এসি সাব্বিরের লাশ উদ্ধার: সুরতহাল প্রতিবেদনে আত্মহত্যা

রাজশাহী মহানগর পুলিশের রাজপাড়া থানা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজরাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানা জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শনিবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে সুরতহাল প্রতিবেদনে জানিয়েছে পুলিশ। আরএমপির মুখপাত্র ও সিনিয়র সহকারী কমিশনার (সদর) ইফতেখায়ের আলম বাংলা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এসি সাব্বিরের মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে রবিবার (৩০ এপ্রিল)।
আরএমপির অফিসার্স কোয়ার্টারে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় সাব্বিরের লাশ উদ্ধার করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় ইফতেখায়ের আলম বলেন, ‘সাব্বিরের মা-বাবার উপস্থিতিতেই দরজা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘরের দরজা যেহেতু ভেতর থেকে বন্ধ ছিল, তাই পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে ধারণা করছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে তাই এটাই উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সাব্বির আত্মহত্যা করেছিলেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ময়নাতদন্ত করা হবে রবিবার (৩০ এপ্রিল)।’
এদিকে সাব্বিরের বাবা আরএমপির সাবেক পুলিশ কমিশনার ও সাবেক ডিআইজি ওবাইদুল্লাহ হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আত্মহত্যা না হত্যা তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বলা যাবে। তবে সাব্বির আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়।’
এ ঘটনায় এখনও কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আরএমপির মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম। তবে ক্রাইম সিনের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তারা আলামতগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন।
ঘটনাস্থল ঘুরে এসে রামেক ফরেনসিক বিভাগের অধ্যাপক এনামুল হক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, এসি সাব্বিরের গলায় নাইলনের দড়ির ফাঁসের চিহ্ন আছে। সে সোফায় বসা ছিল। দড়ির অন্য অংশ জানালার গ্রিলের সঙ্গে আটকানো ছিল। সোফায় কোনোভাবে পা স্লিপ করে গলায় ফাঁস লেগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কারণ ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

পুলিশ অফিসার্স মেসেই সহকারী কমিশনার (এসি) সাব্বির আহমেদ সরফরাজের লাশ উদ্ধার করা হয়এদিকে এসি সাব্বিরের মরদেহ নিয়ে যাওয়ার পর আরএমপির কমিশনার শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাব্বির মাঝে মধ্যে এই মেসে এসে বিশ্রাম নিতেন। শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) অভিযান শেষ করে দিবাগত রাত ৩টার দিকে মেসে যান তিনি। এরপরই যে কোনও সময় তিনি মারা গেছেন। প্রাথমিকভাবে এটাকে আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। অন্য কোনও আলামত পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

প্রসঙ্গত, সাব্বির ৩১তম বিসিএস ক্যাডার ছিলেন। রাজশাহী উপশহরের একটি বাসায় এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন সাব্বির। তার গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাকা ইউনিয়নের বাবুপুর গ্রামে।

/টিআর/জেএইচ/