। এর পরেও বিভিন্ন সময় বন্নীর সঙ্গে তার যোগাযোগ অব্যাহত ছিল। এসআই আকরাম মিশনে দেশের বাইরে থাকার সময়ও দু’জনের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা হতো।’
রিনি অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর আকরাম ঝিনাইদহ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এসময় বন্নী বাবুলের সঙ্গে কূটকৌশল করে পথে সন্ত্রাসী ফিট করে রাখে। পরে ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার বড়দাহ নামক স্থানে মহাসড়কে মুমূর্ষু অবস্থায় পাওয়া যায় আকরামকে। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে। আকরামের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে ফরিদপুর ও পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি আকরাম মারা যায়। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার মৃতদেহ গ্রহণ করে বন্নী। ওই সময় এ ঘটনাকে সড়ক দুর্ঘটনা বলে চালানোর চেষ্টা করে পুলিশ। পরে আকরামের মৃতদেহ ঝিনাইদহে এনে দাফন করা হয়। বন্নীর বাবা একমাত্র জামাইয়ের জানাজায় অংশ না নিয়ে বন্নীসহ পরিবারের অন্যদের নিয়ে বাবুল আক্তারের মাগুরার বাড়ীতে গিয়ে ওঠেন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ময়নাতদন্তের সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে আকরামের মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তখনই আকরামের মৃত্যুকে হত্যা সন্দেহ করা হয়। কিন্তু ওই ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। এছাড়া তৎকালীন পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার পাননি আকরামের স্বজনরা।
আকরামের বোন রিনি বলেন, ‘পরে বাবুল, বন্নী ও তার ফুফাতো ভাই সাদিমুল ইসলাম মুনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আকরামের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা হয়। ওই ময়নাতদন্তের রিপোর্টও প্রভাবিত করে এসপি বাবুল।’
সংবাদ সম্মেলনে রিনি ছাড়াও আকরামের আরও চার বোন উপস্থিত ছিলেন। তারা আকরাম হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।

আরও পড়ুন-

বাঘাইছড়ি পৌর নির্বাচনে জিরো টলারেন্সের নির্দেশ ইসি’র

'সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে'

/টিআর/