স্বামী ও মেয়েকে হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়া হালিমা আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন প্রতিবেশী ফারুক ও মেম্বার আবুল হোসেনের দিকে। তার দাবি, ৮ বছর বয়সী আয়েশাকে মাঝেমধ্যে ফজলুল হকের ছেলে ৩০ বছরের ফারুক সাইকেলে চড়াতেন। এর মধ্যে একদিন মেয়েটিকে যৌন নির্যাতনের চেষ্টা করেন তিনি।
প্রায় দুই মাস আগের এ ঘটনার বিচারের দায়িত্ব নেন স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হোসেন। কিন্তু ফারুকের কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়ে কোনও মীমাংসা ছাড়াই তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেন বলে অভিযোগ হালিমার। ফারুকের বিরুদ্ধে ৪০ হাজার টাকা দামের একটি গরু চুরি এবং বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন তিনি।
অভিযুক্ত ফারুকের গ্রামের দিকে আঙুল উঁচিয়ে হালিমা বলেন, ‘দাও লইয়া, লাডি লইয়া দৌড়াইয়া আইছে আমার স্বামীরে কুবাইতো বইল্যা। ডেগার যহন লইয়া আইছে আমার স্বামীডারে আমি ঘরের ভিত্তে আটকাইয়া রাকছিলাম। পরের দিনই ঘটনাটা ঘটছে। আমি আমার স্বামী চাই, মাইয়া চাই।’
হালিমা বেগমের দাবি, সেই রাতের ঘটনার পর থেকেই হযরত আলী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। এ কারণে পরদিনই মেয়েকে নিয়ে স্বামী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।
হালিমা দুঃখ নিয়ে বললেন, ‘৩০ বছর সংসার করছি, আমার সন্তান হয় নাই। মাইয়াডারে পালক আনছিলাম। নিজের মাইয়ার মতো মানুষ করতেছিলাম।’
সাইকেল থেকে পড়ে আয়েশার পা কেটে যায়। সে নিজের মুখেই এসব জানিয়েছিল বলে দাবি হালিমার। তিনি জানান, মেয়ের পায়ের চিকিৎসা করাতে পাঁচ হাজার টাকা লেগেছে। তবে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাননি। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ কিনে মেয়েকে খাইয়েছেন। পচন ধরে ঘা হয়ে যাওয়ায় আয়েশার পা ঘন ঘন চুলকাতো বলেও জানান তিনি। আয়েশাকে নির্যাতন করায় ফারুকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছিলেন বলেও জানান হালিমা।
গফরগাঁও-এর কদমতলীর বাসিন্দা রিয়াজ উদ্দিন সরকারের ছেলে হযরত আলী আগেও কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন হালিমা। তিনি বলেন, ‘কখনও ফাঁস লইত, কখনও গাড়ির তলে পড়বার চাইতো, বিষ খাইবার চাইতো।’
বাড়িতে শত্রুরা হামলা চালাতে পারে আশঙ্কা করে পুলিশি পাহারার অনুরোধ জানিয়েছেন হালিমা। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে এখন থাকার মতো আমার আপন আর কেউ রইলো না। আমি দুনিয়াতে এখন একেবারেই একা।’
/এমপি/জেএইচ/