‘কীর্তনখোলা’র ধাক্কায় পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত, মাস্টার আটক- লঞ্চ জব্দ

কীর্তনখোলাশনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটের যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি কীর্তনখোলা-১ এর ধাক্কায় বরিশাল নদী বন্দরের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসময় বেশ কয়েকজন যাত্রী নদীতে পড়ে যান।
এ ঘটনায় উত্তেজিত যাত্রীরা লঞ্চে ভাঙচুর চালিয়েছেন। এতে লঞ্চের তিন জন স্টাফসহ কমপক্ষে আট জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনার পরপরই ওই লঞ্চের মাস্টার আব্দুস সালামকে আটক করেছে পুলিশ।
একই সঙ্গে  যাত্রা বাতিল করে লঞ্চটি জব্দ করে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বরিশাল নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শফিকুল ইসলাম জানান, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে কীর্তনখোলা-১ লঞ্চটি বরিশাল নদী বন্দরের পন্টুনে বেপরোয়া গতিতে ধাক্কা দেয়। এতে পন্টুনের সামনের ও পেছনের অংশ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।  এসময় লঞ্চের ভেতরে থাকা কয়েকজন যাত্রী নদীতে পড়ে যান। নৌ-পুলিশ তাদের উদ্ধার করেছে।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু জানান, লঞ্চটির ধাক্কায় পন্টুনের পেছনের অংশে থাকা একটি স্পার্ট র‌্যাম্প ভেঙে গেছে ও আরেকটির আংশিক ক্ষতি  হয়েছে। এছাড়াও পন্টুনের সামনের অংশসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ব্যাপক ক্ষতিহয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরীক্ষা করা হয়নি।

তিনি বলেন,   ‘বেপরোয়া চালনায় এমন দুর্ঘটনায় লঞ্চের মাস্টার আব্দুস সালামকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লঞ্চের যাত্রা বাতিল ও সেটিকে বরিশাল নদী বন্দরে আটক রাখা হয়েছে।’ প্রয়োজনে মেরিন আদালতে মামলা দায়েরসহ ফৌজদারি মামলাও দায়ের করা হতে পারে বলে জানান তিনি।

এমভি কীর্তনখোলা-১ লঞ্চের সুপারভাইজার বাবুল জানান, ঢাকা থেকে শনিবার দুপুরে লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বরিশালের  কীর্তনখোলা নদীর চরবাড়িয়া পয়েন্ট অতিক্রম কালে  লঞ্চটি ডুবোচরে আটকে যায়।

এসময় কিছু যাত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকেসহ লঞ্চের স্টাফ রানা, রমজান, ইমামসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করেন। এসময় তারা লঞ্চের নীচতলার ডেকের দুটি টেলিভিশন, কেবিনের ও প্রবেশদ্বারের দরজা, সার্চ লাইট, মাস্টার ব্রিজের জানালা ভাঙচুর করেন।

তবে লঞ্চে হাজারের ওপরে যাত্রী ছিলো বলে জানা গেছে।

এদিকে লঞ্চের যাত্রী ঝালকাঠীর বাসিন্দা রুহুল আমিনসহ একাধিক যাত্রী জানান, বরিশাল ঘাটে আসা মাত্রই লঞ্চটির  কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে তা যাত্রী ও লঞ্চের স্টাফদের মধ্যে সংঘর্ষে রূপ নেয়।

যাত্রীরা আরও জানান, ঢাকার সদরঘাট থেকেই লঞ্চটির স্টাফরা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিল। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে লঞ্চটি যাত্রা শুরু করে। পথিমধ্যে বরিশালের চরবাড়িয়া পয়েন্টে যখন লঞ্চটি ডুবোচরে আটকা পরে, তখন সান্ত্বনা না দিয়ে উল্টো যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। এতে যাত্রীরা উত্তেজিত হলে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

/এপিএইচ/