চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুই বাড়ি ঘেরাও

কর্নেলহাটের ওই বাড়িতে তল্লাশির জন্য যাচ্ছে পুলিশ

চট্টগ্রামে জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দু’টি বাড়ি তল্লাশি করছে পুলিশ। সোমবার (২০ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাড়ি দু’টি ঘিরে ফেলা হয়। এর মধ্যে একটি বাড়িতে তল্লাশি শেষ করা হয়েছে। অন্য বাড়িটিতে তল্লাশি এখনও চলছে। তল্লাশিতে এখনও কিছু পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম পুলিশের ডবল মুরিং জোনের সহকারী কমিশনার এ বি এম ফয়জুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) নাজমুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানার উত্তর কাট্টলি এলাকার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকার সামনে ইশান মহাজন ঘাট রোডের একটি বাড়িতে তল্লাশি শেষ করেছে পুলিশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাঁচ তলা বাড়িটিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ কিছু পায়নি। পুলিশের সোয়াত টিম এ তল্লাশি চালায়।

উত্তর কাট্টলিতে তল্লাশি শেষে চলে যাচ্ছে পুলিশসিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (পশ্চিম) নাজমুল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য ছিল, বাড়িটিকে জঙ্গিরা আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করছে। ওই তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই আমরা অভিযান চালিয়েছি। তবে তল্লাশিতে কোনও জঙ্গিকে ওই বাড়িতে পাওয়া যায়নি। এখন বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলে আমাদের কাছে থাকা তথ্যগুলো মিলিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’

তল্লাশি শেষ হলেও বাড়িটি এখনও ঘিরে রাখা হয়েছে। বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তা।

এদিকে, আকবর শাহ থানার কর্নেলহাটের সিডিএ আবাসিক এলাকায় আরেকটি বাড়িতে এখন চলছে তল্লাশি। বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ দেড় শতাধিক পুলিশ ‘মমহ নিবাস’ নামের ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের ওই বাড়িটিতে তল্লাশি চলছে।

কর্নেলহাট সিডিএ আবাসিক এলাকায় পুলিশি তল্লাশির প্রস্তুতিডবল মুরিং জোনের সহকারী কমিশনার এ বি এম ফয়জুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ‘মমহ নিবাস’ নামের একটি বাড়িতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’ বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে বলে জানান তিনি।

জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে তল্লাশি চালানো বাড়ি দুইটির মধ্যেকার দূরত্ব আধা কিলোমিটার।

তল্লাশি শেষ হওয়া বাড়িটির মালিক শ্রীশ সাহা। তিনি কর্ণফুলি গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানির সাবেক জিএম। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চার বছর আগে আমি অবসরে যাই। তখন এই বাড়িটি তৈরি করেছি। এখানকার সব ভাড়াটিয়াই আমার পরিচিত। তাদের মধ্যে কোনও জঙ্গি নেই বলেই আমি জানি।’ ওই বাড়ির সব ভাড়াটিয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী বলেও জানান তিনি।

উত্তর কাট্টলিতে তল্লাশি শেষে পুলিশ সদস্যরা পুলিশ ভ্যানেওই বাড়ির এক ভাড়াটিয়া সাবেক পিডিবি কর্মকর্তা সুনীল কান্তি সেন বলেন, ‘আমি তিন বছর ধরে এই বাড়িতে আছি। তবে এখন পর্যন্ত এখানে কোনও ধরনের জঙ্গি তৎপরতা চোখে পড়েনি।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ভোরে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলায় ‘ছায়ানীড়’ নামের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ। ঢাকা সোয়াত টিমের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই অভিযানে এক নারীসহ নব্য জেএমবির চার সদস্য নিহত হয়। পরদিন আরও এক শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার হয় ওই বাড়ি থেকে। এর আগে বুধবার (১৫ মার্চ) বিকালে সীতাকুণ্ডেরই আমিরাবাদ নামাবাজার এলাকায় ‘সাধনকুটির’ নামের আরেক বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুই জঙ্গিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সঙ্গে তিন মাস বয়সী একটি শিশু ছিল।

/টিআর/