বাংলা ট্রিবিউনের মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানিয়েছেন, শনিবার (১৫ এপ্রিল) রাতে কালবৈশাখী ঝড়ের পর থেকেই বাতাসের সঙ্গে ভয়ানক দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে বলে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা। পরদিন থেকে হাওরের মাছ মরতে দেখা যায়। সেই মাছ খেয়ে এখন মারা যাচ্ছে হাঁস।
সরেজমিনে হাকালুকি হাওরে গিয়ে দেখা গেছে, বাতাসের সঙ্গে ভাসতে ভাসতে পাড়ে চলে আসছে মরা হাঁস। তা কুড়িয়ে আনছেন খামারিরা। স্থানীয় কৃষক আবুল হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘পানিতে ধান নিয়েছে। অভাবের সংসারে হাঁসের ডিম বিক্রি করে খানিকটা খরচ চলত। এখন সেই হাঁসও আর নেই।’
আবুল মিয়ার মতো মলিক মিয়া ও সবু মিয়াও বলছেন একই কথা। তাদের মতো অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে হাঁস পালতেন। হাঁস মরে যাওয়ায় এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ কিভাবে শোধ করবেন, তা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা তাদের।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অ্যামোনিয়া গ্যাসে আক্রান্ত মরা মাছ খেলে হাঁসও মারা যাবে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘হাওরে চুন ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়া হবে।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) থেকেই হাওরে ছিটানো হচ্ছে চুন ও জিওলাইট ওষুধ। এতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হচ্ছে বলেও দাবি তাদের।
নুসরাত হাঁসের ফার্ম ছাড়াও উপজেলার আরও বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে হাঁসের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, হাওরে মাছের মড়ক লাগায় সব মাছ মরে গিয়ে পানিকে দূষিত করেছে। ওই পানি খেয়েই মরে যাচ্ছে হাঁসগুলো।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কামরুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাওর ও নদীর পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। ধান ও মাছ পচে গিয়েই এই দূষণ হয়েছে। সেই পানি খেয়ে এবার মারা যাচ্ছে হাঁস।’
ধান তলিয়ে যাওয়ার পর মাছের মড়ক লাগে। এরপর হাঁসও মারা যেতে শুরু করলে স্থানীয় কৃষকরা চোখে-মুখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেছেন।
আরও পড়ুন-
বাঁধ ভাঙার ঘটনায় অবহেলার প্রমাণ পেলে ছাড় দেওয়া হবে না: হানিফ
/টিআর/