শেষ মুহূর্তেও জমজমাট কুষ্টিয়ার পোড়াদাহ কাপড়ের হাট

 

পোড়াদাহ কাপড়ের হাটে বেচাকেনার চিত্রআসন্ন ঈদুল ফিতরের শেষ মুহূর্তেও জমজমাট কুষ্টিয়ার পোড়াদহ কাপড়ের হাট। দেশের বৃহত্তর এই কাপড়ের হাটের পাইকারি ও খুচরা বিক্রেটাদের এখন দমফেলার ফুসরত নেই। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে বিভিন্ন রকমের কাপড় সংগ্রহ করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাবিক্রি।

রেলওয়ে জংশন থাকায় পোড়াদহে যাতায়াত ব্যবস্থা বেশ উন্নত। তাই উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কাপড় ব্যবসায়ীদের বিশেষ পছন্দ এই মোকাম। তাই বছরের সবসময় এ হাটের কদর থাকে। আর ঈদের সময় নির্ধারিত দিনের বাইরেও এখানে পাইকারি আর খুচরা কাপড় বেচাকেনা হয়ে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পোড়াদহের কাপড়ের মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বর্তমানে এখানকার প্রতিটি দোকানে তীলধারণের ঠাঁই নেই। আর ঈদের সময় নির্ধারিত দিনের বাইরেও এখানে পাইকারি আর খুচরা কাপড় বেচাকেনা হয়ে থাকে। কুষ্টিয়া জেলা শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোড়াদহ কাপড়ের হাট। এবার রোজার শুরু থেকেই ঈদের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা শুরু হয়েছে। পোড়াদহ বাজারের সবচেয়ে বড় দোকান অঙ্গশোভা মার্কেটের কয়েকটি দোকান ছাড়াও অঙ্গশোভা ভবনের চারতলার প্রতিটি তলায় বিশাল কাপড়ের সমারোহ। এখানে ছিট কাপড়, পাঞ্জাবির কাপড়, থ্রিপিচ, শাড়ি, সুতির কাপড়, যাকাতের কাপড়, মশারি, কোর্ট, প্যান্ট, শার্টের পিচ, লুঙ্গি, রেডিমেট পোশাকসহ সব ধরনের কাপড় পাইকারি ও খুচরা বিক্রি হয়।

অঙ্গশোভা বস্ত্রালয়ের মালিক রানা জানান, ‘এবার ঈদে বেচাকেনা অন্যান্য সময়ের চেয়ে ভালো। এছাড়াও এখানে অন্য ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ভালো। প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা আমাদের প্রতিটি দোকানে ভিড় করে পছন্দসই কাপড় কিনছেন। পাইকারির পাশাপাশি খুচরা বিক্রিও ভালো।’

কুষ্টিয়া শহর থেকে আসা ক্রেতা কানিজ মাহমুদা জানান, ‘শহর থেকে পোড়াদহ কাপড়ের বাজারে দামের দিক দিয়ে যেমন সাশ্রয়ী তেমনিভাবে দেখে শুনে নিজের পছন্দসহ কাপড় কেনা যাচ্ছে। এখানে প্রতারণার কোনও সুযোগ নেই। যে কোনও বড় দোকানে গেলেই নিজের পছন্দমতো সব ধরনের কাপড় নির্বিগ্নে কেনা যায়।’

মিরপুর থেকে আসা ক্রেতা হাসিব জামান বলেন, ‘এখানে পছন্দসই অনেক কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তবে অন্যান্য সময়ের চেয়ে দোকানিরা তুলনামূলক অনেক বেশি কাপড়ের দাম নিচ্ছেন।’

পোড়াদহ বাজারের আরেকটি বড় দোকান আফাজ বস্ত্রালয়ের পরিবেশও একই রকম। ক্রেতারা প্রতিযোগিতামূলক কাপড় পছন্দ করে কিনছেন। আবার কাপড়ের মূল্য দিতে যেয়ে রীতিমত লাইন দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। এছাড়াও সবুজ ক্লোথ স্টোর, জামান বস্ত্রালয়, আখিঁ বস্ত্রালয় ও রুবায়ের ফ্যাশন, নিউ ভরসা বস্ত্রবিতানসহ বিভিন্ন বড়বড় দোকানে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

পাইকারী কাপড় ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ‘পোড়াদহে সব বয়সের সব ধরনের কাপড় সহজেই পাওয়া যায়। তাই ঈদের সময় এখানে বিপুল মানুষের ঈদের কেনাকাটার হিড়িক পড়ে যায়। নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই ভাল হওয়ায় দূর দুরান্তর থেকে ক্রেতারা প্রতি দিনই এখনানে আসছেন। এছাড়াও এ হাটের খাজনা আদায় ব্যবস্থা উম্মুক্ত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দে এখান থেকে কাপড় কিনে গন্তব্যে নিতে পারেন।’

তিনি আরও জানান, ‘ঈদের আগের রাত পর্যন্ত এখানকার মার্কেট গুলোতে বেচা-বিক্রি চলবে।’

স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী সুজন খান জানান, ‘প্রতি শুক্রবার ও শনিবার মূল হাটে পাইকারী বেচাকেনা হয় আর ঈদের সময় সপ্তাহের প্রতি দিনই পুরো এলাকায় ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকে ব্যবসায়ী এবং ক্রেতা সাধারণ।’

/এসএনএইচ/