মংলা বন্দরের যাত্রা শুরু ১৯৫০ সালে। কালে কালে বয়স ছুঁয়েছে ৬৭ বছরে। বয়সের খতিয়ান লম্বা হলেও বেশ চড়াই-উৎরাইয়ের মধ্যে পথ চলতে হয়েছে বন্দরটিকে।
বন্দর সূত্র জানায়, গত ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে ১১ কোটি টাকা লোকসান দেয় মংলা বন্দর। পরের বছর এই লোকসানের পরিমাণ ছিল নয় কোটি টাকা। লোকসানের ধারা অব্যাহত থাকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত। পরে ২০০৯ সালে অবকাঠামো উন্নয়ন, সংস্কারসহ ৫৭০ কোটি টাকার কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেওয়ায় মংলা বন্দরের গতি ফিরে।
বন্দরের আরেক ব্যবহারকারী নুরু অ্যান্ড সন্সের মালিক এইচ এম দুলাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘চিংড়ি ও পাট সরাসরি মংলা বন্দর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চট্রগ্রাম বন্দরে চলে যেত। বন্দরে অবকাঠামো উন্নয়ন হওয়ায় সেসব পণ্য আবার মংলা বন্দর দিয়ে রফতানি হচ্ছে।’ তিনি জানান, এ বন্দর আরও গতিশীল হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, বন্দরের আয় বেড়ে শতকোটি টাকার ঘরে পৌঁছেছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৯৬ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আয় করে এই বন্দর। এ অর্থবছরে ১৩১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয় হওয়ায় নিট মুনাফার পরিমাণ ছিল ৬৪ কোটি ৭৩ লাখ ৭১ হাজার টাকা। গত পাঁচ বছরে এই বন্দরের সম্মিলিত মুনাফা পরিমাণ ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর ফারুক হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জাহাজের আগমন বেড়ে যাওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই বন্দরের আয় বেড়ে যাচ্ছে। এগুলো সম্ভব হয়েছে কেবল নতুন নতুন যন্ত্রপাতির সংযোজন ও সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর ফলে।’ আগামীতে আরও নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজিত হবে বলেও জানান তিনি।
কমোডর ফারুক হাসান আরও বলেন, ‘পদ্মা সেতু এখনও হয়নি। ২০১৮ সালের মধ্যে এই সেতু সচল হলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।’ কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে মংলা বন্দরের দূরত্ব কম হবে, সময় কম লাগবে। এ কারণেই রফতানিযোগ্য তৈরি পোশাকও তখন মংলা বন্দর দিয়ে রফতানি হবে— তাতে কোনও সন্দেহ নেই।’
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক ট্রাফিক মোস্তফা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘গত বছর এই বন্দর দিয়ে ৩৮ হাজার ৩শ ২৩ মেট্রিক টন পাট রফতানি হয়েছ। চলতি বছরের গত মে মাস পর্যন্ত রফতানি হয়েছে ৪৩ হাজার ২৭৫ মেট্রিক টন।’
/এসএমএ/টিআর/