‘সংখ্যালঘুদের জমি দখলে ভূমিদস্যুদের সহযোগিতা করছে ভূমি অফিস’

bograবগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় সংখ্যালঘুদের জমি দখলে ভুমিদস্যুদের সহযোগিতা করছেন ভূমি অফিসের কয়েকজন চিহ্নিত কর্মকর্তা-কর্মচারি। এ কারণে ভূমিদস্যুদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবার। শুক্রবার (২১ জুলাই) বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন শাজাহানপুরের গন্ডগ্রামের মৃত যদুনাথ মিত্রের ছেলে প্রতাপ মিত্র।
লিখিত অভিযোগে প্রতাপ মিত্র বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের আওয়ামী লীগ সরকার যখন সংখ্যালঘুদের সঠিক নিরাপত্তা বিধানে বদ্ধপরিকর। তখন শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের গন্ডগ্রামের সংখ্যালঘু পরিবার কয়েকজন ভুমিদস্যু সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ভুমিদস্যু সন্ত্রাসীরা পৈতৃক স্বত্বদখলীয় জমিজমা ও বাড়িঘর দখলের চেষ্টা করছে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে সম্পত্তি দখলে ভুয়া কাগজপত্র তৈরির চেষ্টা করছে। আর তাদের সহযোগিতা করছে ভূমি অফিসের চিহ্নিত কয়েকজন ঘুষখোর কর্মকর্তা ও কর্মচারি।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রতাপ মিত্র বলেন, ‘ওয়ারিশসূত্রে বাবার রেখে সম্পত্তিতে বসবাস করছি। গত ২০১৫ সালের ২২ এপ্রিল ভুমি অফিসে খাজনা দিতে গিয়ে গন্ডগ্রাম পূর্বপাড়ার মৃত আবদুস সামাদ প্রামানিকের ছেলে নুরুন্নবী প্রামানিক ২০১৪ সালের ২৫ মে এক একর আঠার শতক সম্পত্তি নিজের নামে খারিজ (নং ৪৪২৯(৯-১) ১৩-১৪) করে নিয়েছেন। ওই সম্পত্তি পিতামহ বনমালী মিত্রের। সিএস খতিয়ান ৪৩৫ এমআরআর ৪৪৩ খতিয়ানভুক্ত এক একর ৪১ শতক সম্পত্তি বংশানুক্রমে ভোগ দখল করছি। ওই খারিজ বাতিলে গত ২০১৫ সালের ১১ মে শাজাহানপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কার্যালয়ে আবেদন (কেস নং- ১০(১৩)১৫-১৬) করেন। মামলা এখনও চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় গত ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি নুরুন্নবী প্রামানিক তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তাদের (প্রতাপ) বাড়িতে হামলা করে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মুরুব্বীদের উপস্থিতিতে মিমাংসা করা হয়।  গত বছরের ৩১ জানুয়ারি বগুড়ার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা (নং-২৯/১৬) দায়ের করেন প্রতাপ মিত্র। আদালত চলতি ১৩ জুলাই শুনানি শেষে জমিতে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন। এ অবস্থায় নুরুন্নবী প্রামানিক আদালতের নিষেধ অমান্য করে গত ১৫ জুলাই ৪০ শতক জমিতে গাছের চারা লাগিয়ে দখল করেন। পরদিন প্রতাপ মিত্র শাজাহানপুর থানায় অভিযোগ করেন। পরে ১৭ জুলাই থানা থেকে এসআই মাসুদ রানা সরেজমিন তদন্ত করেন।

প্রতাপ মিত্র অভিযোগ করে বলেন, ‘ভুমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সহযোগিতায় নুরুন্নবী প্রামানিক তার পৈতৃক সম্পত্তি দখল করেছেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও জমিতে গাছ লাগিয়েছেন। প্রভাবশালীদের হুমকি-ধামকিতে তিনি পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন।’

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নুরুন্নবী প্রামানিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনি ভুমি অফিসের সহযোগিতায় কারও সম্পত্তি দখল করেননি। নিজেদের সম্পত্তিতে গাছ লাগিয়েছেন। প্রতিপক্ষের উস্কানিতে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। শাজাহানপুর থানার এসআই মাসুদ রান্না বলেন, ‘সরেজমিন তদন্ত করে জানা গেছে ওই জমি প্রতাপ মিত্রদের। নুরুন্নবী অন্যায়ভাবে দখল করে গাছ লাগিয়েছেন। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অবহিত করেছেন।

/এসএমএ/