থাইল্যান্ড থেকে উড়ে এসে নাটোরের যুবককে বিয়ে

থাইকন্যা ওম ও নাটোরের যুবক অনিক। বুধবার বিয়ে করে তারা

ফেসবুকে বন্ধুত্ব, জানাশোনা, এরপর একসময় মন বিনিময়। এরপর পছন্দের মানুষ ও তার পরিবারকে দেখতে বাংলাদেশে আসা। নওগাঁর মোবাইল ফোন মেকানিক অনিক (২২) ও থাইকন্যা সুপুত্তো ওরফে ওম ওরফে সুফিয়া খাতুনের (৩৬) প্রেমের গল্পে এ পর্যন্ত কোনও কিছুই বাধা হতে পারেনি। এমনকি, দেশ, সংস্কৃতি বা ভাষার ভিন্নতাও না। তবে পাঁচ বছরের এই সম্পর্ক বিয়েতে গড়ানোটা মানলেন না অনিকের বাবা-মা। এতে মনে মনে কষ্ট পেলেন ওম। সেই কষ্ট নিয়েই বৃহস্পতিবার নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

বুধবার (১৭ মে) নাটোর আদালতে বিয়ে করেছেন অনিক ও ওম। আর বৃহস্পতিবার রাত দুইটার ফ্লাইটে প্রিয় মানুষকে রেখে বাংলাদেশ ছেড়ে যাচ্ছেন ওম। এরই মধ্যে নওগাঁ ছেড়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন তিনি। সদ্য বিবাহিত অনিককে এ দেশে রেখে যাওয়ার কষ্টও সঙ্গী হচ্ছে তার।

জেলার লালপুর উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের চামটিয়া গ্রামের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, ‘অনিক তার ভায়রার ছেলে। অনিকের বাড়ি আত্রাই উপজেলার শাহগোলা গ্রামে। অনিকের পরিবারে সদস্য সংখ্যা চারজন। অভাবের কারণে অনিক বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেনি। বাবা আজাদ স্থানীয় স্টেশন ও বাস টার্মিনালসহ নানান জায়গায় চানাচুরের মতো বিভিন্ন মুখরোচক খাবার বিক্রি করে সংসার নির্বাহ করেন।’

নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ওমের বয়স বেশি হওয়ায় বাধ সাধেন অনিকের বাবা-মা। বিষয়টি বুঝতে পেরে মনে কষ্ট পেয়েছে ওম। তবে বিয়েটা শেষমেশ হয়েছে। এবার তারা দুজন সুখী হলেই আমরা খুশি।’ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিয়ের ব্যাপারে অনিকের বাবা-মাকে রাজি করিয়ে নেবেন বলেও জানান তিনি।’

অনিক জানান, পাঁচ বছর আগে তার ওমের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। প্রথমে তারা একে-অপরকে টেক্সট করতেন। এরপর ভিডিও কলে কথা বলা শুরু হয়। এভাবেই একদিন দুজন দুজনকে পরস্পরের মনের কথা জানান। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো ওম বাংলাদেশে আসেন। ওই সময় অনিক তার বাবা-মার কাছে ওমকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু তারা রাজি হননি। এতে ওম থাইল্যান্ডে ফিরে যান।

অনিক আরও জানান, বাবা-মা রাজি না হলেও ওমের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। গত এক সপ্তাহ আগে ওম আবারও নওগাঁয় আসেন। আবারও অনিকের বাবা-মা বিয়ের প্রস্তাব নাচক করে দেন। এতে বাধ্য হয়ে তারা কোর্টে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় ওম ধর্মান্তরিত হয়ে তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন সুফিয়া খাতুন।

তিনি জানান, তাদের বিয়েতে বাবা-মার সম্মতি না পাওয়ায় কষ্ট পেয়েছেন ওম। নওগাঁ ত্যাগের আগ পর্যন্ত ওমের চেহারায় মনের ভারাক্রান্ত ভাবটা খেয়াল করেছেন। ওম তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবারও বাংলাদেশে আসবেন বলেও জানান অনিক।

/এমএ/টিএন/