হিলি স্থলবন্দরে লক্ষ্যমাত্রার চারগুণ বেশি রাজস্ব আদায়

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে পণ্য আমদানি (ছবি- সংগৃহীত)দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর দিনাজপুরের হিলি থেকে গত অর্থবছরে (২০১৬-১৭) ১৯৪ কোটি ৩৬ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। যা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকার চেয়ে প্রায় চার গুণ বা ১৪৪ কোটি ৫০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বেশি। হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার ফখরুল আমিন চৌধুরী সোমবার (১৭ জুলাই) দুপুরে এ তথ্য জানান।

বিগত বছরগুলোতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও এবারের অর্জন সম্পর্কে ফখরুল আমিন চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,‘আমদানি করা পণ্যের পরীক্ষণ ও শুল্কায়ন কার্যক্রমে গতি আনা হয়েছে। প্রক্রিয়াগুলো দ্রুত সম্পন্ন করে পণ্য খালাস দেওয়ার কারণে হিলি বন্দর ব্যবহারে আমদানিকারকদের উৎসাহ বেড়েছে। ফলে আমদানি-রফতানির পরিমাণ ও রাজস্ব আদায় বাড়ছে।’ পণ্য আমদানির এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্বের পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি।   

তিনি আরও জানান, হিলি-জয়পুরহাট, হিলি-দিনাজপুর ও হিলি-বগুড়া সড়কগুলো অপ্রশস্ত হওয়ায় বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ায় ক্ষেত্রে গতি কমে যাচ্ছে।  সড়কগুলো প্রশস্ত করা হলে সরকারের আয় আরও  বাড়বে।

হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১১০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও মাত্র ৭০ কোটি ৪৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। তেমনি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩০ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা আদায় হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য কমিয়ে ৪৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

হিলি শুল্ক স্টেশন (ছবি- সংগৃহীত)সে অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিপরীতে জুলাই মাসে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৭ হাজার, আগস্টে ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৮ হাজার, সেপ্টেম্বরে ৭ কোটি ২৩ লাখ ৯০ হাজার, অক্টোবরে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ও নভেম্বরে ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আদায় হয়। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে প্রতি মাসে ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ডিসেম্বরে ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৪৭ হাজার ও জানুয়ারিতে ২৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৭ হাজার টাকা অর্জিত হয়। ফেব্রুয়ারি ও মার্চে ৪ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ফেব্রুয়ারিতে অর্জিত হয় ২১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও মার্চে ২২ কোটি ৯৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এপ্রিল মাসে ৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার বিপরীতে উঠেছে ২৪ কোটি ৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। মে ও জুনে প্রতি মাসে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার বিপরীতে মে মাসে ৩০ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার ও জুন মাসে ২০ কোটি ৪৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে হিলি স্থলবন্দর আমদানি রফতানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. হারুন উর রশীদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ স্থলবন্দর দিয়ে মূলত পেঁয়াজ, চাল, গম, ভুট্টা, খৈল, ভুষি, কাঁচা মরিচসহ বেশিরভাগই খাদ্যদ্রব্য জাতীয় পণ্য আমদানি করা হয়। আমদানিকৃত এসব পণ্যের অনেকগুলোতে আমদানি পর্যায়ে তেমন কোনও শুল্ক আরোপ করা নেই। আবার অনেক পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধাও রয়েছে। তবে দেশের নির্মাণাধীন বৃহত্তম পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমানবিক কেন্দ্রসহ দেশের অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পে ভারতীয় পাথরের চাহিদা আছে। এ কারণে বেশ কিছুদিন ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশের চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার কারণে বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণে চালও আমদানি করা হচ্ছে। এসব কারণে বন্দর থেকে রাজস্ব আদায় বেড়ে গেছে।

 /এএইচ/ এপিএইচ/

আরও পড়ুন: 
সিলেটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কর্মী নিহত