হাকালুকি হাওরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা সভা

হাকালুকি নিয়ে পর্যালোচনা সভা

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে গত ১৫ এপ্রিল থেকে মাছ মরে যাওয়ার কারণ ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একটি পর্যালোচনা সভা করেছে জেলা মৎস্য বিভাগ।

২২ এপ্রিল (শনিবার) বিকালে মৎস্য অধিদফতরের উদ্যোগে জেলা মৎস্য অফিসের সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আ.ক.ম শফিক উজ জামান লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।এসময় তিনি বলেন, ‘গত ১৫ এপ্রিল থেকে হাকালুকি হাওরে মরা মাছ পানিতে ভাসতে দেখা যায়। এরপর মৎস্য বিভাগ মাছ মরার কারণ অনুসন্ধানে জানতে পারে হাওরের ধান পচে পানিতে বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিষক্রিয়ার ফলে পানির অক্সিজেন ও পিএইচ কমে গিয়ে অ্যামোনিয়া বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছ মরে যাচ্ছে।’

মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ‘১৭ এপ্রিল হাওরের পানির পিএইচ-৬, ডিও-৪.৯, পিপিএম এবং অ্যামোনিয়া ১ পিপিএম ছিল। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে পিএইচ ও ডিও বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং অ্যামোনিয়া কমতে থাকে। ২০ এপ্রিল মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়, বিএফআরআই টিমসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা হাওরের বিভিন্ন স্থানের পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাগুণ পরীক্ষা করেন। উভয়দলের পরীক্ষায় পানির পিএইচ-৭, ডিও-৫.২ পিপিএম, অ্যামোনিয়া-১ পিপিএম পাওয়া যায়।’

পর্যালোচনা সভায় মৎস্য কর্মকর্তা আ.ক.ম শফিক উজ জামান আরও বলেন, ‘মৎস্য বিভাগ হাকালুকি হাওরের অংশে অবস্থিত কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এই তিন উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত চার হাজার জেলের জন্য খাদ্য সহায়তা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এছাড়া এই তিনটি উপজেলায় ৮টি বিল নার্সারির মাধ্যমে ১০-১৫ সেন্টিমিটার লম্বা ১৮ লাখ রুই, কাতলা, মৃগেলসহ আরও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন করছে, যা আগামী জুনের মধ্যে হাওরে অবমুক্ত করা হবে।’

সভায় বলা হয়, ‘বর্তমানে হাওরের পানির ভৌত রাসায়নিক গুণাগুণ পরিমাপ সন্তোষজনক। কয়েকদিনের মধ্যে জেলেদের হাওর থেকে মাছ আহরণের সুযোগ দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই মৌসুমে সারা জেলার হাওরাঞ্চলে ৪১হাজার মেট্টিক টন মাছ জলাশয়ে থাকে। যার মধ্যে হাকালুকি হাওরে ১৪হাজার মেট্টিক টন।’

শফিক উজ জামান বলেন, ‘সৃষ্ট এই সমস্যার কারণে কুলাউড়া উপজেলায় সাত মেট্রিক টন, জুড়ী উপজেলায় আট মেট্রিক  টন এবং বড়লেখা উপজেলায় ১০ মেট্রিক টন মিলে মোট ২৫ মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।’

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় কর্মরত স্থানীয় সাংবাদিকরা এবং বিভিন্ন উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তারা এই সভায় উপস্থিত ছিলেন ।

/এপিএইচ/