হত্যা ও লাশ গুমের দায়ে ৩ জনের যাবজ্জীবন





আদালতবরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার কাউয়ারেখা গ্রামের কিশোরী রোকসানা আক্তারকে ( ১৫) অপহরণ, ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ পৃথক দণ্ডাদেশ ও জরিমানা করেছেন আদালত।








বুধবার (১৪ জুন) বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের ২৫ জনের মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো প্রধান আসামি উজিরপুরের কাউয়ারেখা এলাকার রফিকউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে স্বপন হাওলাদার, সুখময় হালদারের ছেলে সমীর হালদার ও কানাই বৈরাগীর ছেলে গৌরাঙ্গ বৈরাগী। রায় ঘোষণার সময় শুধু স্বপন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন।
এই মামলার রায় ঘোষণার সময় অনুপস্থিত অপর ৩ আসামি স্বপনের বাবা রফিকউদ্দিন হাওলাদার, রফিকের ভাই মোকসেদ হাওলাদার এবং স্থানীয় বাসিন্দা সফিজউদ্দিনকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত তিন জনের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে মৃতদেহ গুম করার অপরাধে তিন জনের প্রত্যেককে ৫ বছর কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রধান আসামি স্বপন হাওলাদারকে নারী ও শিশু নির্যাতনের ২০০৭ ধারায় ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী আজিবর রহমান নথির বরাত দিয়ে জানান, নিহত রোকসানা আক্তার গৌরনদী উপজেলার কসবা এলাকার কাদের ফকিরের মেয়ে। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে নানী অসুস্থ থাকায় ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে সে উজিরপুরের কাউয়ারেখা গ্রামে নানী বাড়িতে যায়। ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ১০টার পর নানী বাড়িতে অন্যান্যদের সঙ্গে ভিসিআর দেখছিল রোকসানা। ভাত খেতে ডাকার অজুহাতে পাশের বাড়ির স্বপন তাকে বাড়ির পাশে পুকুর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে স্বপন এবং তার দুই সহযোগী সমীর ও গৌরাঙ্গ তাকে ধর্ষণ করে। পরে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের বাড়ির অতুল হালদারের বাড়ির টয়লেটের ট্যাংকিতে ফেলে দেয়।
বিভিন্ন জায়গায় সন্ধানের পর অতুল হালদারের বাড়ির টয়লেটের স্লাব এলোমেলো দেখে সন্দেহ হয় এলাকাবাসীর। এরপর টয়লেটের স্লাব তুলে ট্যাংকির ভেতর থেকে রোকসানার লাশ উদ্ধার করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় ১৬ মার্চ রোকসানার বড় ভাই লালন ফকির বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা এবং লাশ গুমের অভিযোগে উজিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উজিরপুর থানার এসআই আব্দুল হাকিম ২০০৩ সালের ২৬ জানুয়ারি ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
/এনআই/