বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘আমরা কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নই। আইন প্রয়োগ করছি না বলে হয়তো অবৈধ সংযোগ নিতে সাহস পাচ্ছে। নাহলে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীরা কিভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ পান? যারা এসব সংযোগ দিয়েছেন এবং যারা এসব লাইন নিয়েছেন সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ এসময় তিনি সংশ্লিষ্ট সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের কাছে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীরা কিভাবেবিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ পায় সে বিষয়ে জানতে চান।
বিভাগীয় কমিশনার রুহুল আমিন বলেন, ‘অনেক সময় পাহাড়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় জেলা প্রশাসনের ওপর চাপানো হয়। অথচ যেখানে যাদের মালিকানাধীন (সংস্থা) পাহাড় রয়েছে, এগুলো তদারকি করা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কেউ এসে পাহাড় কাটবে, সেখানে বাড়িঘর তৈরি করবে, অথচ পাহাড়ের মালিকরা কিছুই করবে না, তা হতে পারে না। পাহাড়ের মালিকরা যদি অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা না নেন, তবে ওইসব সংস্থার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই করে পুর্নবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। পাহাড়ের মালিকরা নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবেন। কত সংখ্যক উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে, কতটুকু সফলতা পেয়েছেন সেটি আগামী সভায় অবহিত করবেন। অবৈধ সংযোগগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাদের করণীয় সর্ম্পকে অবহিত করবেন।’
সভায় বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), চট্টগ্রাম ওয়াসা এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সমালোচনাও করা হয়। সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) আব্দুল জলিল বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আমাদের লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। কিন্তু অভিযান থেকে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেসব লাইনের সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসাবাসকারীদের উচ্ছেদে অভিযান চালানোর প্রয়োজন নেই। শুধুমাত্র ওইসব পাহাড়ে কয়েকদিন বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বন্ধ রাখলেই ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীরা পাহাড় ছেড়ে পালিয়ে যাবে।’
সভায় রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী আতাউল হক ভূইয়া বলেন, ‘ফয়েজ লেক এলাকায় রেলওয়ের পাহাড়ে ১০ থেকে ২০ হাজার মানুষ অবৈধ বসতি গড়ে বসবাস করছে। গহিন অরণ্যে তারা বসতি স্থাপন করায় সেখানে অভিযান চালানো সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি রেলওয়ের স্থাপনা উচ্ছেদে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। তবে রেলওয়ের উচ্ছেদ পদক্ষেপ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি। সভায় সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, ‘হাতিয়া, সন্দ্বীপ, নোয়াখালী, লক্ষীপুর থেকে এসে কয়েক হাজার মানুষ সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় পাহাড়ে অবৈধভাবে বাড়িঘর নির্মাণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় তারা অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে আসলেও প্রশাসনের নজরে আসে দুই মাস আসে।’
/এএম