৪ আ. লীগ কর্মীকে হত্যা: না.গঞ্জে ২৩ জনের ফাঁসির আদেশ

নারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চার আওয়ামী লীগ কর্মী হত্যা মামলায় ২৩জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৭ মে) নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের (দ্বিতীয়) বিচারক কামরুন্নাহার এই রায় দেন।

মামলার ২৩ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। এরমধ্যে ১৯ আসামি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে এবং চারজন পলাতক।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ মার্চ আড়াইহাজার থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান  উপজেলা পরিষদের  ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই বারেক, ফুফাতো ভাই বাদল, আওয়ামী লীগের কর্মী ফারুক ও কবীরকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। গোপালদী ইউনিয়ন বিএনপির তৎকালিন সভাপতি আবুল বাশার কাশু ও তার লোকজন এই কাজ করে। নির্যাতনের পর  আগুনে পুড়িয়ে চারজনকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় নিহত বারেকের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য আজগর আলী বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে  পুলিশ ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। 

মামলা চলাকালীন সময়ে বাদী আজগর আলী মারা যান। পরে তার ছেলে  সফিকুল মামলার বাদী হন।   প্রত্যক্ষদর্শী, ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, ম্যাজিস্ট্রেটসহ  ১৬  জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ১৫ বছর পর এই  মামলার রায় দেওয়া হলো।

উল্লেখ্য ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর আবুল বাশার কাশু কিছু নেতাকর্মী নিয়ে স্থানীয়  সংসদ  সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে সোনার নৌকার কোটপিন  উপহার দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করে।

আদালতে উপস্থিত ১৯ আসামি হলেন-মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু, জহির উদ্দিন মেম্বার, আবু কালাম,  ডালিম, ইয়াকুব আলী, রফিক, হালিম, রুহেল, শাহাবুদ্দিন, লিয়াকত আলী মাস্টার, সিরাজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলী, মোহাম্মদ হোসেন, আহাদ আলী, ইউনুছ আলী, ফারুক হোসেন, গোলাম আযম, আব্দুল হাই ও খোকন। এ মামলায় পলাতক রয়েছে আল-আমিন, রুহুল আমিন, তাজুল ইসলাম ও হারুন।

এদিকে নিহত বারেকের ভাই আড়াইহাজার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর পর এই মামলার রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। রায় দ্রুত কার্যকরে সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’

রায়কে যুগান্তকারী উল্লেখ করে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ রশিদ বলেন, ‘অপরাধ করে যে কেই পার পায় না এটা আবারও প্রমাণিত হলো।  এই রায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’  

অন্যদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম মোল্লা জানান, ‘আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচার পাবো।’

/এফএস/

আরও পড়ুন- 
রোহিঙ্গা ইস্যুতে শক্ত অবস্থানে বাংলাদেশ, চাপে মিয়ানমার