বর্ষায় বাঁধ ভাঙা একেবারেই সাধারণ বিষয়: পানিসম্পদমন্ত্রী

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকায় পাউবোর নির্মাণাধীন বিকল্প রিং বাঁধের ধস পরিদর্শনকালে পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদবর্ষা মৌসুমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙা সাধারণ বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাজার হাজার বাঁধ রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙাটা একেবারেই সাধারণ বিষয়। বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের কাজ হচ্ছিল। স্বাভাবিকভাবেই  এই বিকল্প রিং বাঁধটি ধসে গেছে। এখানে প্রকৌশলী বা ঠিকাদারদের কোনও দোষ নেই। তদন্ত কমিটিও গঠনের  প্রয়োজন নেই।’ সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাহুকায় পাউবোর নির্মাণাধীন বিকল্প রিং বাঁধের ধস পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

পানিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘কোথাও বাঁধ ভাঙলে পাউবোর ঊর্ধ্বতনরা সেখানে ছুটে যান। পরিদর্শনের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কেউ দায়িত্ব অবহলো-গাফিলতি করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের সতর্ক করা হয় বা বিভাগীয়ভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। বাঁধ ভাঙলেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কোনও তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় না। এমন কমিটি গঠন করার বিধানও নেই। এ রকম তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে হাজারও কমিটি গঠন করতে হবে।’  এ সময় তিন দিনে বাঁধটি মেরামত করতে পারায় তিনি সেনাসদস্য ও পাউবোকে ধন্যবাদ জানান।

সিরাজগঞ্জে ভাঙনপ্রবণ অঞ্চলে ১৯ কিলো মিটারের স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা কথা উল্লেখ করে পানিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নিজ এলাকা হওয়ায় তিনিও সবসময় আমাদের তাগাদা দেন। চৌহালীর নব নির্মিত বন্যানিয়ন্ত্রণ তীর-রক্ষা বাঁধটিতে ধস দেখা দিলেও পাউবো থেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিডিয়ার সবাইকে মনে রাখতে হবে, বাঁধের বাইরে যারা বসবাস করছেন, যমুনার পানি বাড়লে তাদের বাড়িঘর প্লাবিত হবে। এটিই স্বাভাবিক। বাঁধের ভেতরে পানি ঢুকলে তাকে বন্যা বলা যায়। কিন্তু বাঁধের বাইরে পানি এলে তা বন্যা নয়, প্লাবন।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৯৮ সংমিশ্রিত বিগ্রেডের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনালের আব্দুর রউফ, পাউবোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পশ্চিম) মোসাদ্দেক হোসেন, রাজশাহীর প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, বগুড়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল প্রমুখ।

এর আগে ১২ জুলাই জেলা প্রশাসন সন্মেলন কক্ষে সংবাদ সন্মেলনে জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা নেই, আছে যমুনার পাশে নিম্নাঞ্চলের প্লাবন। উজানের পানি বাড়ার সঙ্গে-সঙ্গে  যমুনার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এটি সত্যিকারে বন্যা নয়, এটিকে প্লাবন বলা যায়।’

/এসটি/এমএনএইচ/